মি. আকাশ থাইল্যান্ড থেকে চাল ক্রয় করে উক্ত চাল বাছাইয়ের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিক্রয় করেন। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য হ্রাস পেলে তিনি সংকিত হয়ে পড়েন এবং দ্রুততার সাথে দেশীয় বাজারে উক্ত চাল বিক্রি করে দেন। এতে তিনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন । কিন্তু ২০১২ সালের শুরুতেই আন্তর্জাতিক বাজারে আবার চালের দাম বাড়তে শুরু করে।
দিপন বি. এ. পাস করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। নিজেদের একটা অনাবাদী পুকুর সংস্কার করে মাছের রেনু ছেড়েছে। পাশের ছোট্ট জায়গাতে কিছু চারা দিয়েছে। দৈনিক যাতে কিছু নিয়মিত আয় আসে এজন্য এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে একটা মুরগীর খামার করেছে। দু'জন কর্মচারীও নিয়োগ দিয়েছে। প্রতিদিন সে অনেক ডিম বিক্রয় করে। কিন্তু হঠাৎ রোগে অনেক মুরগী মারা যাওয়ায় সে শংকিত । পশুপালন কর্মকর্তা তাকে প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য বলেছেন।
স্বাধীনচেতা বেকার যুবক প্রণয় ১০ হাজার টাকা ধার করে মোট ২০ হাজার টাকার পণ্য কিনে মুদির দোকান সাজিয়ে ব্যবসায় শুরু করেন। স্বল্প পুঁজির কারণে তার দোকানে পর্যাপ্ত পণ্যসামগ্রী নেই । ফলে সে প্রায়ই ক্রেতার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়। এতে সে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন ক্রেতার পরামর্শে সে যেসব পণ্য দিতে পারে না তার একটা তালিকা করে পরবর্তীতে ঐসব পণ্য দোকানে তোলে। কিছু দিনের মধ্যেই তার বিক্রয় বৃদ্ধি পায় এবং ধীরে ধীরে সে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে।
জনাব সালমান পাঁচজন কর্মী নিয়ে শাপলা বস্ত্রালয় নামে একটি কাপড়ের দোকান পরিচালনা করেন। বাজারে প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় মূলধন বৃদ্ধি করার জন্য মৌখিক সমঝোতার ভিত্তিতে তিনি তার বন্ধু কলিমকে ব্যবসায়ের সদস্য করেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হয়ে উঠে। কিন্তু একজন দেনাদার এক লক্ষ টাকা দেনা পরিশোধে গড়িমসি করলেও তিনি সেই পাওনা আদায়ের জন্য আইনী ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সমস্যার সম্মুখিন হয়।
সাইদ, খোকন ও মামুন সমঝোতার ভিত্তিতে 'X' Builders নামে একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গঠন করলো যার লক্ষ্য রসুলপুর গ্রামে একটি কার্লভাট নির্মাণ করা। পরবর্তিতে মহেশখালীতে একটি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ পেল। এজন্য তাদের অধিক মূলধনের প্রয়োজন। তাই তারা সুমনকে এই শর্তে ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, সে শুধু ব্যবসায় ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করবে কিন্তু পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
ক, খ ও গ একটি অনিবন্ধিত অংশীদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। তিন জনের মূলধনের পরিমাণ সমান এবং মুনাফা ভোগের হারও সমানুপাতিক। তবে ক তার মূলধনের অতিরিক্ত দায় বহন করে না। প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে অনেক চেষ্টা করেও একজন দোকানদারের নিকট হতে ১০,০০০ টাকা আদায় করতে পারছে না। তারা ভাবছে পাওনা আদায়ের জন্য আদালতের আশ্রয় নিবে।
রানা ‘XYZ’কোম্পানির ২,০০,০০০ শেয়ার ক্রয় করেছেন। ‘XYZ’কোম্পানি পরবর্তীতে ব্যবসায় সম্প্রসারনে অধিকতর মূলধনের জন্য নতুন শেয়ার ইস্যু করতে চাচ্ছে। কিন্তু আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে পারছে না। অন্যদিকে রানা আরও ১,০০,০০০ শেয়ার ক্রয় করে কোম্পানি পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু তার ক্রয়কৃত শেয়ারের প্রকৃতি অনুযায়ী সেটা সম্ভব নয় ।
টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর থানার ৭০ জন তাঁতী মিলে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সমবায় সমিতি গঠন করে । ২০১২ সাল পর্যন্ত তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল নিম্নরূপ:
বছর | ২০০৮ | ২০০৯ | ২০১০ | ২০১১ | ২০১২ |
মুনাফা (টাকা) | ২৫,০০০/= | ৩২,০০০/= | ২৮,০০০/= | ২৫,০০০/= | ৩০,০০০/= |
তারা ন্যূনতম হারে তহবিল সংরক্ষণ করে। ২০১৩ সালে তারা একটি নতুন তাঁত বসাতে চাইছে যার জন্য ২৫,০০০ /= টাকার প্রয়োজন । তাঁত বসানোর জন্য তারা তাদের সঞ্চিতি তহবিল ব্যবহার করতে চাইছে।
কুমিল্লার নিমসারের সবজী উৎপাদকরা পাশের বাজারে সবজী বিক্রয় করে। এতে তারা তেমন দাম পায় না। বেশি সবজী বাজারে এলে বিক্রয় করায় দুস্কর হয়ে পড়ে। তাই তারা একটা সমবায় সমিতি গড়ার সিদ্ধান্ত নিল। এই সমিতিতে টাকা জমিয়ে তারা একটা মিনি ট্রাক কিনলো। ট্রাকে সমবায়ীদের মাল একত্রে নিয়ে বড়ো বাজারে বিক্রয় করে। এর মধ্যে সমবায় কর্মকর্তা পরামর্শ দিলেন, তারা ঢাকায় নিজেরা একটা দোকান খুলে সেখানে সবজী বিক্রয় করতে পারে । এক সময়ে তারা তাই করলো ।
ব্যবসায়-বাণিজ্য সাধারণভাবে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার নিয়ন্ত্রনাধীনে পরিচালিত হয়ে থাকে। কিন্তু জনগণের কল্যাণসাধন ও স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে কতিপয় ক্ষেত্রে দেশের সরকারকে ব্যবসায়ী কার্যকলাপে জড়িত হতে দেখা যায়। এসব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ড, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ রেলওয়ে ইত্যাদি । এছাড়াও দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষে কিছু কিছু ব্যবসায় রয়েছে যা সরকারী এবং বেসরকারী মালিকানার ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত হচ্ছে।
মি, আতিক একজন গবেষক। তিনি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় অল্প ব্যয়ে ছোট প্রজেক্ট করে অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। তিনি আইনগত সুরক্ষা নেয়ায় তার উদ্ভাবিত পদ্ধতি নকল করার চেষ্টা করেও অনেকে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি তার আবিস্কারের স্বত্ব 'এনার্জি- প্লাস' নামে একটা প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করে হস্তান্তর করেছেন। নতুন আবিষ্কার উৎসাহিত করার কাজে 'এনার্জি প্লাস' নামধারী প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে দেশে বিদেশে সমাদৃত ।
মি. সুমন খানের উপন্যাস বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মাঝে দারুণ সাড়া জাগিয়েছে। তার নতুন উপন্যাস বাজারে আসলে তরুণ পাঠকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। অসাধু ব্যবসায়ীদের থেকে রক্ষায় বই বেরুনোর আগেই তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেন। তার পাবলিশার্স 'ব্রাইট বুকস' উদীয়মান ভালো লেখকদের উপন্যাস, গল্পসমগ্র ইত্যাদি প্রকাশের মাধ্যমে ইতোমধ্যে যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে । তাদের উদীয়মান সূর্য সম্বলিত লোগো এখন বই বিক্রেতা ও তরুণদের মাঝে পরিচিত।
মিস তনিমা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়ে আর লেখাপড়া করতে পারেননি। তিনি এক বড় বোনের পরামর্শে বাংলাদেশের এক বৃহৎ এনজিও প্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির এক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন । বিভিন্ন ছোট কাজ শিখে ও করে যে বড় হওয়া যায় তার শিক্ষা পেয়েছেন । প্রতিষ্ঠানটি তাদের একটা কর্মকেন্দ্রে কিভাবে মহিলা কর্মীরা কাজ করে তাও তাদের ঘুরিয়ে দেখিয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে তাদের নিজস্ব শো-রুমে পণ্যগুলো বিক্রয় হয় ।
সুমনের বাবা একজন দর্জী । ছোট বেলায় বাবার পাশে থাকতে থাকতে সে সেলাই ও কাটিং এর কাজ অনেকটা রপ্ত করেছে। ডিগ্রি পাস করে সে বাবার ব্যবসায় নতুনভাবে শুরুর উদ্যোগ নিল । শুধুমাত্র দর্জির কাজ নয়। সে সেলাই, এমব্রয়ডারি, বুটিকসহ কাপড়ের নানান কাজ করার কর্মসূচি নিয়ে এগুলো । এজন্য মূলধনের প্রয়োজন। তাই সে বিভিন্নভাবে খোজ নিয়ে জানলো তার মত ছোট ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হচ্ছে । বিদেশীরাও এতে অর্থায়ন করছে। সে ঋণ নিয়ে জোরে শোরে কাজ শুরু করলো ।
মঈন বুয়েট থেকে আর্কিটেকচারে ডিগ্রি নিয়েছে । তার বাবা বিল্ডিং নির্মাণ ব্যবসায় করেন। বাবার ইচ্ছা মঈন ব্যবসায়ের হাল ধরুক। মঈন কিছু দেশ বেড়িয়ে এসে ব্যবসায়ের দায়িত্ব নিতে চাইলো । সে সেখানে যেয়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন বিল্ডিং নির্মাণ শৈলী দেখলো । কিছু ডিজাইন নির্বাচন করলো । দেশে এসে তাতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে বিল্ডিং নির্মাণ করে সফল হলো। কিন্তু তার এই সফলতা বেশি দূর এগাচ্ছে না। দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও আর্থিক দুরাবস্থার কারণে অনেক ফ্ল্যাট অবিক্রিত থাকায় সে সমস্যায় পড়েছে।
রতন মিয়া একটা বেসরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে টাইপিস্টের চাকরি করতেন। পরে অফিসে কম্পিউটার আসায় তিনি চিঠিপত্র কম্পিউটারেই কম্পোজ করেন । সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারসহ প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামিং শিখে নিয়েছেন । তাই তথ্য সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াকরণে সমস্যা হয় না । তার প্রতিষ্ঠান বড় হয়েছে এবং নতুন কর্মীও এসেছে । তারা কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো জানে । ইন্টারনেট নির্ভর বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদানে তারা সিদ্ধহস্ত । ফলে নতুন নতুন গ্রাহক তার প্রতিষ্ঠানে ভিড় জমাচ্ছে ।
মি. কনক রেজার নতুন কিছু জানার প্রতি আগ্রহ । উন্নত বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহার করে মালামাল, শেয়ার ইত্যাদি ক্রয় বিক্রয় করা হয় এরূপ কথা শুনে এ ধরনের ব্যবসায়ে তার আগ্রহ অনেক আগে থেকেই । পরে তিনি বায়িং হাউজের ব্যবসায় শুরু করেন। এখন ল্যাপটপ সাথে করেই তাকে চলতে হয় । বিদেশী ক্রেতাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ, তথ্য আদান-প্রদান ইত্যাদি কাজে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন তার কার্যকারিতা দেখে তিনি নিজেও মুগ্ধ হন । তার ব্যবসায় দ্রুত এগিয়ে চলেছে ।
মি. মুনির দীর্ঘদিন ব্যবসায় করছেন । তিনি জানেন ভালো ব্যবসায়ী উত্তম সওয়াবের অধিকারী হয়ে থাকেন। এ বুঝেই তিনি ব্যবসায় করে এসেছেন। এতে তিনি যে সুনাম অর্জন করেছেন তাতেই তিনি সন্তুষ্ট । এখন ছেলেরা ব্যবসায় করছে । তিনি তাদের সেভাবে চলতে বলেন । কিন্তু তারা বলে, বাবা সবাই অন্যকে ফাকি দিয়ে দ্রুত বড় লোক হওয়ার চিন্তা যখন করছে, মিথ্যা বলছে-তখন সত্য পথে চলে ব্যবসায় করতে কষ্ট । বাবার বক্তব্য, সত্য মেনে চলো এক পর্যায়ে তোমরাই ভালো করবে, মনও ভাল থাকবে ।
মি. গাজী খুলনার চিংড়ি ব্যবসায়ী । দ্রুত বড় লোক হতে হবে এ চিন্তা তাকেসহ আরও অনেককে সবসময়ই তাড়িত করে । তাই নানান অন্যায় কাজে তারা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে । বিদেশে মাছ রপ্তানিতে কয়েক চালান সঠিকভাবে পাঠালেও এরপর চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য মাছের মধ্যে এক ধরনের ভারী পানি ঢুকিয়েছে । বিদেশে টেস্টে বিষয়টি ধরা পড়ায় বিদেশে বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ ।
ইউনাইটেড কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ বরাবর আবেদন করে । অধ্যক্ষ মহোদয় কবে, কোথায়, কখন ও কিভাবে যাওয়া হবে । তা ঠিক করে চাঁদার পরিমাণ নির্ধারণ করে দেন। পরবর্তীতে করণীয় কাজগুলোকে কতকগুলো ভাগে ভাগ করে তার দায়িত্ব বিভিন্ন শিক্ষককে অর্পণ করেন । অতঃপর একজন সিনিয়র শিক্ষককে সার্বিক দায়িত্ব ও ক্ষমতা অর্পণ করা হয় । সবাই যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করায় বনভোজন সফল হয়েছে ।
মি. মল্লিক একটা নতুন শিল্প ইউনিটের ব্যবস্থাপক । তিনি শিল্প প্রতিষ্ঠানে যে সকল কাজ হবে তা চিহ্নিত করে তাকে প্রকৃত অনুযায়ী কতকগুলো প্রধান ভাগে ভাগ করেন এবং তার অধীনে বিভিন্ন উপবিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অতঃপর যেখানে যে মানের জনশক্তি প্রয়োজন তা নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব- কর্তৃত্ব বুঝে দেন । শুধুমাত্র যোগ্য ব্যক্তিকেই যোগ্য স্থানে নিয়োগ নয় এর বাইরে অন্যান্য উপায়-উপকরণাদিকেও সঠিক স্থানে স্থাপন করেন । এতে কাজ চলাকালে তিনি সুবিধা পাচ্ছেন ।
সিলভার এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মি. হাবিব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং অপেক্ষাকৃত কর্ম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিচের স্তরে প্রদান করেন । আবার প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মীর কার্য সম্পাদনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তিনি একে অন্যের সাথে যোগসূত্র স্থাপনে সহায়তা করেন । ফলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহজ হয়।
জনাব রফিক দেশের একজন স্বনামধন্য পোশাক রপ্তানিকারক । সম্প্রতি তিনি ইউরোপের একটা দেশ থেকে ৫০,০০০ পিস বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক রপ্তানির একটা প্রস্তাব পান। তিনি অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় প্রস্তাবটি গ্রহণ গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন এবং প্রয়োজনীয় কর্মসূচি প্রণয়ন করেন । সঠিক সময়ে ও যথাযথ মানে পণ্য প্রস্তুত ও যথাসময়ে পণ্য প্রেরণ করতে পারায় তার ব্যবসায়ের সুনাম বেড়েছে ।
সৃজনশীল প্রশ্ন ২ : স্কাইনেট কোম্পানি সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে ২,০০০ জন কর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের কার্য সফলভাবে সম্পাদন করে । কুষ্টিয়ায় কোম্পানির নতুন শাখা স্থাপনের ফলে দ্রুত সভা ডেকে বিদ্যমান কর্মচারী-কর্মকর্তাদের মধ্য হতে ১০০ জনকে পদোন্নতি দিয়ে সেখানে প্রেরণ করা হলো । পদোন্নতি বঞ্চিতরা রীতি, নীতি ও প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক পদোন্নতির দাবি তুলল । অবশেষে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলো ।
মমতা ফুড প্রোডাক্টস সিলেট অঞ্চলে তাদের বিক্রয় কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য জনাব মুনতাসীরের ওপর দায়িত্ব দিলেন। জনাব মুনতাসীর কোন কোন এলাকায় প্রথমে কাজ শুরু করবেন নির্দিষ্ট করে উক্ত এলাকায় কী কী কাজ করতে হবে এবং প্রত্যেকটা কাজের জন্য দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব নির্দিষ্ট করলেন । তার চিন্তা হলো, লোকদের অধিক কর্তৃত্ব দিলে তারা স্বেচ্ছাচারী হয় । তাই তাদের কর্তৃত্ব কম দিবেন এবং জবাবদিহিতার মাত্রা বেশি হবে । নিয়োগপ্রাপ্তরা কাজ করতে যেয়ে সমস্যা বোধ করছেন।
বাবা মি. শুভ্রকে একটা নির্মীয়মান বড় নতুন প্রজেক্টের দায়িত্ব দিলেন । তাকে বলা হলো তুমি প্রথমে বিভিন্ন বিভাগ-উপবিভাগের কাজগুলো ভাগ করে কর্তৃত্বের প্রবাহ রেখা কী হবে তা নির্দেশ করবে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত নির্বাহীদের মধ্যে সম্পর্কের রূপরেখা নির্দেশ করবে। তুমি থাকবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক । মি. শুভ্র ভাবছেন একজন মহা-ব্যবস্থাপক রাখবেন এবং উৎপাদন ও বিক্রয় বিভাগের বিভাগীয় ব্যবস্থাপকদের অধীনে একজন করে সহকারী ব্যবস্থাপক দেবেন ।
বরিশালের আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও ব্যবসায় সহায়ক কার্যাবলির সুবিধাবঞ্চিত মাছ ব্যবসায়ীদের বর্তমানে ব্যস্ত সময় যাচ্ছে । কারণ নদীগুলোতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়ছে। দেশি ও বিদেশি বাজারে এই মাছের ব্যাপক সুনাম আছে। শুধু স্থানীয় বাজারে ব্যাপক মাছ বিক্রি করলেও তাদের মুনাফার পরিমাণ খুব সামান্য হচ্ছে। এ অবস্থার উন্নয়নের জন্য তাৎক্ষণিক উপায় হিসেবে জেলা প্রশাসক মহোদয় কোল্ড স্টোরেজগুলো শুধু মাছ ব্যবসায়ীদের ব্যবহারের অনুমতি দেন। কিন্তু এরপরও মাছ ব্যবসায়ীরা কাঙ্ক্ষিত মুনাফা লাভ করতে পারছে না ।
মি. তপন আধুনিক যন্ত্রপাতির অপর্যাপ্ততা সত্ত্বেও তার এলাকার কিছু শিক্ষিত বেকার যুবকদের নিয়ে একটি গার্মেন্টস শিল্প গড়ে তোলেন। একটি বাণিজিক ব্যাংকের সহায়তায় তার ব্যবসায়ে সফলতা আসে। কিন্তু বর্তমানে ঘন ঘন হরতাল, পরিবহন ধর্মঘট প্রভৃতির কারণে তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি মালামাল | সঠিক সময়ে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে তিনি ব্যবসায়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ।
জনাব X একটি বেসরকারি কলেজের প্রভাষক করেজের কাছেই বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে। তিনি তার সঞ্চিত অর্থ দিয়ে কলেজের পাশেই একটি ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে একটি বড় দোকান শুরু করবেন। তার দোকানের প্রথম অংশে স্টেশনারি, দ্বিতীয় অংশে ফটোকপি এবং তৃতীয় অংশে মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবসায় শুরু করলেন। জনাব X তার তিন ভাইকে দোকানের তিনটি অংশের করতে দিলেন। অল্পদিনের মধ্যেই তার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সফলতা অর্জন করে ।
মি. বাইরন একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি তার বন্ধু করিমসহ আরও ১০ জন বন্ধু নিয়ে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। মি. বাইরন বলেন, তিনি ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন না এবং বিনিয়োগের অতিরিক্ত দায় নেবেন না। তবে, বছর শেষে প্রতিষ্ঠানের হিসাব-নিরীক্ষার কাজটি করবেন । সর্বসম্মতিক্রমে জনাব করিমকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরবর্তীতে একজন প্রভাবশালী দেনাদার ৫০,০০০ টাকা না দেওয়ায় জনাব করিম তা আদায়ে সমর্থ হন ।
জনাব রহিম তার আরও ৪৯ জন ব্যবসায়ী বন্ধু মিলে PQR নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। তারা কোম্পানি নিবন্ধকের কাছ থেকে নিবন্ধন লাভ করেন। প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়ের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিতে গেলে একজন এ্যাডভোকেট সদস্য তাতে বাধা দেন। তিনি বলেন আরও একটি প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা বাদ আছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে মুনাফা অর্জন করলেও পরবর্তী তিন বছর ধারাবাহিকভাবে লোকসান দিতে থাকে। এ অবস্থায় XYZ নামে অন্য একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান PQR প্রতিষ্ঠানের ৫২% মালিকানা শেয়ার কিনে নেয় এবং পরিচালনার দায়িত্ব নেয় ।
কুয়াকাটার সামুদ্রিক মাছ ধরা জেলেরা ২০ জন মিলে আইনসৃষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গঠনের উদ্যোগ নেয়। এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য তারা একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে যেখানে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি এবং কোষাধ্যক্ষ আছেন একজন করে এবং সধারণ সদস্য তিনজন । | প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনের জন্য অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেও ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে নিবন্ধক প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধনপত্র ইস্যু করতে বিরত থাকেন।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেড মুনাফা অর্জনকে গুরুত্ব না দিয়ে কমমূল্যে রাসায়নিক সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে গ্যাস সরবরাহ করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। অন্যদিকে, অর্থনৈতিক ভিতকে আরও মজবুত করার জন্য সরকার অবকাঠামো নির্মাণে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করছে। ফলে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উভয়ই লাভবান হচ্ছে। নতুন ব্যবসায় ধারণাটি বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ।
জনাব শাহরিয়ার ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা নামে একটি বই লেখেন। 'X' প্রকাশনী বইটির গ্রন্থস্বত্ব কিনে নেয়। বইটি ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছে খুবই সমাদৃত হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। 'Y' প্রকাশনী বইটির কভার পৃষ্ঠা ও বিষয়বস্তুর সামান্য পরিবর্তন করে হুবহু প্রকাশ করে। ফলে 'X' । প্রকাশনীর বিক্রি কমে যায়। 'X' প্রকাশনী ক্ষতিপূরণ ও প্রতিকার চেয়ে 'Y' প্রকাশনীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
জনাব হারুন একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাক বিদেশে রপ্তানি করেন। বিদেশের বাজার দখল করার জন্য তিনি আরও উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় যন্ত্রপাতি আমদানিতে সমস্যা হচ্ছে। সম্প্রতি সরকার গার্মেন্টস খাতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আমদানি ও তৈরি পোশাক রপ্তানি উভয়টিতে শুল্কহার বাড়িয়েছে। এগুলো নিয়ে জনাব হারুন খুব চিন্তিত । অথচ তিনি ২০১৫ সালে এই গার্মেন্টস খাতে নিয়োজিত ব্যবসায় সংঘের সাহায্যে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ঐ সংঘ থেকে তার প্রতিষ্ঠান গার্মেন্টস সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণও নিয়েছে।
মি. সুদর্শন X ব্যাংকের একজন অফিসার। ব্যাংকটি লেজার বুকের পরিবর্তে কম্পিউটারে গ্রাহকদের হিসাবের লেনদেন সংরক্ষণ করে। তথ্য আদান-প্রদানে ব্যাংকটি চিঠির পরিবর্তে মোবাইল মেসেজ, ই-মেইল প্রভৃতি ব্যবহার করে। ব্যাংকের গ্রাহকরা কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংকে না গিয়ে যে কোনো বুথ থেকে সব সময় টাকা তুলতে পারে। বর্তমানে এ ব্যাংকের গ্রাহকরা এ প্রযুক্তিতে পণ্যের দাম ও বিল পরিশোধ এবং কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি দিচ্ছে।
এইচএসসি পাস করার পর মইনুল কিছুদিন চাকরির পেছনে হুটাছুটি করেন। অবশেষে বাবার কাছ থেকে মাত্র এক লক্ষ টাকা নিয়ে স্থানীয় বাজারে একটি মুদি দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। এর জন্য তাকে নামমাত্র ফি দিয়ে একটি লাইসেন্স। সংগ্রহ করতে হয়। মইনুল দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখেন। তাছাড়া ক্রেতাদের যখন যা প্রয়োজন, তখন তা নিমিষেই এনে দেন।
রংপুরের তিস্তা পাড়ের জেলেরা তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য একটি সমবায় সমিতি গঠন করেছেন। তাদের উৎপাদিত মৎস্য ঢাকার বাজারে বিক্রি করেন। গত বছর তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ২,৫০,০০০ টাকা। তারা বিধিবদ্ধভাবে সংরক্ষিত তহবিল সংরক্ষণ করন। বর্তমানে সমিতির প্রয়োজনে ৬০,০০০ টাকায় একটি ফ্রিজ কিনতে চান। এজন্য তারা সংরক্ষিত তহবিলকে কাজে লাগাতে চাইছেন।
ওয়াসা কর্মী মিজানুর রহমান পরিবারসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম বেড়াতে গেছেন। সেখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য তাদের মুগ্ধ করেছে। মিজানুর রহমান ভাবলেন, পার্বত্য এলাকায় প্রয়োজনীয় যাতায়াত, আবাসিক ব্যবস্থা, গাইড ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে এ এলাকায় প্রচুর লোক বেড়াতে আসবেন এবং প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা যাবে।
মুকুল রায় এসএসসি পাস করে টাকার অভাবে লেখাপড়া করতে পারলেন না। তিনি একটি মোটর গ্যারেজে কয়েক বছর কাজ করার পর নিজেই একটি মোটর কার গ্যারেজ প্রতিষ্ঠা করেন। পুরোনো মোটর পার্টস ব্যবহার করে তিনি ছোট আকারের মোটর যান তৈরি করে বিক্রি শুরু করলেন।তার ব্যবসায়টি বেশ লাভজনক হওয়ায় তিনি ধীরে ধীরে তা সম্প্রসারণের চিন্তা করেন।
রসুলপুরের মুদি দোকানদার রিপন। গ্রামের অনেকেই ঢাকায় থাকেন। মাসে মাসে বাড়িতে টাকা পাঠান। এ টাকা উঠানোর জন্য তাদের স্বজনদেরকে শহরে যেতে হয়। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিল, গ্যাসের বিল প্রভৃতি পরিশোধ করতে শহরে গিয়ে ব্যাংকে পুরো একটা দিন ব্যয় করতে হয়। এসব বিড়ম্বনা দেখে রিপন তার মোবাইল সেটে ইন্টারনেট সংযোগ নেন। এখন গ্রামবাসী এসব কাজ তার দোকানে মোবাইল সেটের মাধ্যমেই সম্পন্ন করেন।
কুসুমবাগ এলাকার ৭৬ জন বাসিন্দা স্বল্পমূল্যে পণ্য কেনার জন্য 'প্রত্যাশা' নামে সমবায় সমিতি গঠন করে। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় উৎপাদনকারী ও নিকটস্থ বাজার থেকে পণ্য কিনে স্বল্পলাভে সদস্যদের মধ্যে বিক্রি করে। প্রত্যেক সদস্যের ক্রয়ের পরিমাণ নির্দিষ্ট টোকেনের মাধ্যমে হিসাব করে । পণ্য কিনে স্বল্পলাভে সদস্যদের মধ্যে বিক্রি করে। প্রত্যেক রাখা হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সমস্যা নিরসনের জন্য গৃহীত “কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প-২” বাস্তবায়নের কাজ ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ হবে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। ৬১৭ কিলোমিটার পুরাতন পাইপ লাইন আধুনিকায়নের দায়িত্বও জাইকাকে দেওয়া হয়েছে
জনাব মনির গাড়ি কেনার উদ্দেশ্যে একটি গাড়ি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব শো-রুমে গেলেন। তিনি লক্ষ করলেন, প্রতিষ্ঠানটি তাদের উৎপাদিত প্রতিটি গাড়ির বনেটের সামনে নামক একটি ধাতব প্রতীক সংযুক্ত করেছে। গাড়ির জ্বালানি হিসেবে তারা সদ্য আবিষ্কৃত সাশ্রয়ী এক ধরনের গ্যাস ব্যবহার করে।প্রতীক ও নতুন আবিষ্কৃত জ্বালানি গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের আইনগত সুরক্ষা আছে।
জনাব সায়েম চট্টগ্রামের EPZ এলাকায় একটি রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প স্থাপন করেন। তিনি নিজ স্বার্থ এবং ব্যবসায়ের সার্বিক দিক বিবেচনা করে একটি সমিতির চট্টগ্রামস্থ আঞ্চলিক শাখায় যোগ দেন। এ সমিতি একটি অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরকারকে অনুকূল বাণিজ্য, শিল্পনীতি ও আইন প্রণয়নে পরামর্শ দান, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সদস্যদের পারস্পরিক সমস্যার সমাধান, রপ্তানি পণ্যের অনুকূলে প্রভবলেখ ইস্যু এ সমিতির অন্যতম কাজ। জনাব সায়েম আরও একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দেন, যার কার্যক্রম শুধু পোশাক শিল্পের সাথে জড়িত। এই সংস্থা ১৯ জন সদস্য নিয়ে ১৯৭৭ সালে যাত্রা শুরু করে ।
জনাব আবীদ চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান করলেও তাঁর স্ত্রী পুত্র-কন্যা নিয়ে রাজশাহীতে থাকেন। তিনি চট্টগ্রামে থেকেই চট্টগ্রাম ও রাজশাহী দুই বাসার উপযোগ বিল ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করেন । তিনি নগদ টাকা বহন করতে ভয় পান, তাই ব্যাংক হিসাবের বিপরীতে একটি কার্ড ইস্যু করেন, যার দ্বারা সব ধরনের কেনাকাটা করতে পারেন ।
জনাব রায়হান ঢাকার বাদামতলী আড়তের একজন সফল ব্যবসায়ী। সারা বছর আপেল, আঙ্গুর, বেদানা, নাসপাতিসহ বিভিন্ন বিদেশি ফল আমদানি করেন। ভরা মৌসুমে রাজশাহীর বিভিন্ন আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে সেগুলোকে ছোট- বড় বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে ঝুড়িতে ভরে তা ট্রাকে করে বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে আসেন। বিভিন্ন রকম ফল সংগ্রহের জন্য তাকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এতে খুচরা ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে ফল কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ।
জামালপুর জেলার জনাব কার্তিক বাঁশ, খেজুর ও তাল গাছের ওপর ভিত্তি করে ‘রাংতা' নামের একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন । তার প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য যেমন—হাতপাখা, টুপি, শীতল পাটি, মাদুরসহ বিভিন্ন রকম খেলনা সামগ্রী ক্রেতাদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। ফলে তার উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে চাহিদা বাড়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তিনি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
হুমায়ুন বিবিএ পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। একজন আত্মনির্ভরশীল ব্যক্তি হিসেবে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি অল্প মূলধন নিয়ে বাড়ির পাশেই একটি ফটোকপির ব্যবসায় আরম্ভ করে। ফটোকপির পাশাপাশি ভোক্তা সাধারণকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার ফরম পূরণ, রেজাল্ট প্রকাশ, মেইলের তথ্য আদান-প্রদান, টার্ম পেপার প্রস্তুত প্রভৃতি সেবা দিয়ে বেশ ভালোই মুনাফা অর্জন করে। তিনি নিজে ব্যবসায়ের সমস্ত বিষয় সামাল দিতে না পারায় বড় ভাইকে ফটোকপি অংশের দায়িত্ব দিয়েছেন। ফলে হুমায়ুনের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় সফলতার আলো দেখতে শুরু করেছেন।
সাগুফতা ও শাহীদা দই বান্ধবী বোঝাপড়া করে চুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি বুটিক হাউজ গড়ে তুলেছেন। বুটিক হাউজের ব্যবসায় সফল হওয়ায় তাদের মূলধন কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু তাদের একজন ক্রেতা শারমিনের কাছে পাওনা ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বার বার তাগাদা দিয়েও আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না । এমনকি আদালতের আশ্রয় নিতেও তারা ব্যর্থ হচ্ছে।
জনাব আহমেদ ও জনাব সিয়াম দুজন শেয়ার বাজার থেকে “হামীম কোম্পানি লি.” এর ১২,০০,০০০ ও ৭,০০,০০০ টাকার শেয়ার কেনেন । জনাব আহমেদ হামীম কোম্পানি লি. এর বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণপত্র পেলেও জনাব সিয়াম কোনো আমন্ত্রণপত্র পাননি। কোম্পানিটি বিলোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে জনাব সিয়াম তার বিনিয়োগকৃত ৭,০০,০০০ টাকা ফেরত পেলেও জনাব আহমেদ তার বিনিয়োগ অপেক্ষা ৪,০০,০০০ টাকা কম পান।
সমবায়ের মূলমন্ত্রই হলো “একতাই বল”, “সকলের তরে সকলে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”। এগুলো সত্যিই আবেদনময়ী কথা! সবার কল্যাণ, ঐক্য, সহযোগিতা ও সাম্য এ বিষয়গুলো অন্য ব্যবসায় সংগঠনের সাথে তেমনভাবে দেখা যায় না। বাংলাদেশের সমবায় সংগঠন তার নির্দিষ্ট আঙ্গিকে ব্যাপকতা লাভ করুক, সফল হোক, এটা অনেকেই বিভিন্ন কারণে প্রত্যাশা করে থাকে। কিন্তু সচেতনতার অভাব, ব্যাপক কারণে প্রত্যাশা করে থাকে। ক প্রচারসহ বিবিধ কারণে বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলন তেমনভাবে সফল হয়নি।
বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উপনীত করার লক্ষ্যে সারা দেশের প্রয়োজনীয় সমস্ত খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার “বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড” কে সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া সারাদেশে পাওয়ার স্টেশন স্থাপন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ বিবিধ কাজ সম্পাদনে বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্তানুযায়ী উভয়েই মুনাফা লাভ করবে ।
বেগম ফেরদৌসী একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি নিজস্ব প্রচেষ্টায় এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন যার মাধ্যমে দেশের যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের হিসাব ও তথ্য খুব সহজেই সংরক্ষণ করতে পারে। একটি নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তিনি মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করেন। কিছুদিন পর ফেরদৌসী তার ভাই ফারহানের কাছে মেধাস্বত্ব হস্তান্তর করেন। ফারহান সাথে সাথে নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তা নিবন্ধন করে আইনগত সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছেন । এখন তিনি নিরাপদভাবে তার ব্যবসায় পরিচালনা করছেন।
সামীনের বাবা একজন দক্ষ দরজি। ছোটবেলা থেকে । দক্ষ হয়ে উঠেছে। ডিগ্রি পাস করে সামীন বাবার ব্যবসায়টি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সে শুধু দরজি কাজে সীমাবদ্ধ না থেকে সেলাই, এমব্রয়ডারি, বুটিকসহ কাপড়ের বিভিন্ন কাজ করার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু এজন্য তার মূলধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সে বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছে বাবার সাথে থাকতে থাকতে সেও সেলাই ও কাটিং-এর কাজে যে, তার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং বিদেশিরাও এক্ষেত্রে অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে। ফলে ঋণ নিয়ে জোরে-শোরে কাজ শুরু করে দিল । সামীন
জনাব শরীফ একজন সমাজসেবী জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব। সমাজের মানুষের উপকার হয়, এমন বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেন। পাড়ায় তিনি একটি পাঠাগার নির্মাণ করেছেন। গরিব মানুষের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি শিক্ষা সহায়ক ফাউন্ডেশন। সেই সাথে আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কিছু বিত্তবান মানুষকে একত্র করে অংশীদারি ভিত্তিতে গড়ে তুলেছেন একটি বুটিক হাউজ। এখানকার মুনাফার একটি অংশ তিনি সহায়ক ফাউন্ডেশনে নিয়মিত দিচ্ছেন ।
বেগম লায়লা একজন আধুনিক গৃহিণী। ইদানীং পোশাকের কেনাকাটা তিনি তার মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকেন। এতে তার ব্যয় বেশ কমে গেছে। ফেসবুকের কল্যাণে বিভিন্ন রকমের পোশাকের হরেক রকম ডিজাইন ও মূল্য তিনি ঘরে বসেই জানতে পারছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অর্ডারও দিয়ে দিচ্ছেন। ইদানীং আবার ক্রয়কৃত পোশাকের বিল, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা রকম আর্থিক লেনদেনের কাজ তিনি ঘরে বসেই সম্পন্ন করে থাকেন। এখন তার দেখাদেখি প্রতিবেশী ও অন্যরাও একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে।
জনাব রশিদ কুষ্টিয়ার একজন চাল ব্যবসায়ী। তিনি চাল আমদানি করে বাছাই করেন এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নিজস্ব গুদামে সংরক্ষণ করেন। তার গুদামে বর্তমানে ২ হাজার মে.টন চাল মজুদ আছে। কিন্তু বাজারে চালের দাম কমে যাওয়াতে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে তিনি গুদামের চাল প্যাকেটজাত করে মধ্যপ্রাচ্যে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেন ।
বিদেশফেরত মি. মুরাদ ১০০ জন নারী কর্মী নিয়ে এলাকায় একটি কুটির শিল্প গড়ে তোলেন। প্রথমে তার পণ্যের চাহিদা ভালো থাকলেও বর্তমানে তিনি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছেন না। এ সমস্যা উত্তরণে দরকার শিল্পে আধুনিক প্রযুক্তি স্থাপন। এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহে স্থানীয় ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করলেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে তিনি খুশি।
জনাব বাবুল একজন স্বাধীনচেতা শিক্ষিত যুবক। সে যথেষ্ট উদ্যমী, পরিশ্রমী এবং অধ্যবসায়ী। বি. কম পাস করার পর সে চাকরির পেছনে না ঘুরে দুর্গাপুরের কাজীপাড়ায় একটি ফাস্টফুডের দোকান দেয়। তার দোকানে পণ্যের মান ভালো হওয়ার ক্রেতারা খুশি। বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবে ভোক্তারা দোকানে আসায় আগে তুলনায় বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। ফলে জনাব, বাবুল আরও একটি ফাস্টফুডের দোকানের কথা ভাবছে ।
মিসেস উর্মি পণ্য ক্রয়ের বিষয়ে খুবই সাবধান থাকেন। বাংলাদেশী কোনো পণ্য কিনতে গেলে তিনি দেখেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে কি না। বিশেষ করে খাদ্য ও প্রসাধন সামগ্রীর বেলায় এটা থাকতেই হবে। ব্র্যান্ড পণ্য ক্রয়ের প্রতি তার আগ্রহ। তিনি মনে করেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানে এটা মেনে চলা হয়। এক্ষেত্রে নকলের সম্ভাবনা কম।
তিথি ছোটবেলা থেকেই আত্মনির্ভরশীল হতে চায়। তাই তিনি লেখাপড়া শেষ করে ‘ক' নামক স্থানে 'তিথি গার্মেন্টস নামে একটি রপ্তানিমুখী কারখানা স্থাপন করেন। এজন্য তিনি ‘খ' নামক NGO প্রতিষ্ঠান থেকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিয়েছেন। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানে ৩০০ জন কর্মচারী নিয়োজিত আছে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করায় প্রতিষ্ঠানটির সুনাম দিন দিন বাড়ছে।
মি. কায়েশের ‘TQ’ কোম্পানি ভিয়েতনাম থেকে বিভিন্ন ধরনের চাল আমদানি করে বাছাইয়ের পর গ্রেডিং করে। এরপর প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন মানের চাল মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে রপ্তানি করে। মি. কায়েশ টিভি চ্যানেল ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে তার কোম্পানির প্যাকেটজাত চালের তথ্য মধ্যপ্রাচ্যে জনসাধরণের কাছে তুলে ধরেন। এতে তার কোম্পানির প্যাকেটজাত চালের চাহিদা বেড়ে যায়। ‘TQ’ কোম্পানির মুনাফা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ।
ওমর গাজীপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঁচ একর জমি কিনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পেয়ারার বাগান করেন। অঞ্চলটি পেয়ারা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তার বাগানের পেয়ারা ঢাকার পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যায়। তিনি লক্ষ করলেন, তার বাগানের পাশে প্রচুর উঁচু জমি পতিত অবস্থায় পড়ে আছে। (ব্যাংক, বিমা প্রভৃতি ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতির | কারণে) এসব জমির লাভজনক ব্যবহারের জন্য কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছে না ।
জয়িতা তার বান্ধবী প্রতিভা ও অনন্যাকে নিয়ে ঢাকার নিউমার্কেটে ‘বৈশাখী' নামে হস্তাশিল্পের একটি অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান করে। প্রতিভা একজন বিখ্যাত চিত্রকর। সে এ ব্যবসায় কোনো মূলধন সরবরাহ করে না এবং কর্মীদের দিয়ে ঘর সাজানোর বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করে। অনন্যা হস্তশিল্পের কাঁচামাল চকবাজার থেকে পাইকারি কিনে থাকে। একদিন অনন্যার হিসাবে গরমিল দেখা দেয়। এতে জয়িতা তাকে সন্দেহ করে। ফলে বিরোধের জের ধরে অংশীদারি ব্যবসাটি বিলুপ্ত হয় ।
ওয়াসী তার বন্ধুদের নিয়ে দশজনের একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করেন। কোম্পানির মালিকানাকে দশটি সমানভাগে বিভক্ত করা হয় । প্রত্যেকে একটি শেয়ারের জন্য এক কোটি টাকা করে মোট ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। কিছুদিন পর ওয়াসী তার শেয়ারটি কোম্পানির বাহিরের এক বন্ধুর কাছে বিক্রি করতে চাইলে আইনগত কারণে তা সম্ভব হয় না। ওয়াসীর এক বন্ধু ঢাকার শেয়ার মার্কেটে নিবন্ধিত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে। সে গত মে মাসে সম্প্রসারণশীল কোম্পানির শেয়ার কেনে । কোম্পানিটি জুন মাসে প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্যের ১০% নগদ এবং ৮টি শেয়ারের বিপরীতে বিনামূল্যে একটি শেয়ার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
রংপুরের পঞ্চাশ জন কলাচাষি কলার ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য একটি সংগঠন গঠন করে। তারা প্রতি সপ্তাহে ট্রাকে করে ঢাকার পাইকারি বাজারে বিক্রি করে । তাদের আগে তুলনায় অনেক মুনাফা হয়। তাদের দেখে অনেকে জমিতে কলাচাষ উদ্বুদ্ধ হয়। এ সংগঠনটি সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে। সংগঠনে একজন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আছে- যে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা পায় না ।
শিল্পপতি মি. আহনাফ তার বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যান এবং সেখানে সৌখিন মোটেল'-এ রাত্রি যাপন করেন। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন মোটেলটি একটি সংস্থার অধীন, যা ১৯৭২ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশবলে গঠিত। মোটেলটিতে অনেক সুদক্ষ কর্মী বাহিনীসহ উন্নতমানের সুযোগ-সুবিধা আছে। কক্সাবাজরে দেশীয় ঐতিহ্যের পণ্য নিয়ে অনেক দোকান তৈরি হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখান থেকে দেশীয় ঐতিহ্যের প্রচুর শখের পণ্য কিনে নেয় ।
মি. কবীর নারায়ণগঞ্জে একটি চামড়াজাত ব্যাগ তৈরি শিল্প স্থাপন করেন। তার শিল্পের বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় বর্জ্য নিম্নাঞ্চলে অবাধে চলে যাচ্ছে। এতে এলাকার মানুষের চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ এলাকায় এমন অনেক শিল্প আছে, যা প্রচণ্ড শব্দ সৃষ্টি করে, বাতাস ভারি করে এবং মাটির উর্বরতা কমায়। তাই দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠিানসমূহ যাতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ মেনে চলে এবং দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে ওঠে, এ ব্যাপারে সরকার সদা তৎপর।
মি. আজাদ একটি ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন করেন। তিনি আখের গুড় দিয়ে টেস্টি স্যালাইন উৎপাদন করেন। তিনি টেস্টি স্যালাইনের মান নিয়ন্ত্রণে খুব সজাগ। বাজারজাতকরণের আগে তিনি মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান BSTI-এর অনুমোদন নেন। ভোক্তারা BSTI-এর লোগো দেখে নির্দ্বিধায় টেস্টি স্যালাইন কেনে। এ বছর মি. আজাদ জেলা সদরে চেম্বার অব কমার্স কর্তৃক আয়োজিত শিল্প মেলায় টেস্টি স্যালাইনের একটি স্টল দেন। তার স্টলে প্রচুর দর্শনাথীর কাছে সন্তোষজনক পরিমাণ স্যালাইন বিক্রি করেন।
ব্যবসায় প্রশাসনে উচ্চতর ডিগ্রিধারী মি, রহমান | রাজশাহীতে একটি ফলের জুস তৈরির শিল্প স্থাপন করেন। । তিনি বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বুঝতে পেরেছিলেন- বিশ্ববাজারে ফলের জুসের চাহিদা ক্রমবর্ধনশীল। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা জেলায় প্রচুর আম উৎপাদন হয়। তাই কাঁচামাল হিসেবে আমের সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হবে না। সরকার রাজশাহী অঞ্চলে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবহৃত শিল্পে দশ বছরের জন্য কর।
মি. সামি বিদেশ থেকে আধুনিক প্রযুক্তির গৃহস্থালি সামগ্রী আমদানি করে সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করেন। এজন্য তিনি কোনো দোকান না দিয়ে অফিস খুলে ইন্টারনেটে Megina.Com নামে একটি ওয়েবপেজ খোলেন। এই পেজে সব পণ্যের ব্র্যান্ড, মূল্যতালিকা ও ছবি উপস্থাপন করেন। ভোক্তা পছন্দ করে পণ্যের অর্ডার দিলে সরাসরি ভোক্তার ঠিকানায় পণ্য পৌছে দেওয়া হয়। মি. সামি গ্রাহকের চাহিদা ঠিকানায় পণ্য পৌছে দেওয়া হয়। মি. সামি গ্রাহকের চাহিদা নিরূপণ করার পাশাপাশি ঝামেলাহীনভাবে পণ্য সরবরাহে ই- মেইল, ফেসবুক, টুইটার প্রভৃতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এতে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং মি. সামি ও প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছেন ।
মি. নাদেরের ABC নামক পোশাকশিল্পটি সাভারে অবস্থিত। শিল্পটিতে ৩০০ জন কর্মী কর্মরত। মি. নাদের কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার চেয়ে উৎপাদনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তিনি মনেদ করেন যে, শিল্পটিতে এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অড়ির্জত হলেও আগামী বছর কর্মী অসন্তোষের দরুন উৎপাদন কাজে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে। শিল্প মালিক কারখানার বর্জ্য পাশের নদীতে ফেলেন। ফলে তা নদী দূষণের | পাশাপাশি পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।
বঙ্গোপসাগারের সোনাদিয়া দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত হওয়ায় সরকারি একটি সংস্থা সেখানে হোটেল ও মোটেল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। ইন্টারনেট সুবিধাসহ রিজার্ভেশন এবং অন্যান্য তথ্য প্রচারের জন্য তারা আরেকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়। প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাজে নিয়োগ দেয়। বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় ভ্রমণকারীদের এ স্থানে ভ্রমণের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে
জনাব মাহমুদ পড়ালেখা শেষ করার পর গবাদিপুর খামার করার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তিনি একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নেন। ছোট আকারে খামার স্থাপনের বছরখানেক পর ৬৫ হাজার টাকা লাভ করায় খামারটি সম্প্রসারণের চিন্তা করেন। বন্ধু সালামের পরামর্শ মতে তিনি সরকারের একটি বিশেষ ফাউন্ডেশন থেকে বিনা জামানতে ঋণ নেন।
জনাব সিদ্দিক একজন খুচরা ফল ব্যবসায়ী। তিনি রেয়াজউদ্দিন বাজার ফলমণ্ডির বিভিন্ন দোকান থেকে বাকিতে | ফল কিনে বিক্রি করেন। নির্ধারিত সময়ে তিনি পণ্যের মূল্য পরিশোধ করে দেন। আশপাশের অন্যান্য ফল ব্যবসায়ীর মতো | তিনিও দোকানের ময়লা আবর্জনা, ছেঁড়া পলিথিন ড্রেনে ফেলে দোকানের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখেন ।
জনাব কবির ১০,০০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে সিলেটে একটি বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। তার কারখানায় উৎপাদিত বিভিন্ন আসাবাবপত্র ঢাকা শহরের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করেন। দেখতে সুন্দর, টেকসই অথচ দামে সস্তা এসব পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাসাধারণের তেমন একটা ধারণা নেই । ফলে এসব পণ্যের বিক্রির পরিমাণ খুবই কম ।
জনাব রিয়াদ দীর্ঘদিন কাপড়ের ব্যবসায় করার পর | সোনারগাঁয়ে একটি জামদানি শাড়ির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলেন। সস্তায় শ্রমিক, বাজার সুবিধা ও সরকারি ঋণ সুবিধা তাকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছে। তিনি বাংলাদেশি জামদানি শাড়ির ঐতিহ্যকে বিদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চান। এজন্য তিনি শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দেন । আশা করছেন তিনি এতে সফল হবেন ।
জনাব রফিক ৫ জন কর্মী ও ১৫ লক্ষ টাকা মূলধন নিয়ে কলেজ রোডে একটি স্টেশনারি দোকান স্থাপন করলেন। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রয় না হওয়ায় তিনি চিন্তিত। তিনি লক্ষ করলেন আজকাল শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ কাজই কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ভিত্তিক। এর চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে। তাই তিনি তার দোকানে দুটি কম্পিউটার ও একটি রাউটার ক্রয় করে শিক্ষার্থীদের কম্পোজ ও অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন সেবা দেওয়া শুরু করেন। ফলে তার ব্যবসায়টি এখন লাভজনক হয়ে উঠেছে।
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে কামাল, আলম ও জামাল তিন বন্ধু পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে ‘অহনা রেস্তোরাঁ’ নামে একটি খাবার হোটেল চালু করেন । জামাল কোনো মূলধন সরবরাহ করেননি। তবে তিনি ব্যবসায়ের যাবতীয় কার্যাবলি | সম্পাদন করেন। ২০১৮ সালের শুরুতে মুনাফা বণ্টন নিয়ে জামালের সাথে অপর দুই বন্ধুর মনোমালিন্য দেখা দিলে জামাল এ ব্যবসায়ে আর সদস্য থাকবে না বলে লিখিতভাবে জানিয়ে দেন ।
জনাব আমিন ও তার চার বন্ধু মিলে একটি স্পিনিং মিল স্থাপন করেন। তাদের অনুমোদিত মূলধনের পরিমাণ ৮০ কোটি টাকা। তাদের সুদক্ষ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ফলে প্রতিষ্ঠানটি লাভজনক হওয়ায় তারা আরও তিনটি ইউনিট। স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তাদের আরও ১০০ কোটি টাকা প্রয়োজন। ব্যাংক ঋণ নেওয়ার অসুবিধার কথা বিবেচনা। করে তারা জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে প্রয়োজনায় অর্থ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন ।
জনাব ফারুক একজন কৃষি বিজ্ঞনী। তিনি ২০১০ সালে বারোমাসি এক ধরনের লিচুর বীজ আবিষ্কার করেন। ২০১৫ সালে তিনি মারা যান। তিনি মারা যাওয়ার আগে লিচু বীজের স্বত্ব তাঁর স্ত্রী মিসেস নেহাকে দিয়ে যান। সম্প্রতি মিসেস নেহা লক্ষ করেন, বেশ কিছু নার্সারি ঐ বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বাজারে বিক্রি করছেন। তাই তিনি তার স্বামীর উদ্ভাবিত লিচু বীজের স্বত্ব রক্ষার্থে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেন ।
মি. রিয়াজ তাঁর 'এ প্লাস' কারখানায় তৈরিকৃত শার্ট ও প্যান্ট বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বিখ্যাত ব্র্যান্ড শো-রুমে সরবরাহ করেন। ২০১৭ সালে ১ লক্ষ পিস শার্ট সরবরাহে ১ সপ্তাহ বিলম্ব হওয়ায় ইংল্যান্ড এর বিখ্যাত ব্র্যান্ড “হ্যাডস” তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে ১ লক্ষ পিস শার্ট ‘এ প্লাসের' প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের সহায়তায় ঢাকার বিভিন্ন মার্কেটে অপেক্ষাকৃত কম দামে বিক্রি করে দেন।
জনাব মামুন ইন্ডিপেনডেন্ট লি.-এর অর্থ ব্যবস্থাপক। তিনি সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত অফিসে থাকেন। মাঝে মাঝে রাত ১০টাও বেজে যায় এবং শুক্রবারও কাজ করতে হন। বাধ্যবাধকতায় বিরক্ত হয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে একটি বড় ওষুধের দোকান দেন। ৬ জন কর্মী তার দোকানে কাজ করে। জনাব মামুন মাঝে মাঝে দোকানে বসেন।
মি. সোহেল যশোরে একটি থাই গ্লাসের দোকান প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি প্রতিমাসে বাবা-মায়ের জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতেন। এতে তার অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হতো। বর্তমানে তার গ্রাম মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় তিনি এখন দ্রুত ও নিরাপদে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারেন। তাঁর বাবা টাকা পাওয়ার ব্যাপারে নিরাপদ বোধ করছেন এবং খুশি হয়েছেন ।
জনাব তাওসিফ একজন ফলের ব্যবসায়ী। ফল পচনশীল বিধায় বেশি লাভের আশায় তিনি ফলের মধ্যে ক্ষতিকারক রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করেন এবং দ্রুত ফল পাকানোর জন্য মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কার্বাইড ব্যবহার করেন। এতে প্রথম দিকে মুনাফা হলেও পরবর্তীতে তার | বিক্রয়ের পরিমাণ কমতে থাকে। অপরদিকে জনাব নোমান পাশে অন্য একটি দোকানে ফলের ব্যবসায় পরিচালনা করেন। তিনি ফলে কোনোরূপ রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগ করেন না বিধায় | সৎ ব্যবসায়ী হিসেবে তিনি সুপ্রতিষ্ঠিত। তাঁর দোকানের ফল | ক্রয়ের জন্য প্রচুর লোকের সমাগম হয়।
জনাব কালাম ১৯৮৭ সালে একটি উপন্যাস রচনা করে বই আকারে প্রকাশ করেন। তিনি উপন্যাসটি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের রেজিস্টার বইতে লেখক হিসেবে তাঁর নাম, ঠিকানা, বইটির নাম, পৃষ্ঠা সংখ্যা উল্লেখ করে নিবন্ধন করেন। তখনকার প্রেক্ষাপটে উপন্যাসটি জনপ্রিয়তা পায়নি। বইটি আর ছাপাও হয়নি। ৩০ বছর পর ২০১৭ সালে অন্য একজন ব্যক্তি উপন্যাসটি তাঁর নিজের নামে প্রকাশ করলে জনাব কালাম পূর্বের প্রমাণাদি দাখিলপূর্বক উক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
রুপন্তী, প্রিয়ন্তি ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। তারা তিনজনে একটি বুটিকসের ব্যবসায় করে। তাছাড়া রূপন্তীর নিজস্ব একটি বুটিকসের ব্যবসায় রয়েছে। অধিক লাভের আশায় তারা তিনজন মিলে ব্যবসায়ের যাবতীয় বিষয় নিজেদের মতামত অনুযায়ী দলিলাকারে লিপিবদ্ধ করে ও নিবন্ধন করে। ব্যবসায়ের পরিধি বেড়ে যাওয়াতে রূপন্তী তার নিজস্ব ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিয়েছে।
মিসেস নীলা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন । পরিবারের সবকিছু তাকেই সামলাতে হয় । অফিসের কাজে অতিমাত্রায় ব্যস্ত থাকার কারণে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল ও পানির বিল বর্তমানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিশোধ করেন। বাড়ির নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ইন্টারনেটের মাধ্যমে 'বিকিকিনি' নামে একটি শপিংমল। যেতে ব্রুয় করেন। শপিংমলের কর্মীরা মাল মিসেস নীলার বাড়িতে পৌঁছে দেয় এবং তিনি মোবাইলের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করেন। মিসেস নীলাকে বিল ও মূল্য পরিশোধ করতে এখন আর তেমন য়ামেলা পোহাতে হয় না।
মি. আব্দুল হাই একটি গার্মেন্টস শিল্পের মালিক ও রপ্তানিকারক। 8 সম্প্রতি আমদানিকারক দেশ জাপানের MISAKA" প্রতিষ্ঠানের সাথে বিরোধ দেখা দিলে, সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে পড়ে ওঠা । একটি সংগঠনের সহায়তায় তা সমাধান করে নেয়। মি. আব্দুল হাই- এর ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহণ করে। এবং বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সহায়তা করছে অন্য একটি সংগঠন। ফলে ব্যবসায়ের সাফল্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিস সাম্মী ও মরিয়াম দুই বান্ধবী। তারা দু'জনেই যুব উন্নয়ন প্রবন্ধ থেকে বাটিক, বুটিক ও সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়েছে। মিস সাম্মী তার নামে একটি বাটিক, বুটিকের দোকান দিয়েছে ও মারিয়াম একটি লেডিস টেইলার্স দিয়েছে। গ্রামীণ পরিবেশে বাটিক, বুটিকের ব্যবসায়াট সফলতার সাথে না চললেও লেডিস টেইলাসটি বেশ সফলতার সাথে চলছে।
মাধববাটির লিচু চাষিরা একত্রিত হয়ে ‘আলোর ভুবন' নামে একটি সমবায় সমিতি গড়ে তোলে। ২০১৬ সালে তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল ১০,০০,০০০ টাকা। অপরদিকে কাজীপাড়ার ভুট্টা চাষিরা ‘উত্তরণ’ নামে একটি সমবায় সমিতি গড়ে তোলে। ২০১৬ সালে তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণও ছিল ১০,০০,০০০ টাকা। ‘উত্তরণ’ সমবায় সমিতির জমাকৃত সঞ্চয় থেকে ঋণ সুবিধা দেওয়া হয় কিন্তু ‘আলোর ভুবন' সমিতিটির সেরূপ কোনো ব্যবস্থা নেই ।
ফাহিম কলেজ পড়ুয়া ছাত্র। তার কলেজ যাওয়ার পথে | কয়েকটি ইটের ভাটা রয়েছে। একদিন সে দেখল কোনো ভাটায় চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া ও কোনো চিমনি দিয়ে সাদা ধোঁয়া বেরুচ্ছে। তার মনে প্রশ্ন জাগল যে, দু'ধরনের ধোঁয়া বেরুনোর কারণ কি? এতে আশেপাশের গাছপালা, বাড়িঘর কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে। আবার সে বইয়ে পড়েছে কালো ধোঁয়া পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। এ নিয়ে | সে এখন বেশ চিন্তিত।
রানা নীলফামারী সরকারি কলেজে সম্মান শ্রেণিতে পড়ার সময় দেখলো ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন কাজে ফটোকপি প্রয়োজন হয় ।আশপাশে ফটোকপির দোকান না থাকায় তাদেরকে অনেক দূরে যেতে হয়। সে বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে কলেজ মোড়ে ফটোকপির দোকান দেয়। তার অধ্যবসায়, আত্মবিশ্বাস ও সাহস তাকে সাফল্য ঘ এনে দেয় । তাকে দেখে এলাকার অনেকেই অনুপ্রাণিত হয় ।
জনাব জাকির হোসেন বিবিএ অনার্স পাস করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে বাড়িতে ফিরে নিজেদের তিন বিঘা আয়তনের পুকুরটি সংস্কার করেন। এরপর তাতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে স্তরভিত্তিক মাছ চাষ শুরু করেন। পুকুরে পানির উপরের স্তর, মধ্যম স্তর এবং নিম্ন স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করেন। বর্তমানে জনাব জাকির একজন জনপ্রিয় এবং সফল মাছচাষী । তার এ কার্যক্রম এখন অনেকেই অনুসরণ করছে।
গনি মিয়া কৃষক পরিবারের কর্মঠ ছেলে। নদী বিধৌত পদ্মার পাড়ে তারা বাস করতো। জমিতে পলি থাকায় সেখানে প্রচুর ফসল উৎপন্ন হত। ফলে তারা সচ্ছল জীবিকা নির্বাহ করতো। বন্যায় নদী ভাঙ্গনের ফলে গত বছর গনি মিয়াদের ভিটেমাটিসহ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা মানবেতর জীবনযাপন করেন। ব্যবসায় করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ব্যাংক ঋণ না পেয়ে সে ইটের ভাটায় কাজ করতো। পরবর্তীতে সরকারি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে নদীভাঙ্গন এলাকায় সরকার ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে গনি মিয়াদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয় ।
জনাব শফিক তার নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত চামড়ার জুতা উৎপাদন করে বিভিন্ন বৃহদায়তন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করে থাকেন। তাকে সহযোগিতা করার জন্য তার দুই বন্ধু শ্যামল ও সन উক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। শফিকের উৎপাদিত জুতা মানসম্মত হওয়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তা ব্যাপকভাবে সমাদৃত। তিনি তার বন্ধুদের সহযোগিতায় নিজস্ব তত্ত্বাবধানের মাধ্যমে উৎপাদনকার্য পরিচালনা করেন। তিনি এখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা করছেন।
রংপুরের মিতালী দত্ত নাটোর ও পাবনা থেকে মাছ সংগ্রহ করে। 8 টাকি তৈরি করে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন। ঋণের জন্য তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে যোগাযোগ করলেও জামানত ছাড়া ঋণ নিতে পারেন না। তার এক বন্ধু তাকে একটি ব্যাংকের নাম বলে যেখানে তার মতো ব্যবসায়ীদের জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি ঐ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে সফল হন এবং ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হন ।
জনাব আরিফ ও তার ছয় বন্ধু একত্রিত হয়ে ৯০ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে আনন্দ ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসায় গঠন করেন। আরিফ ও তার বন্ধু রিপন পরিচালক নিযুক্ত হন। তাদের সঠিক পরিচালনায় প্রতিষ্ঠানটি অল্প সময়েই সফলতার মুখ দেখে। পরবর্তীতে তারা পরিচালকের সংখ্যা ও মূলধন বৃদ্ধিসহ ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । এ লক্ষ্যে তারা জনগণের মাঝে উচ্চহার সুদের ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহের উদ্যোগ নেন
মধ্যস্থ ব্যবসায়ীদের হাত থাকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কুমারখালীর । ২০১২ সালে ৫০ জন সদস্য একত্রিত হয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠন করেন। পরবর্তী তিন বছরে তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমান যথাক্রমে ৬০,০০০, ৬৫,০০০ ও ৭৫০০০ টাকা। তারা বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুসারে ন্যূনতম হারে সঞ্চিতি তহবিল সংরক্ষণ করেন। তারা প্রতিটি তাতকল ক্রয়ের জন্য সংরক্ষিত তহবিল ব্যবহারের চিন্তা করছেন।
অমিত রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পটি পড়েছে। তৎকালীন সময় তা ব্রিটিশ আমল থেকে অদ্যাবধি এ সার্ভিস চালু আছে। তবে মোবাইল ফোন, কুরিয়ার সার্ভিস ইত্যাদির উদ্ভবের কারণে এর গুরুত্বকে হ্রাস করেছে। বাংলাদেশে ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা আরেকটি নিরাপদ ও সাশ্রয়ী গণপরিবহন সার্ভিস রয়েছে। সহজ ও আরামদায়ক সেবা হওয়ায় এর চাহিদা বেশি। এ প্রতিষ্ঠানকে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হয় না। তা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়নি।
জনাব জাহিদ একজন চিংড়ি রপ্তানিকারক। তিনি হিমায়িত চিংড়ি প্যাকেট করার জন্য উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারি সহায়তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় যন্ত্রপাতি আমদানি বিলম্বিত হচ্ছে। সম্প্রতি সরকার চিংড়িখাতে কর অবকাশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। বিষয়গুলো নিয়ে জাহিদ খুব চিন্তিত। অথচ জনাব জাহিদ ২০১২ সালে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে সেরা রপ্তানিকারকের পুরস্কার পেয়েছিলেন। রপ্তানি উন্নয়নে ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতেও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন
গ্যালাক্সি লি. এর কয়েকজন প্রকৌশলী বিশেষ এক ধরনের কাচ উদ্ভাবন করেছেন। এ কাচ ভবনের দরজা বা জানালায় ব্যবহার তারা করলে তা একই সাথে সৌর বিদ্যুতের উৎস হিসেবে কাজ করবে। এ বিদ্যুৎ যেকোনো কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটি এ কাচ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের একক অধিকার পেতে চারা। তারা এ বিষয়ে সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করে
মি. সাব্বির 'এবিসি' ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী। তিনি তার ব্যাংকে সকল লেনদেনের হিসাব ছাপানো খাতায় লেখার পরিবর্তে কম্পিউটারে বিশেষ ব্যবস্থায় লিপিবদ্ধ করার নিয়ম প্রবর্তন করেন। গ্রাহকের হিসাব সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য চিঠিপত্রের মাধ্যমে লেনদেনের বদলে ই-মেইল ও মোবাইল ফোনে এসএমএস পদ্ধতি চালু করেন। উন্নত গ্রাহকসেবার কারণে তার ব্যাংকের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
জনাব সামা একজন ব্যবসায়ী। তিনি ভারত থেকে চাল আমদানি করে প্রক্রিয়াকরণের পর ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিপণিতে বিক্রয় করেন গত বছর তিনি যে চাল আমদানি করেছেন, তা দুই মাস পর ইংল্যান্ডে বিক্রয় করলে অনেক বেশি লাভ পেতেন। কিন্তু আমদানিকৃত চালের জন্য জায়গার ব্যবস্থা না থাকায় লাভের জন্য অপেক্ষা না করে নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বিক্রয় করতে বাধ্য হলেন ।
ঢাকার মিরপুর এলাকায় ‘মেঘনা সমবায় সমিতি' ও 'আশার আলো' নামে দুটি সমবায় সমিতি রয়েছে। মেঘনা সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের তৈরি করা খেলনাসামগ্রী একত্র করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে। এতে এলাকার মানুষের উপার্জন বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে আশার আলো সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সরাসরি কোম্পানি থেকে কিনে এনে নিজেরা ভাগ করে নেয়।
গ্যালাক্সি লি.-এর কয়েকজন প্রকৌশলী বিশেষ এক ধরনের কাঁচ উদ্ভাবন করেছেন। এ কাঁচ ভবনের দরজা বা জানালায় ব্যবহার করলে তা একই সাথে সৌর বিদ্যুতের উৎস হিসেবে কাজ করবে। এ বিদ্যুৎ যেকোনো কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটি এ কাঁচ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের একক অধিকার পেতে চায়। তারা এ বিষয়ে সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করে।
সরকার চায় দেশের সর্বত্র শিল্প ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সরকার সাশ্রয়ী মূল্যে মানুষ ও পণ্য পরিবহনের কথা চিন্তা করে সারাদেশে গণপরিবহনের পরিচালনা করে আসছে। যোগাযোগ | মন্ত্রণালয়ের অধীন গণপরিবহন গণমানুষের সেবা দিতে আগ্রহী হলেও তাদের বাস ও ট্রাকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় একবারেই কম বলে তা সম্ভব হচ্ছে না ।
মিসেস রিনা পণ্য ক্রয়ের বিষয়ে খুবই সাবধান থাকেন। বাংলাদেশি কোনো পণ্য কিনতে গেলে তিনি দেখেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন রয়েছে কিনা। বিশেষ করে খাদ্য ও প্রসাধনী সামগ্রীর বেলায় এটা থাকতেই হবে। ব্র্যান্ড পণ্য কেনার প্রতি তার আগ্রহ। তিনি মনে করেন স্কয়ার, প্রাণ ইত্যাদি বড় প্রতিষ্ঠানে একটা মান মেনে চলা হয় । এক্ষেত্রে নকলের সম্ভাবনাও কম ।
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ হলেও শিল্পের ক্ষেত্রে এদেশ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে বিশ্বে আমাদের অবস্থান দ্বিতীয়। রানা প্লাজা ধ্বংসের ঘটনায় সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যুর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সেদেশে বাংলাদেশি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে প্রদত্ত কোটা সুবিধা বাতিল করেছে। এমন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কৃষিশিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে জনাব রনি একটি কৃষি খামার স্থাপন করলেন। তার খামারে উৎপাদিত ফসল স্থানীয় বাজারে বিক্রি করায় একদিকে যেমন বাজারে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে তেমনি স্থানীয় বেকার যুবকরা তার খামারে কাজ পেয়ে বেকারত্বের অভিশাপ ঘুচিয়েছে। এলাকায় তিনি একজন সফল মানুষ হিসেবে বিবেচিত হন ।
রতন তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে টাঙ্গাইলে বিডি ফার্নিচার' নামে একটি কারখানা গড়ে তোলেন। তাদের প্রাথমিক মূলধন ১০ কোটি টাকা। সকলের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সফলতার মুখ দেখে। পরবর্তীতে তারা প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। এজন্য তারা ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে জনগণের মাঝে শেয়ার বিক্রি করে মূলধন সংগ্রহ করতে চায়
রংপুরের মিতালী দত্ত নাটোর ও পাবনা থেকে মাছ সংগ্রহ করে শুটকি তৈরি করে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন। ঋণের জন্য তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে যোগাযোগ করণেও জামানত ছাড়া স্বর্ণ নিতে পারেন না। তার এক বন্ধ তাকে একটি ব্যাংকের নাম বলে। যেখানে তার মতো ব্যবসায়ীদের জামানত ছাড়া ফল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি ঐ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে সফল হন এবং ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হন
মি. বুলবুল একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের ইলেকট্রনিক ব্যবসায়। তিনি টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি বিক্রি করেন। কিছুদিন যাবত তিনি লক্ষ করলেন যে, তার শোরুমের বিক্রয় দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি খুব হতাশ। তিনি অঞ্চলের ক্রেতাদের আধুনিক প্রযুক্তির জ্ঞান সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই না করে ইন্টারনেটে ও ফেসবুকে তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রীত পণ্যের বিজ্ঞাপন নেন। কিন্তু তারপরেও তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রি বৃদ্ধি পায়নি ।
কক্সবাজার বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন নগরী। এখানে সরকারি-বেসরকারি অসংখ্য হোটেল-মোটেল রয়েছে। এখানে বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু পাঁচতারা হোটেল স্থাপিত হলেও সরকারি সংস্থার অধীনে পরিচালিত হোটেলগুলোর গ্রহণযোগ্যতা মানুষের কাছে অনেক বেশি। বর্তমানে কক্সবাজারে যাওয়ার সুযোগ সড়ক পথের বাইরে খুব সীমিত। সাধারণ পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে একচেটিয়াভাবে পরিচালিত সরকারের গণপরিবহনের সুযোগ চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা জরুরি। এর ফলে দেশের এ পর্যটন নগরী আরও সমৃদ্ধি অর্জন করবে।
রফিক, শফির ও করিম একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য। রফিক ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করেন ও ব্যবসার পরিচালনায় ও অংশগ্রহণ করেন। শফিক মূলধন বিনিয়োগ করেন কিন্তু পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন না। করিম মূলধন বিনিয়োগ করেন না আবার পরিচালনায়ও অংশ নেন না। তবে ব্যবসায়ে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। হঠাৎ বিকৃতির কারণে কর্তব্য পালনে স্থায়ীভাবে অসমর্থ হন।
গ্যালাক্সি লি.-এর কয়েকজন প্রকৌশলী বিশেষ এক ধরনের কাঁচ উদ্ভাবন করেছেন। এ কাঁচ ভবনের দরজা বা জানালায় ব্যবহার করলে তা একই সাথে সৌর বিদ্যুতের উৎস হিসেবে কাজ করবে। এ বিদ্যুৎ যেকোনো কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটি এ কাঁচ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের একক অধিকার পেতে চায়। তারা এ বিষয়ে সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করে ।
ঢাকার মিরপুর এলাকায় 'মেঘনা সমবায় সমিতি' ও 'আশার আলো' নামে দুটি সমবায় সমিতি রয়েছে। মেঘনা সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের তৈরি করা খেলনাসামগ্রী একত্র করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে। এতে অত্র এলাকার মানুষের উপার্জন বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে আশার আলো সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সরাসরি কোম্পানি থেকে কিনে এনে নিজেরা ভাগ করে নেয়।
জাকির হোসেন বিবিএ অনার্স পাস করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। অবশেষে বাড়িতে ফিরে নিজেদের তিন বিঘা আয়তনের পুকুরটি সংস্কার করেন। এরপর তাতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে স্তরভিত্তিক মাছ চাষ শুরু করেন। পুকুরের পানির উপরের স্তর, মধ্যম স্তর এবং নিম্ন স্তরের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ঘ. প্রজাতির মাছ চাষ করেন। বর্তমানে জনাব জাকির একজন জনপ্রিয় ও সফল মাছ চাষি। তার এ কার্যক্রম এখন অনেকেই অনুসরণ করছে।
শেরপুরের হাবিব স্থানীয় তাল, বাঁশ ও খেজুর গাছের ওপর ভিত্তি করে ‘রূপসী বাংলা' নামে একটি কুটির শিল্প গড়ে তুলেছেন। তার শিল্পে উৎপাদিত পাখা, টুপি, পাট ও খেলনা সামগ্রী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। তার উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। দিন দিন চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের জন্য চেষ্টা । চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু মূলধন সংকটের কারণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছেন না ।
রংপুরের মিতালী দত্ত নাটোর ও পাবনা থেকে মাছ সংগ্রহ করে শুঁটকি তৈরি করে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন। ঋঋণের জন্য তিনি বিভিন্ন ব্যাংকে যোগাযোগ করলেও জামানত ছাড়া ঋণ নিতে পারছেন না। তার এক বন্ধু তাকে একটি ব্যাংকের নাম বলে যেখানে তার মতো ব্যবসায়ীদের জামানত ছাড়া ঋণ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি ঐ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করে সফল হোন এবং ব্যবসায় সম্প্রসারন করতে সক্ষম হোন।
মি. সাব্বির ‘এবিসি’ ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী। তিনি তার ব্যাংকে সকল লেনদেনের হিসাব ছাপানো খাতায় লেখার পরিবর্তে কম্পিউটারে বিশেষ ব্যবস্থায় লিপিবদ্ধ করার নিয়ম প্রবর্তন করেন। হিসাব সংক্রান্ত গ্রাহকের যাবতীয় তথ্য চিঠিপত্রের মাধ্যমে লেনদেনের বদলে ই-মেইল ও মোবাইলে এসএমএস পদ্ধতি চালু করেন। উন্নত গ্রাহক সেবার কারণে তার ব্যাংকের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
মি. রহমান একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী। ঢাকার কাওরান বাজারে তার আড়ত রয়েছে। তিনি নিজেই তার ব্যবসায়ের যাবতীয় কাজ তদারক করেন। তিনি কখনও আম, কাঁঠাল, তরমুজ বিক্রি করেন। আবার কখনও আনারস, আপেল ও খেজুর বিক্রি করেন। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ফল ব্যবসায়ীদের নিকট তিনি একজন জনপ্রিয় ব্যবসায়ী। তিনি সবসময় একটি নীতি মেনে চলেন, তা হলো 'সৎ ব্যবসায়ী সবসময়ই সুখী।'
রফিক, শফিক ও করিম একটি অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য। রফিক ব্যবসায়ে মূলধন বিনিয়োগ করেন ও ব্যবসায় পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করেন। শফিক মূলধন বিনিয়োগ করেন কিন্তু পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন না। করিম মূলধন বিনিয়োগ করেন না আবার পরিচালনায় অংশ নেন না। তবে ব্যবসায়ে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। হঠাৎ রফিক মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে কর্তব্য পালনে স্থায়ীভাবে অসমর্থ হন ।
মি. সাত্তার একজন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। তিনি বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করে মুনাফা অর্জন করেন। তিনি তিস্তা ব্যাংক লিমিটেডের কিছু শেয়ার ক্রয় করলেন। শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে তিনি ব্যাংকটির সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা লাভ করেন। সকল সুযোগ-সুবিধা ঠিক থাকলেও তিনি লভ্যাংশ প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তায় ভোগেন ।
গ্যালাক্সি লি.-এর কয়েকজন প্রকৌশলী বিশেষ এক ধরনের কাঁচ উদ্ভাবন করেছেন। এ কাঁচ ভবনের দরজা বা জানালায় ব্যবহার করলে তা একইসাথে সৌর বিদ্যুতের উৎস হিসেবে কাজ করবে। এ বিদ্যুৎ যেকোনো কাজে ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিষ্ঠানটি এ কাঁচ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের একক অধিকার পেতে চায়। তারা এ বিষয়ে সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করে।
ঢাকার মিরপুর এলাকায় মেঘনা সমবায় সমিতি ও আশার আলো নামে দুটি সমবায় সমিতি রয়েছে। মেঘনা সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের তৈরি করা খেলনাসামগ্রী একত্র করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে। এতে অত্র এলাকার মানুষের উপার্জন বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে আশার আলো সমবায় সমিতির সদস্যরা তাদের প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য সরাসরি কোম্পানি থেকে কিনে এনে নিজেরা বণ্টন করে নেয়।
জনাব শাদীদ বিসিক (BSCIC) থেকে হস্তশিল্প তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে পাটজাত ব্যাগ ও গৃহসজ্জার পণ্য তৈরি শুরু করেন। উদ্ভাবনী শক্তি ও নৈপুণ্যের কারণে তার উৎপাদিত পণ্য ভোক্তাদের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা পায়। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে তার প্রতিষ্ঠানে নতুন ৪০ জন কর্মী নিয়োগ দেন এবং উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায় সম্প্রসারণ করেন। শাদীদ পাশাপাশি অনলাইনেও টেলিভিশনে পণ্য সম্পর্কে গ্রাহকদের জানানোর ব্যবস্থা করেন। এতে তার পণ্যের চাহিদা আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি সেখানে পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হচ্ছেন।
বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আশির দশকের শুরুতে জনাব আওলাদ বাংলাদেশের জনসম্পদকে কেন্দ্র করে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন, যার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটানো। আশির দশকের মাঝামাঝি জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে তার তৈরি পোশাক বিক্রি করেন। ক্রমান্বয়ে তার তৈরি পোশাক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। জনাব আওলাদ যুক্তরাষ্ট্রে বসে তার কারখানায় নিয়োজিত জনাব সেজাদকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক পোশাক উৎপাদনের নির্দেশ দেন। জনাব সেজাদ কারখানার কর্মীদেরকে দিয়ে পোশাক উৎপাদন করে জনাব আওলাদ বরাবর প্রেরণ করেন। জনাব আওলাদ একের পর এক তৈরি 8 পোশাকের নতুন বাজারের দ্বার উন্মুক্ত করেন।
জনাব আরেফিন, ক ও খ নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সাথে সম্পৃক্ত। ক প্রতিষ্ঠানটি ট্রেড লাইসেন্স এবং খ প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনপত্র নিয়ে কাজ শুরু করেন। দুটি প্রতিষ্ঠান ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেছিল। মেয়াদ শেষে ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য ক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যাংক জনাব আরেফিনকে নোটিশ প্রদান করে। খ এর ক্ষেত্রে মালিক আরেফিনের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানকে নোটিশ দেয়। দুটি প্রতিষ্ঠানই বর্তমানে সচ্ছল।
শফিক, আজিম ও রনি পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গৃহনির্মাণ ফার্ম গঠন করার পরিকল্পনা করে। তারা উক্ত ফার্মে প্রকৌশলী রফিকের সুনাম ব্যবহার করার জন্য তাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে। চুক্তি অনুযায়ী তিনি উক্ত ব্যবসায়ে মূলধন, শ্রম বা দক্ষতা কিছুই বিনিয়োগ করেন না কিন্তু মুনাফা ভোগ করেন এবং তিনি ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত দায় বহন করবেন। তিন বছর পর আজিম দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন। তার ১৫ বছর বয়সী সন্তান তামীমকে তারা অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করে। পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির দশ লক্ষ টাকা দায় সৃষ্টি হয়। প্রতিষ্ঠানের সম্পদ ও মূলধনসহ মোট দুই লক্ষ টাকা দায় মিটানো সম্ভব। অবশিষ্ট দায় মিটানোর জন্য শফিক ও রনি দুই লক্ষ টাকা করে চার লক্ষ টাকা প্রদান করে এবং জনাব রফিক ও তামীমকে দুই লক্ষ টাকা করে প্রদান করার জন্য চিঠি দেন
মাশরাফি ও তার ৬ বন্ধু মিলে এমন একটি ব্যবসায় সংগঠন গঠন করার জন্য পরিকল্পনা করে যাতে জনগণ থেকেও মূলধন সংগ্রহ করা সম্ভব। তাই তারা প্রয়োজনীয় দলিলপত্রসহ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে তাদেরকে একটি সনদ ইস্যু করেন। কিন্তু ব্যবসায় শুরু করার জন্য আরও দলিলপত্রসহ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করত হবে।
বাংলাদেশ সরকার তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার ট্রেন সার্ভিস চালু করার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যাতে পর্যটকগণ নিরাপদে ও আরামে কক্সবাজার যেতে পারে। অপরদিকে সরকার নিজস্ব বিনিয়োগের পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের সহায়তায় ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন সার্ভিস দেয়ার জন্য একটি নতুন ব্যবসায় গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
ইলিয়াছ এমন একটি নতুন প্রযুক্তির যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যা দিয়ে বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় ২৪ ঘণ্টা ফ্রিজ চালানো যায়। তিনি এ যন্ত্রটি VOLTA' নাম দিয়ে বাজারজাত করেন। 'VOLTA' নাম ও চিহ্নটি তিনি একটি বিশেষ আইনে নিবন্ধন করেন। 'VOLTA' ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করায় বগুড়ার সানোয়ার 'VOLTA' নামে একই ধরনের যন্ত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রয় শুরু করে । অপরদিকে সিলেটের নাসির 'ELECTRO' নাম দিয়ে একই প্রযুক্তির যন্ত্র তৈরি করে বাজারজাত করছে। ইলিয়াছ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনজীবীর পরামর্শ চান। আইনজীবী অভিমত দেন যে সানোয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত প্রতিকার পাওয়া গেলেও সীমাবদ্ধতার কারণে নাসিরের বিরুদ্ধে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব হবে না।
দোহাজারীর আলুচাষি নাসির আরও ৪০ জন আলুচাষি নিয়ে একটি সমবায় সমিতি গঠন করেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো প্রয়োজনীয় সার বীজ, কীটনাশক ক্রয়ে এবং আলু সংরক্ষণ ও বিক্রয়ে সুবিধা লাভ করা। উক্ত সমবায় গঠনের চড়ান্ত পর্যায়ে সমবায় নিবন্ধক তার সিল ও স্বাক্ষরযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল নাসিরকে প্রদান করেন। উক্ত দলিলে সমিতির মোট শেয়ার সংখ্যা ১,০০০ উল্লেখ আছে। নাসির ২০০ শেয়ার ক্রয় করেন। আগামী নির্বাচনে সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার জন্য তিনি আরও শেয়ার ক্রয়ের পরিকল্পনা করছেন।
ক, খ, গ তিন বন্ধু। ক তার হ্যাচারিতে আলো, তাপ ও বায়ু নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিম থেকে মুরগির বাচ্চা পেয়ে থাকেন। গ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ । তিনি তথ্য লিখন ও প্রক্রিয়াকরণের ব্যবসায়ে নিয়োজিত। খ, ক-এর হ্যাচারি থেকে পণ্য সংগ্রহ করেন। খ উক্ত পণ্যের চাহিদা, মূল্যস্তর, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য গ- এর নিকট থেকে সংগ্রহ করে উক্ত পণ্য সারাদেশে সরবরাহ করে থাকেন
জনাব সোবহান ‘একের ভিতর তিন' নামে একটি নতুন কলম বাজারে চালু করেন। যেখানে একই কলম দিয়ে লাল, সবুজ ও কালো রঙের কালি দিয়ে লেখা সম্ভব। কলমটির বাজারে ব্যাপক চাহিদা আছে। কারখানার যন্ত্রপাতির উৎপাদন ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কর্মীদের আচরণকে প্রভাবিত করে উৎপাদনমুখী করে পর্যাপ্ত পরিমাণ কলম উৎপাদন করতে না পারায় তিনি বাজারের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হন। কোরবান নামক একজন ব্যবসায়ী সোবহানের বিনা অনুমতিতে উত্ত পণ্য উৎপাদন শুরু করেছেন।
জনাব আজাদ সাংগু ব্যাংক, ঢাকা শাখায় একটি হিসাব খুলেছেন। তিনি উক্ত হিসাবে লেনদেনের সময় কাগুজে ডকুমেন্ট যেমন: রশিদ, চেক ব্যবহার করেন। তার হিসাবে সবসময় পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ জমা থাকে। জনাব মজিদ কুশিয়ারা ব্যাংক রংপুর শাখায় একটি হিসাব খোলেন। তিনি ব্যাংক লেনদেনে কোনো কাগুজে ডকুমেন্ট ব্যবহার করেন না। তারা দুজনই স্বপরিবারে কক্সবাজারে বেড়াতে গেলেন যেখানে দুটি ব্যাংকেরই শাখা আছে। দুজনই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখায় টাকা উত্তোলন করতে গেলেন। মজিদ যথাযথভাবে উত্তোলনে সমর্থন হন। আজাদ যথাযথ নিয়ম মেনে চেক উপস্থাপন করলেও অন্য শাখার চেক হওয়ায় ব্যাংক তাকে প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানে ব্যর্থ হন।
চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স শীত মৌসুমের শুরুতে আমেরিকার ‘রিকার্ড' ট্রেডার্স-এর নিকট ৫০ লক্ষ টাকার শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য ফরমায়েশ দেন। যাত্রাপথে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও জাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে ফরমায়েশকৃত পণ্য ২৩ দিন বিলম্বে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌছে। শীত মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় ফরমায়েশকৃত পণ্য কম দামে অন্য দেশে বিক্রি করে দেয়া হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ৫ লক্ষ টাকা লোকসান হয় ।
জনাব ইকবাল ঢাকায় থাকেন। তিনি সন্দ্বীপে একটি বাড়ি কিনেন। সন্দ্বীপে গিয়ে তিনি সমুদ্রে মাছ ধরেন। উক্ত মাছ বিশেষ প্রক্রিয়ায় শুকিয়ে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করেন। বাজারে তার পণ্যের ব্যাপক সুনাম আছে পণ্যগুলোর ওজন ও আকার সুনির্দিষ্ট না থাকায় ক্রেতারা মাঝে মধ্যে তার পণ্য ক্রয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন ।
নিয়ামত হোসেন ১০ বছর ধরে চট্টগ্রাম শহরে একটি মুদি দোকান চালাচ্ছেন। গ্রাহকের সাথে তার সম্পর্ক ভালো। যুক্তিসঙ্গত দামে গ্রাহকের রুচি অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করেন। প্রতিযোগিতার মধ্যেও তার গ্রাহক বেড়েছে। এখন তিনি বড় আকারের দোকান দেয়ার কথা ভাবছেন। এজন্য তার অধিক টাকার প্রয়োজন। বন্ধু রহিম তার ব্যবসায়ে পুঁজি বিনিয়োগ করতে চান। ব্যাংকও ঋণ দিতে রাজি।
ফারজানা ও তার তিন বোন বোঝাপড়ার ভিত্তিতে জেকস নামক বুটিক হাউস গড়ে তোলেন। ভালো ডিজাইন ও সুলভ মূল্যের কারণে প্রতিষ্ঠানটির পণ্য ক্রেতাদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পায়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অল্পদিনে প্রচুর মুনাফা অর্জন করে। ৪ বছর পর ফারজানার বড় বোন মারা গেলে তার ১৬ বছর বয়সী ছেলে তৌকিরকে ব্যবসায় দেখাশোনার সুযোগ দেয়। ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ৫০ লক্ষ টাকা ওয়ান ব্যাংক হতে ঋণ নেয়।
জনাব জাকির তার ১০ (দশ) বন্ধুকে নিয়ে ঢাকা শহরে 'রনি এন্টারপ্রাইজ' নামক একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট হতে অনুমতিপত্র গ্রহণের মাধ্যমে তারা ব্যবসায় গঠন প্রক্রিয়াসম্পন্ন করেন। তাদের মূলধনের পরিমাণ ৪৮ কোটি টাকা। দক্ষতা ও সুনামের কারণে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালে ১৭ কোটি টাকা মুনাফার্জন করে। সম্প্রতি তারা ব্যবসায় সম্প্রসারণের চিন্তা করেন, যার জন্য অতিরিক্ত ২৩ কোটি টাকা মূলধন প্রয়োজন, যা শেয়ার বিক্রি অথবা ব্যাংক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারেন।
রফিক পেশায় একজন রিকসা ভ্যান চালক। স্বল্প আয়ের লোক বিধায় সংসার চালাতে মহাজনের নিকট হতে ঋণ নিতে হয়। অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে কয়েকজন বন্ধু মিলে ভ্যানচালক সমবায় সমিতি গঠন করেন। তারা দৈনিক ভিত্তিক চাঁদা দিয়ে সঞ্চয় জমা করেন এবং জমাকৃত টাকা ব্যবসায়িক কাজে লাগিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হন। সমিতি অল্পদিনে ৩৫টি ভ্যান গাড়ি নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয় করে। সমিতির সদস্য সংখ্যা এখন ৮৩ জন ।
মিসেস হাসনাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। সপরিবারে ঢাকায় থাকেন । আসন্ন ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । কিন্তু যানবাহনের কথা ভেবে চিন্তিত। যদিও বেসরকারি বাসের পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণের নিরাপদে ও সুলভে যাতায়াতের জন্য দু'ধরনের বিশেষ সংস্থা আছে। সেবার মান নিয়ে কিছু অভিযোগ আছে। সংস্থা দু'টো লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত নয়। সরকার সংস্থা দু'টোর লোকসান কমানো এবং সেবার মান বাড়ানোর চিন্তা করছে। এছাড়া নতুন 'রুট' চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা করেছে।
জনাব সিফাত ও তার ১০ বন্ধু মিলে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গঠন করার উদ্যোগ নেন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাই করে | সন্তুষ্ট হয়ে একটি পত্র ইস্যু করেন। পত্রটি পাওয়ার পর তারা ব্যবসায় আরম্ভ করেন। ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য তারা জনগণের কাছ থেকে মূলধন সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেন ।
নোবেল বিজয়ী জনাব রুবায়েত আলমের 'যুদ্ধ' উপন্যাসটি বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে ৫০ লক্ষ সেট বইয়ের ফরমায়েশ পান। বইগুলো জাহাজীকরণের পূর্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে এগুলো সুরক্ষার জন্য তিনি একটি বিমা পলিসি গ্রহণ করেন। এখন তিনি তার বই নকল মুদ্রণের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ।
জনাব রিয়াজ রহমান বাজারে একটি নতুন সাবান ছাড়েন, যা শরীরের ধুলাবালি পরিষ্কার করে এবং এর সুঘ্রাণ রক্তনালীকে সম্প্রসারণ করে। তিনি সাবানের গায়ে একটি বিশেষ লোগো ব্যবহার করেন। ফলে ক্রেতারা সহজে সাবানটি শনাক্ত করতে পারে। বাজারে সাবানটির প্রচুর চাহিদা। সম্প্রতি 'ওমেগা কোম্পানি' নামে অন্য একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাবানটি উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে।
জনাব তাহের কলেজ রোডের একটি মনিহারি দোকানের মালিক। কলেজ বোর্ডের পাশে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি লক্ষ করলেন আজকাল ছাত্রদের সব কাজই ইন্টারনেটভিত্তিক এবং এর ক্রমবর্ধমান চাহিদা রয়েছে। তিনি এ পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিলেন। তিনি দুটি কম্পিউটার এবং দুটি মডেম কিনলেন। তার ব্যবসায় এখন গরম রুটির বিক্রির মতো চলছে
মুন এবং রবি সাদ ট্রেডার্স নামে একটি অংশীদারি ব্যবসায় চালান। রাফি নামে তাদের বন্ধু প্রায়ই তাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে আসে। তাকেও ব্যবসায়টির একজন অংশীদার বলে মনে হয়। মাঝে মাঝে সে নিজেকে একজন অংশীদার বলে পরিচয় দেয়। কিছুদিন পরে আশিক ট্রেডার্স নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সাদ ট্রেডার্সের কাছে ৩০,০০০ টাকা দাবি করে। রাফি টাকাটা নিয়েছিল। এটা সত্যি ছিল কিন্তু সাদ ট্রেডার্স সে অর্থ দিতে নারাজ ৷
মুন গার্মেন্টস-এর শ্রমিকেরা তাদের নিজেদের কল্যাণার্থে কারখানা গেইটের সামনে একটি দোকান স্থাপন করে। এ দোকানের মালিক তারা এবং ক্রেতাও। তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি ব্যবসায়টি চালায়। প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিনিয়োগ যাই হোক না কেন প্রত্যেকের অংশগ্রহণ থাকে সমান। তারা তাদের সংগঠন থেকে বিবিধ সহায়তা পেয়ে থাকে
নাজিব বগুড়া শহরে কীটনাশকের একজন বিখ্যাত পাইকারি বিক্রেতা। তার কীটনাশকের গুদামঘরটি একটি জনাকীর্ণ এলাকায় যেখানে অনেক ছোট ছোট চায়ের দোকান আছে। এজন্য সে মাঝে মাঝে নিজেকে অনিরাপদ মনে করে। এ বছর তার ব্যবসায়ের পরিধি বাড়ানোর অন্য একটি মধ্যমমেয়াদি ঋণের প্রয়োজন। এজন্য সে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হতে চায় যেটি তার উভয় ধরনের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে।
শান্ত নতুন একটা কিছু করতে চায়। সে এইচ,এস,সি পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় যুব উন্নয়ন অফিস থেকে ৬ মাস মেয়াদি একটি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করল। সে তার নিজ জেলা শহরে ছোট একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার খুলে বসল। মাঝে মাঝে সে নানারকম চ্যালেঞ্জ এবং পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়। বর্তমানে সে দেশে ও বিদেশে একজন সুপরিচিত সফটওয়্যার ফার্মের মালিক হিসেবে সুপরিচিত।
জনাব 'A' আমের মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করেন। গতানুগতিক ব্যবসায়ীগণ ফরমালিনের কথা চিন্তা না করেই রাজশাহীর বাজার থেকে আম কিনে ঢাকায় বিক্রি করে। কিন্তু জনাব 'A' সরাসরি রাজশাহীর আমের বাগান থেকে ফরমালিনমুক্ত আম কিনেন। ফরমালিনমুক্ত আম পচে লাভের পরিবর্তে ক্ষতিও হতে পারে তা জেনেও জনাব 'A' এ কাজ করেন
মীম টুপিতে নকসার কাজে বিশেষভাবে পারদর্শী। মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সে নকসাকৃত টুপি তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। দক্ষতার কারণে অল্প সময়ের ব্যবধানে তার ব্যবসায় দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করে। ফলে মীম তার ব্যবসায় সম্প্রসারণ করতে চায়। কিন্তু তার পর্যাপ্ত মূলধন নেই। তার দুই বন্ধু ব্যবসায়ে । মূলধন সরবরাহ করতে চায়। পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে তারা তিন বন্ধু মিলে ব্যবসায় পরিচালনা করতে রাজি হয়
জনাব মুহিববুল্লাহ দীর্ঘদিন গবেষণা করে এক ধরনের নতুন ধান বীজ উদ্ভাবন করেন। এ বাজ হতে অতি অল্প সেচে এবং অল্প সময়ে ধান উৎপন্ন হয়। তিনি বিশেষ চিহ্ন বিশিষ্ট প্যাকেটে করে উদ্ভাবিত ধান বীজ বাজারে বিক্রি করে থাকেন। তথাপি একটি অসাধু বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান তার উদ্ভাবিত বীজের অনুরূপ ধানের বীজ নকল করে বাজারজাত করছে। কিন্তু যথাযথ প্রমাণের অভাবে মুহিববুল্লাহ উত্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন নি।
ঝিনাইদহের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে এক ধরনের কৃষক সবজি উৎপাদনে পোকা দমনে কীটনাশকের পরিবর্তে প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে । কৃষকদের অন্য গ্রুপ ব্যাপক মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করে। আঃ আলিম ১ম শ্রেণির কৃষক থেকে বাকিতে সবজি ক্রয় করে ঢাকার বাজারে বিক্রি করে। বিক্রয় শেষে যথাসম্ভব তাড়াতাড়ি সে কৃষকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করে দেয়। ১ম প্রকারের সবজি বিক্রয়ে তুলনামূলকভাবে কম লাভ হলেও আঃ আলিম এ কাজে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন ।
'ABC' একটি সফটওয়্যার প্রস্তুতকারী কোম্পানি সংগঠন। তারা সম্প্রতি ১০০টি সফটওয়্যার তৈরির অর্ডার পায়। তাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ লোকবল নেই । তাই তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্য সম্পাদনের জন্য ‘মুন’ কোম্পানিকে চুক্তির ভিত্তিতে ৩০টি সফওয়্যার তৈরির দায়িত্ব দেয়। দক্ষ লোকবলের অভাবে পরবর্তীতে 'ABC' কোম্পানির নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। তাই তারা বিকল্প সমাধান না পেয়ে কোম্পানি বিলোপসাধনের সিদ্ধান্ত নেয় ।
জনাব ফাহিম 'আলফা' ব্যাংকের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। ‘আলফা' ব্যাংক লেজার বুকের পরিবর্তে কম্পিউটারে গ্রাহকদের হিসাব সংরক্ষণ করে। তথ্য আদান-প্রদানে চিঠির পরিবর্তে ই-মেইল, মোবাইল ফোন ইত্যাদি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। গ্রাহকগণ ব্যাংকে না গিয়ে চেক ছাড়াই মুহূর্তে কার্ড ব্যবহার করে দিন রাত ২৪ ঘণ্টা টাকা তুলতে পারে।
রাসেল স্থানীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে মাত্র ৩০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজেদের পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। তার সংগৃহীত উন্নত জাতের তেলাপিয়া মাছের পোনা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই বিক্রয়যোগ্য হয়ে উঠে। স্থানীয় বাজারের ক্রেতারা যাতে নিজেদের পছন্দমতো মাছ ক্রয় করতে পারে এজন্য রাসেল দীর্ঘ সময় জীবন্ত রাখার জন্য কৃত্রিম উপায়ে মাছগুলো সংরক্ষণ করেন। এতে তার মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থ স্বল্পতার কারণে এ বাড়তি চাহিদা মিটানো তার পক্ষে সবসময় সম্ভবপর হয়ে উঠে না ।
মাহমুদ, তাহসিন ও জহির তিনজন মিলে একটি নিটিং গার্মেন্টস গড়ে তুলেছেন। পরবর্তীতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মিজানকে তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে বিনা মূলধনে প্রতিষ্ঠানের অংশীদার করে নেয়া হয়। মাহমুদ, তাহসিন ও মিজান ব্যবসায় পরিচালনায় অংশ নেয় কিন্তু জহির অংশ নেয় নি । বছর শেষে জহির অন্যান্যদের সমান মুনাফা দাবি করে।
মি. আজাদ তার ২০ জন বন্ধু নিয়ে ২০১৩ সালে একটি কম্পোজিট টেক্সটাইল 'জাইটেক্স লি.' স্থাপন করেন। ভোক্তাদের রুচি ও প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে স্টক ও ১০% নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। ২০১৭ সালে তারা কারখানা সম্প্রসারণের চিন্তা-ভাবনা করছেন। বিভিন্ন কারণে বর্তমানে ব্যাংক ঋণের সুদের হার অনেক বেশি
বংশালের ২০ জন জুতা প্রস্তুতকারী কারখানার মালিক মিলে তিন বছর যাবত যথাক্রমে ৬,০০,০০০ টাকা, ৮,০০,০০০ টাকা ও আইনগত সত্তা বিশিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি গত ৯,০০,০০০ টাকা মুনাফা অর্জন করে । অর্জিত মুনাফা বিধি মোতাবেক সঞ্চিতি তহবিলে রেখে অবশিষ্ট টাকা নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে নেয়। তারা নিজেদের আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য আফতাব নগরে এককালীন ১০,০০,০০০ টাকা প্রদান করে কিস্তিতে একটি প্লট কেনার সিদ্ধান্ত নেয়
জনাব আব্দুল মানান্ন 'বাংলাদেশ ও ব্যবস্থাপনা' নামক একটি বই লিখেন। 'অহনা প্রকাশনী' বইটির গ্রন্থস্বত্ব কিনে নেয়। বইটি পাঠক সমাজে খুবই সমাদৃত হওয়ায় চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। 'তিশা প্রকাশনী' বইটির কভার পৃষ্ঠা ও বিষয়বস্তুর সামান্য পরিবর্তন করে হুবহু প্রকাশ করে। ফলে অহনা প্রকাশনীর বিক্রয় হ্রাস পায় অহনা প্রকাশনী ক্ষতিপূরণ ও প্রতিকার চেয়ে তিশা প্রকাশনীর বিরুদ্ধে মামলা করে।
তুষার পড়াশুনা শেষ করে একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি নেয়। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক তুষারের কর্মতৎপরতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা দেখে গার্মেন্টসের বিভিন্ন বিভাগে পদ পরিবর্তন করে তাকে দক্ষ করে তোলেন। পরবর্তীতে তুষার নারায়ণগঞ্জে ‘তুষার গার্মেন্টস' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার অক্লান্ত পরিশ্রমে ও আত্মবিশ্বাসের কারণে প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে।
রবি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্ৰ থেকে নার্সারি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেয় । তাদের নিজস্ব জমিতে নার্সারি শুরু করে। কিন্তু পর্যাপ্ত পুঁজির সংস্থান করতে না পারায় সে কিছুটা হতাশ। তার বন্ধুর পরামর্শে সে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় মূলধন সরবরাহের জন্য আবেদন করে। প্রতিষ্ঠানটি তাকে মূলধন সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছে।
মি. রাশেদ ‘বিডি ফ্যাশন' নামে একটি পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক। উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান ও রুচিসম্মত ফ্যাশনের হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটি বেশ সুনাম অর্জন করেছে। প্রতিষ্ঠানটি এলাকার শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের জন্য একটি প্রাইমারি বিদ্যালয় ও একটি দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করেন। তবে প্রতিষ্ঠানটি আবাসিক এলাকার পাশে স্থাপিত হওয়ায় মেশিনের শব্দের কারণে এলাকাবাসীর অনেক অসুবিধা হচ্ছে।
করিম গাজীপুরের একজন চাল ব্যবসায়ী। তিনি মায়নামার | থেকে চাল আমদানি করে বাছাই করেন এবং পরবর্তীতে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বস্তা ভরে নিজস্ব গুদাম সংরক্ষণ করেন । তার গুদামে বর্তমানে প্রায় ১ হাজার মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। কিন্তু বাজারে চালের দাম কমে যাওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে তিনি গুদামের চাল প্যাকেটজাত করে মধ্যপ্রাচ্যে বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেন।
জনাব রিফাত গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানা স্থাপন করেন। এখানে জমির মূল্য অপেক্ষাকৃত কম এবং পর্যাপ্ত দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। ফলে বিনিয়োগ কম করেও মুনাফার পরিমাণ বেশি হয়। তিনি দেখলেন তার কারখানার পার্শ্ববর্তী ‘রংধনু' নামক একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের কাজের সময় ও কর্ম পরিবেশ নিয়ে শ্রম অসন্তোষ চলছে। মালিকপক্ষ ‘রংধনু' নামক পোশাক কারখানাটি তালাবদ্ধ ঘোষণা দেয়।
লিজা পড়াশুনার পাশাপাশি ‘কুইন' নামে একটি বিউটি পার্লারের দোকান পরিচালনা করেন। তিনি পার্লারে দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেন। পাশাপাশি নিজেও গ্রাহকদের সেবা দেন। তিনি গ্রাহকদের অভাব অভিযোগ মনোযোগ সহকারে শুনেন এবং সে অনুযায়ী সেবা দানের চেষ্টা করেন। গ্রাহকরা তার উপর খুবই সন্তুষ্ট। অল্প দিনে তার ব্যবসায়ের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রতিদিন তার পার্লারে। ভিড় লেগে থাকে। এখন তিনি কুইন-২' নামে আরেকটি বিউটি পার্লার খোলেন এবং সেখানে পাঁচ জন দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেন।
রাশেদ ও শাহেদ চুক্তিবদ্ধ হয়ে একটি অংশীদারি ব্যবসায় শুরু করেন। রাশেদ ব্যবসায়ে ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে। কিন্তু খুলনায় একটি বেসরকারি এনজিওতে চাকরিরত থাকার কারণে সে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। শাহেদ একাই ব্যবসায় পরিচালনা করে এবং তারা ব্যবসায়ের লাভ সমানভাবে ভাগ করে নেয়। শাহেদ ঢাকার বাংলাবাজার থেকে নগদের পাশাপাশি বাকিতেও পণ্য ক্রয় করে থাকে। শাহেদ কিছু দিনের জন্য বিদেশে গেলে রাশেদ দোকানে বসে। এর মাঝে একজন পাওনাদার ৫০,০০০ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য দোকানে আসে। কিন্তু রাশেদ পাওনাদারের দাবি পরিশোধে অস্বীকৃতি জানায় ।
এবিসি ফ্যাশন চিরন্তন অস্তিত্ববিশিষ্ট একটি গার্মেন্টস শিল্প । দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারছে না। ফলশ্রুতিতে দেশের স্বনামধন্য পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান আনন্দ ফ্যাশন লি. এবিসি ফ্যাশনের ৫০%-এর অধিক শেয়ার ক্রয় করে নেয় এবং প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এবিসি ফ্যাশনসের নীতি নির্ধারণের ক্ষমতা আনন্দ ফ্যাশনসের কাছে চলে আসে।
মি. শহিদুলের রাজশাহীতে পাঁচটি আমবাগান আছে। মৌসুমে আম এলাকার বাজারে বিক্রয় করে তেমন মূল্য পান না। তাই আরও বিশজন আমবাগানের মালিককে সাথে নিয়ে একটি সংগঠন গড়ে তুললেন । এ সংগঠনের মাধ্যমে তারা বাগানের আম একত্রিত করে এবং ট্রাক ভাড়া করে ঢাকার আড়তে বিক্রয়ের জন্য নিজেদের উদ্যোগে নিয়ে আসে। ফলে তারা আমের ভালো দাম পায়। মি. শহিদুল আম সংগ্রহ ও পরিবহন কাজের জন্য সংগঠনে পাঁচ জন কর্মী নিয়োগ দেয় ।
জনাব শফি তার পরিবার নিয়ে শীতকালীন ছুটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বেড়াতে যান। যাত্রার শুরুতে তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে রেলপথে চট্টগ্রাম যান। ঢাকার বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনযাত্রা শুরু করে, পথে কোথাও না থেমে চট্টগ্রাম পৌঁছে। তার পরিবার ভ্রমণটি খুব উপভোগ করে এবং কর্তৃপক্ষের সেবায় তারা সন্তুষ্ট। চট্টগ্রাম থেকে সড়কপথে তারা পাবর্ত্য চট্টগ্রাম যায়। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়-পর্বত, প্রাকৃতিক ঝর্ণা তাদের বিমোহিত করে। জনাব শফি চিন্তা করলেন পাবর্ত এলাকায় পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা, উন্নত যাতায়াত ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে দেশি- বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হবে। পাশাপাশি সরকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারবে।
উচ্চশিক্ষিত মি. শফিক যমুনা নদীর তীরে স্বল্পমূল্যে চল্লিশ একর জমি নিয়ে মনোরম পরিবেশে একটি পিকনিক স্পট প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও খেলার সামগ্রী দিয়ে স্পটটি সুন্দরভাবে সাজান। পরবর্তীতে জন প্রতি ৫০ টাকা প্রবেশ ফি নির্ধারণ করেন। প্রথম দুই বৎসর তার স্পর্টে লোক সমাগম ছিল কম। তিনি আশাবাদী ছিলেন ভবিষ্যতে দর্শনার্থী সমাগম বৃদ্ধি পাবে এবং লাভবান হবেন। তিনি হতোদ্যম না হয়ে টেলিভিশিনের চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করেন। ফলে প্রচুর দর্শনার্থী সমাগম হতে লাগল এবং পিকনিক স্পট থেকে আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে
জনাব কালাম মিয়া সৌদি আরবে দীর্ঘদিন একটি ওয়ার্কশপে কাজ করছিলেন । সেখান থেকে দেশে ফিরে এসে মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে তার অভিজ্ঞতা দিয়ে সৌরচালিত ভিন্ন ধরনের একটি পাওয়ার টিলার আবিষ্কার করেন । তার উদ্ভাবিত যন্ত্রটি গত বছর বিজ্ঞান মেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে। আইনগত ব্যবস্থা না নেয়াতে এ ধরনের আবিষ্কার থেকে তিনি আর্থিক সুবিধা নিতে পারেন নি। কিন্তু পরবর্তীতে একটি প্রতিষ্ঠান যন্ত্রটি নকল করে বাজারজাত করতে থাকে এবং জনগণের নিকট থেকে ব্যাপক সাড়া পায়। পিতার আবিষ্কারের স্বত্ব রক্ষার্থে পুত্র মি. সোহান যথানিয়মে তা নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন।
কণা ও তমা ১০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগে একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজনে ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মুনাকে অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করেন এ শর্তে যে, মুনা ৬ লক্ষ টাকা দিবে তবে ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবে না। ২০১৫ সালে আদালত মুনাকে দেউলিয়া ঘোষণা করে। দুর্ভাগ্যবশত অল্প দিন পরে সড়ক দুর্ঘটনায় কণা মৃত্যুবরণ করেন
জনাব রায়হান তার আরও ৬ বন্ধুকে নিয়ে 'বন্ধন' নামের কৃত্রিম ব্যক্তিসত্তা বিশিষ্ট প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠালগ্নে প্রতিষ্ঠানটি স্মারকলিপি তৈরি করলেও কোম্পানি আইনে বর্ণিত তফসিল-১ কে পরিমেল নিয়মাবলি হিসেবে গ্রহণ করে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি একটি নতুন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য শেয়ার ছাড়ার কথা চিন্তা করছেন যাতে মালিকানা স্বত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।
জনাব হারুন নতুন ধরনের প্রযুক্তি আবিষ্কারের নতুন টর্চলাইট উৎপাদন করেন। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে টর্চলাইট সূর্যালোক ও চন্দ্রালোকের মাধ্যমে চার্জ হয়। তিনি 'Harun Torch' নামে এ টর্চলাইট বাজারজাত করেছেন। তিনি এ নাম ও প্রতীক যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট নিবন্ধন করেন। হারুনের বন্ধু রুবেল তাকে মেধা স্বত্ব সংরক্ষণের জন্য অপর একটি আইনেও রেজিস্ট্রি করতে বলেন ।
ফাহিম একজন পদস্থ সরকারি চাকরিজীবী। দীর্ঘদিন কর্ণফুলী ব্যাংকের সাথে সুনামের সাথে লেনদেন করে আসছে। ব্যাংক তাকে এমন এক ধরনের কার্ড সরবরাহ করে যাতে সে তার জমাকৃত অর্থের অতিরিক্ত ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারে। ১ মার্চ, ২০১৬ তারিখে দোকানে কার্ড ব্যবহার করে পণ্য ক্রয় করতে চাইলে দোকানদার তাকে জানায় পণ্য মূল্য ১ লক্ষ টাকা। তাকে ৫,০০০ টাকা নগদ পরিশোধ করতে হবে ।
জনাব মাহি স্থানীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে ৫০,০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নিজেদের পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন। তার সংগৃহীত উন্নত জাতের তেলাপিয়া মাছের পোনা অল্প কিছু দিনের মধ্যে বিক্রয়যোগ্য হয়ে উঠে । বাজারে ক্রেতারা যাতে নিজের পছন্দমতো মাছ ক্রয় করতে পারে এজন্য জনাব মাহি দীর্ঘ সময় সতেজ রাখার জন্য মাছগুলো সংরক্ষণ করেন । এতে তার মাছের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অর্থ স্বল্পতার কারণে এ বাড়তি চাহিদা মিটানো তার পক্ষে সম্ভবপর হয়ে উঠে না
সামিন, মাসুম, শফিক তিনজন মিলে একটি গার্মেন্টস গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার জাহিদকে তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে মূলধন ব্যতীত প্রতিষ্ঠানের অংশীদার করে নেয়।। সামিন, মাসুম ও জাহিদ ব্যবসায় পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন, কিন্তু শফিক অংশ গ্রহণ করে নি। বছর শেষে শফিক অন্যদের সমান মুনাফা দাবি করে।
ঢাকায় ২৫ জন জুতা প্রস্তুতকারী কারখানার মালিক একত্রিত হয়ে আইনগত সত্তা বিশিষ্ট একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ।প্রতিষ্ঠানটি গত তিন বছর যাবত যথাক্রমে, ৮,০০,০০০ টাকা, ১০,০০,০০০ টাকা ও ১২,০০,০০০ টাকা মুনাফা অর্জন করে। অর্জিত মুনাফা বিধি মোতাবেক সঞ্চিত তহবিলে রেখে অবশিষ্ট টাকা নিজের মধ্যে বণ্টন করে নেয়। তারা নিজেদের আবাসন সমাধানের জন্য বসুন্ধরায় এককালীন ৯,০০,০০০ টাকা প্রদান করে কিস্তিতে একটি প্লট কেনার সিদ্ধান্ত নেয়।
জাহানারা যুব উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ শেষে ২৫,০০০ টাকা ঋণ নিয়ে একটি নার্সারি করেন। এখানে উন্নত মানের ও উচ্চফলনশীল বিভিন্ন ধরনের ফলজ ও বনজ চারাগাছ উৎপাদন করা হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন এসে তার নার্সারি থেকে চারা কিনে নেয়। এতে আর্থিকভাবে তিনি লাভবান হন। ধীরে ধীরে নার্সারির পরিধি বড় হচ্ছে। তার নার্সারিতে কাজ করে প্রায় ৭(সাত) জন বেকার নারী।
মনোয়ারা ঢাকা EPZ-এর একটি কারখানায় কাজ করে। মনোয়ারার গ্রামে ব্যাংক ও পোস্ট অফিস না থাকায় বাড়িতে বেতনের টাকা পাঠানো কষ্ট হয়ে পড়ে। অথচ তার সহকর্মী সুমি মনোয়ারার EPZ-এর পাশের একটি ব্যাংকের অনুমোদিত বুথ থেকে কার্ডের মাধ্যমে মুহূর্তে তার একাউন্ট থেকে বেতনের টাকা তুলতে পারে। সম্প্রতি মনোয়ারার গ্রামটি মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। এতে মনোয়ারা তার সমস্যা সমাধানে আশাবাদী।
জনাব বেলালের দত্তপাড়া বাজারে একটি চালের আড়ত আছে। তিনি ন্যায্যমূল্যে ও সঠিক ওজনে চাল বিক্রয় করে থাকেন। পক্ষান্তরে জনাব শামীম দত্তপাড়া বাজারের আরেক ব্যবসায়ী। তিনি অধিক লাভের আশায় চালের সাথে সাদা পাথরের কণা মিশিয়ে ক্রেতাদের নিকট চাল বিক্রি করেন। কয়েক মাস ব্যবসায়টি ভালো চললেও পরবর্তীতে তার বিক্রয়ের পরিমাণ কমতে থাকে।
দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এমবিএ করে জনাব শামীম স্বল্প বেতনে একটি ফার্মে চাকরি নেন। প্রাপ্ত বেতন দ্বারা কোনো রকম সংসার চলছে বটে কিন্তু তার দ্বারা জ্ঞাতির কোনো উপকার হচ্ছে না ভেবে চাকরি ছেড়ে তিনি একটি পোল্ট্রি ফার্ম স্থাপন করলেন। তিনি ফার্মে উৎপাদিত ডিম ও একমাসের বাচ্চা বিক্রয় করে যথেষ্ট লাভবান হচ্ছেন। চাকরি করে। যে বেতন পেতেন তা থেকে ব্যবসায়ের আয় অনেক বেশি, পাশাপাশি সামাজিক মর্যাদাও কম নয়। তাই তিনি ভাবছেন দেশের সকল কর্মক্ষম যুবদের মধ্যে যদি এ ধরাণার বিকাশ ঘটতো তাহলে হয়তো আমাদের দেশের বেকারত্ব অনেকটা কমে যেত ।
মি. P একটি স্বনামধন্য বেসরকারি কলেজের শিক্ষক। কলেজের নিকটেই কয়েকটি ব্যাংক ও শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বছর তিনি তার সঞ্চিত অর্থ দ্বারা কলেজের সন্নিকটে একটি ভবনের নিচতলা ভাড়া নিয়ে একটি বড় দোকান শুরু করলেন। তার দোকানের ১ম অংশে স্টেশনারি, ২য় অংশে ফটোকপি মেশিন ও ৩য় অংশে মোবাইল ব্যাংকিং-এর ব্যবসায় শুরু করলেন। মি. P তার তিন ভাইকে দোকানের তিনটি অংশের দায়িত্ব প্রদান করলেন। অল্প দিনের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়টি সফলতা অর্জন করে।
২০১০ সালে ১ জানুয়ারি তারিখে বিরেন, বিজয় ও স্বাধীন সমঝোতার ভিত্ততে একটি ব্যবসায় শুরু করলেন। তাদের প্রত্যেকের মূলধন এক লক্ষ টাকা। ২০১১ সালে বিরেনের মৃত্যুর পর তার ১০ বছরের কন্যা মুক্তিকে বিজয় ও স্বাধীনের সম্মতিতে ব্যবসায়ের অংশীদার করেন। ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারিখে ব্যবসায়ের মুনাফা সামান্যই হলো। ২০১৫ সালের ১ জুলাই তারিখে বিজয় দেউলিয়া ঘোষিত হলো। তখন ব্যবসায়ের দায়ের পরিমাণ তিন লক্ষ টাকা ।
মধ্যস্থব্যবসায়ীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে পদ্মাপাড়ের জেলেরা মাছের ন্যায্যমূল্যের জন্য একটি সমবায় | সমিতি গঠন করে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল নিম্নরূপঃ
মুনাফা ২০,০০০ টাকা ২৫,০০০ টাকা ৩০,০০০ টাকা ৩৫,০০০ টাকা তারা বিধিবদ্ধ ন্যূনতম হারে সংরক্ষিত ও উন্নয়ন তহবিল সংরক্ষণ করে। তহবিলের টাকা হতে তারা ২৫,০০০ টাকা মূল্যের একটি নতুন ফ্রিজ ক্রয়ের জন্য চিন্তা করছে।
পূর্বতীমুর সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রটি ওই দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ড্রিম হ্যাভেন কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। সমগ্র মুনাফার ৪৯% মালিক হবে সরকার। চুক্তির শর্তানুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করবে এবং বৈদাশিক বাণিজ্য / সম্প্রসারণের জন্য গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন করবে। পরবর্তীতে চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা সরকারের নিজের হাতে রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এম এ খালেক একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি নতুন একটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করে তা নিবন্ধন করার পর ২০ লক্ষ টাকায় একটি বড় কোম্পনির কাছে বিক্রয় করেন। কোম্পনিটি তাদের হিসাব সংরক্ষণে ঐ সফটওয়্যার ব্যবহার করে থাকে। ১ বছর পর তিনি লক্ষ করলেন তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যারটি অপর দুটি কোম্পানিও ব্যবহার করছে। তিনি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করলেন।
জনাব করিম ডাচ-বাংলা ব্যাংকের একজন সিনিয়র অফিসার। ব্যাংকটি লেজার বুকের পরিবর্তে কম্পিউটারে গ্রাহকদের হিসাবের লেনদেন সংরক্ষণ করে। তথ্য আদান- প্রদানের চিঠির পরিবর্তে মোবাইল ফোন, ই-মেইল ইত্যাদি ব্যবহার করে। গ্রাহকগণ কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংকে না গিয়ে যেকোনো বুথ থেকে দিন রাত ২৪ ঘন্টা টাকা তুলতে পারে ।
আসিফ সাহেব একজন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবসায়ী। তিনি কখনোই পণ্যে ভেজাল মেশান না। কর্মচারী একদিন তার অজান্তেই কিছু পণ্যে ভেজাল মিশালে তিনি তা জানতে পেরে সাথে সাখে তাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করলেন। তিনি ভাবলেন সমাজের মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ভোগ করে জীবন ধারণ করে। এ সকল পণ্যের গুণ ও মান ভালো না হলে জনগণের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। একজন সচেতন – ব্যবসায়ীর দ্বারা তা আদৌ কাম্য হতে পারে না। তাছাড়া জনগণ অসাধু ব্যবসায়ী হিসেবে চিহ্নিত করে বসলে ব্যবসায় টিকবে না।
মাহমুদ কাপড়ের ব্যবসায় করেন। ঢাকার ব্যস্ততম এলাকা গুলিস্তানে তার দোকান। ঈদ সামনে রেখে তিনি তার দোকানের জন্য নরসিংদী থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাপড় ক্রয় করে আনার সময় পথে কতিপয় দুর্বৃত্তরা তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা দিতে অপারগ হলে দুর্বৃত্তরা তার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে তার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
সোহাগ, সাত্তার ও সৌমিত্র তিন বন্ধু। সমঝোতার ভিত্তিতে প্রত্যেক সমান মূলধন বিনিয়োগ করে ঢাকার বাংলাবাজারে একটি আধুনিক প্রিন্টিং প্রেস চালু করেন। ব্যবসায়িক সফলতার কারণে তারা আরেকটি মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু হাতে নগদ টাকা না থাকায় তারা এমন অংশীদার নেয়ার কথা ভাবছে তার দায় যেমনই হোক না কেন পরিচালনায় অংশ নিতে পারবে না।
জামিল একটি তাঁতি সমবায় সমিতির সদস্য। অন্যদের তুলনায় সে বিত্তবান । সমবায়ের ১০ লক্ষ টাকা শেয়ার মূলধনের মধ্যে জামিলের কর্তৃত্ব নিতে । কিন্তু নির্বাচনের সময় সবারই এক ভোট হওয়ায় তার চিন্তা একার মূলধনই ২ লক্ষ টাকা। জামিল চায় মূলধন বাড়িয়ে সমবায়ের কোনো কাজে আসেনি। সমবায়টির বার্ষিক মুনাফা হয়েছিল ২ লক্ষ টাকা। জামিলকে দেয়া হয়েছে ৩২ হাজার টাকা। সে আরও বেশি পাবে ভেবেছিলে । তাই সে ক্ষুব্ধ ।
রকিব উদ্দিন একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। সম্প্রতি সরকার তাকে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদে নিয়োগ প্রদান করেছেন। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা শহরস্থ বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ঢাকা ও গাজীপুরে এর দুটি ওয়ার্কসপ রয়েছে। এটি সারা দেশে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। সম্প্রতি ঢাকা শহরে স্কুলের শিশুদের আনা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি সেবা দিচ্ছে।
মানজার একচন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি নতুন সফটওয়্যার উন্নয়ন করে তা নিবন্ধন করার পর ২০ লক্ষ টাকার 'স্কাই ব্লু' নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের নামের ওপর তিনটি পাখা সম্বলিত সুন্দর একটি চিহ্ন আছে। এক বছর পর তিনি লক্ষ করলেন তার উদ্ভাবিত সফটওয়্যার অন্য একটি কোম্পানি ব্যবহার করছে। তিনি ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করেন।
হাফিজ লেখাপড়া শেষ করে রংপুর সুপার মার্কেটে ‘রকমারি ‘টি’ শার্ট নামে একটি ব্যবসায় শুরু করেন। সে ‘টি' শার্ট বাজারজাতকরণের জন্য ফেসবুক ও বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেয়। বিজ্ঞাপন দেখে ক্রেতারা যেকোনো সময় পছন্দানুসারে 'টি' শার্ট সংগ্রহ করতেপারে। ফলে দেখা যায়, অন্যান্য ব্যবসায়ীদের চেয়ে দোকানে ক্রেতা সমাগম বেশি ঘটে।
ইমতিয়াজ ও রাজিন দু'জন ব্যবসায়ী। ইমতিয়াজ সীমিত মুনাফা ও মানসম্মত সেবা এ দুই নীতির আলোকে ব্যবসায় করেন। তার ব্যবসায়ের মুনাফা কম হলেও তিনি খুব খুশি। অন্যদিকে রাজিন হঠাৎ করে ধনী হওয়ার আশায় ক্রেতাকে মিথ্যা কথা বলে অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের পণ্য সাজিয়ে দেয়। ক্রেতারা তাৎক্ষণিকভাবে তা না বুঝলেওপরবর্তীতে এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করে।
জনাব ইমন মধুপুরের বাসিন্দা। তিনি জীবিকা উপার্জনের লক্ষ্যে বন থেকে কাঠ সংগ্রহ করেন। তা থেকে কাঠ চেরাই করে আসবাবপত্র তৈরি করেন। তিনি ঐ সমস্ত আসবাবপত্র ময়মনসিংহ এলাকার বিভিন্ন দোকানে স্বল্পমূল্যে সরবরাহ করেন। বর্তমানে তার ব্যবসায়টি ভালো চলছে। তার পণ্যের চাহিদা যথেষ্ট থাকায় ব্যবসায় বাড়াতে চান। কিন্তু পুজির কারণে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া মধুপুর থেকে ময়মনসিংহের দূরত্ব কিছুটা দূরে হওয়ায় তিনি আসবাবপত্র সঠিক সময়ে দোকানে পৌঁছানোর ব্যাপারে চিন্তিত। কিন্তু তারপরও তিনি এ ব্যবসায়ের সাফল্যের ব্যাপারে আশাবাদী ।
মিসেস পাখি একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। সেখানকার আমের উৎপাদন সচরাচর বেশি হয় তাই তিনি নতুন ধরনের ব্যবসায় শুরু করলেন; যেখানে তিনি বিভন্ন ধরনের আচার ও আমের দ্বারা তৈরি বিভিন্ন প্রকার মিষ্টি রাখেন। অল্প দিনের মধ্যেই তার ব্যবসায়টি স্থানীয়ভাবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। তাই তিনি দেশব্যাপী তার পণ্যগুলোর প্রচার করতে চান। তিনি বিভিন্ন পাইকারি ব্যবসায়ী ও অন্য প্রতিষ্ঠানের পারস্পরিক সহযোগিতা নেবার কথা ভাবছেন। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রচারের কথাও ভাবছেন। তবে পদ্ধতিগুলোর দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে তিনি চিন্তিত ।
জনাব রানা স্বল্প পুঁজি নিয়ে সিয়ামুনের মতো বিলাসবহুল হোটেল খাওয়া থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে একটি হোটেল দিলেন। সেখানে তিনি ২৫ টাকায় ৬টি আইটেমের সাথে ১ প্লেট ভাত বিক্রি করেন। তিনি তার হোটেলের খাবারের রেসিপির মধ্যে পরিবর্তন এনে নতুন নতুন ভালো স্বাদের খাবার ঐ দামে বিক্রি করেন। এর ফলে তার ব্যবসায়টি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে ।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা যুবক ফাহিম বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এনে দ্রুত সাফল্য লাভের আশায় তিনি একটা ভ্রাম্যমাণ গাছ চিকিৎসার ব্যবসায় শুরু করলেন। তিনি গাছের বিভিন্ন রোগের জন্য ঔষধ, বিভিন্ন রকম সার, গাছ ও মাটির পরিচর্চা কীভাবে করা যায় তার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ ব্যবসায়ের জন্য তিনি বেশ কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করেন। ব্যবসায়টি নিয়ে শুরুতে চিন্তিত থাকলেও বর্তমানে ব্যবসায়টির জনপ্রিয়তা ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। তার ব্যবসায়ে ক্রেতা সৃষ্টির জন্য টেলিভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠানের সাহায্য নিলেন।
সুমন ও কাজল দুই জন ব্যবসায়ী বন্ধু। তারা X লি. ব্যাংকের গ্রাহক। ব্যাংকটির গ্রাহকরা যেকোনো শাখা হতে লেনদেন করতে পারে। সুমন ব্যাংকের এমন একটি কার্ড ব্যবহার করেন যার দ্বারা কেনাকাটা ও ATM বুথ হতে টাকা তোলা যায় নিজের জমানো টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে কাজল একটি কার্ড ব্যবহার করে যার দ্বারা সুমনের ন্যায় সুবিধা পায় এবং জমাতিরিক্ত অর্থ উত্তোলন করতে পারে।
মি. রাজ্জাক ও তার বন্ধু সাজ্জাদ সমঝোতার ভিত্তিতে পাটের তৈরি হস্তশিল্পের পণ্যসামগ্রী কিনে এনে বাণিজ্য মেলায় স্টল দেন। বাণিজ্য মেলায় তাদের পণ্যগুলো ভোক্তাদের কাছে সমাদৃত হওয়ায় মুনাফা ভালো হয়। ক্রেতাসাধারণ মেলা শেষে তাদের ব্যবসায়ের স্থায়ী ঠিকানার সন্ধান চান। এ কারণে তারা স্থায়ীভাবে ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য মূলধনের তেমন সমস্যা না থাকলেও অন্যান্য বিষয় নিয়ে ভাবছেন ।
আর সি. লি. একটি স্বনামধন্য কোম্পানি। জয় ও বিজয় উভয়ে ঐ কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার। জয়ের নিকট ২,০০,০০০ টাকার শেয়ার আছে। তিনি নির্দিষ্ট হারে কোম্পানি হতে লভ্যাংশ পান। অন্যদিকে বিজয়ের নিকট ১,০০,০০০ টাকার শেয়ার আছে। তিনি জয়ের পরে লভ্যাংশ পান এবং লভ্যাংশের হার প্রতি বছর সমান থাকে না। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য একটি সভা আহ্বান করে।
অমরসিংহপুর গ্রামের সাধারণ কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবার জন্য একটি সমিতি গঠন করেন। এ সমিতির শেয়ারের সংখ্যা ২০,০০০। গত বছর সমিতির লাভের পরিমাণ ১,৫০,০০০ টাকা। জনাব রঠিক এ সমিতির একজন সাধারণ সম্পাদক। তার শেয়ারের সংখ্যা ১,০০০ টি বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বোচ্চ লভ্যাংশ বণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়। রফিক সমিতি হতে ৬,৩৭৫ টাকা লভ্যাংশ উত্তোলন করে। সমিতিটির দ্বারা গ্রামবাসীর মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত হতে রক্ষা পেয়েছে
জনাব সামি ৫,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করে তার গ্রামে একটি নতুন ব্যবসায় শুরু করেছেন, যা শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যবসায়ে সাতটি নীতির কথা বলা আছে। প্রথম বছরে তার ৫০,০০০ টাকা মুনাফা হলেও অর্জিত মুনাফা তিনি ভোগ করেননি। তবে সামি তিন বছরের মধ্যেই বিনিয়োগকৃত ৫,০০,০০০ টাকা ফেরত পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি তার গ্রামের ৬-১২ বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ব্যবসায় সম্প্রসারণের কথা চিন্তা করছেন।
বাংলাদেশের পর্যটন শহর কক্সবাজার। এখানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বেশকিছু হোটেল-মোটেল গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাব রয়েছে। প্রতিবছর প্রচুর দেশি-বিদেশি পর্যটক আসে। কিন্তু কক্সবাজার যাওয়ার জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ সীমিত। আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য পর্যটকরা রেলে ভ্রমণ করতে চায়। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ১৬০ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে দোহাজারী পর্যন্ত মাত্র ৫০ কিলোমিটার রেললাইন আছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য যোগাযোগ সুবিধাসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে পারলে এ শহর আরও সমৃদ্ধি হবে।
সাদিয়া, নাসরিন, সামারা ও নামিরাহ ৪ বন্ধু মিলে একটি কফিশপ চালাবার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। নামিরাহ কফিশপে কোনো মূলধন বিনিয়োগ করে নি। তবে তার প্রাক্তন কফিশপ 'নামিরাইস'-এর নাম সে এ ব্যবসায়ে ব্যবহার করতে দিয়েছে। কফিশপটি ভালো চলছে এবং অর্জিত মুনাফা চারজনে ভাগ করে নেয় । পরে নাসরিন স্থায়ীভাবে আমেরিকায় চলে যাওয়াতে তার ১৬ বছরের ছেলে নাহলকে ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত করতে বাকি ৩ জন সম্মত হয়। এক বছর প্রতিষ্ঠানের ৩০,০০০ টাকা লোকসান হয়। কিন্তু নাহল কোনো দায় নেয় না।
লি.-এর কিছু শেয়ার ক্রয় করেন এবং নিজেকে ব্যাংকটির মালিক হিসেবে পরিচয় দেন। ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় | তিনি অংশগ্রহণ করেন এবং পরিচালক নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তবে তিনি সবার শেষে লভ্যাংশ পান। তার বন্ধু জনাব মুসা একই ব্যাংকের শেয়ার ক্রয় করলেও নিজেকে মালিক হিসেবে পরিচয় দেন না। এমনকি তিনি ভোটাধিকারও প্রয়োগ করতে পারেন না। তবে তিনি সবার আগে লভ্যাংশ পান
নাছিমা বেগম আঞ্চলিক কৃষি অফিস থেকে মৌ চাষের প্রশিক্ষণ নেন। তিনি ৫০,০০০ টাকা মূলধন সরবরাহ করে আধুনিক পদ্ধতিতে মৌ চাষ করে উৎপাদিত মধু ‘শেফা মধু’ নামে বাজারজাত করেন। গুণগত মান উন্নত হওয়ায় অল্পদিনেই তার ‘শেফা মধু’ জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং তিনি প্রচুর মুনাফা অর্জন করেন। তা দেখে প্রতিবেশী রহিমা হুবহু নকল করে । একই নামে মধু বাজারজাত করেন। ফলে নাছিমা বেগমের ‘শেফা মধু’ বিক্রি কমে যায় এবং সে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নাছিমা বেগম আইনের আশ্রয় নিয়েও কোনো প্রতিকার পেল না।
জনাব জাহেদ একটি রেস্টুরেন্ট দেওয়ার কথা চিন্তা করছেন। কিন্তু বর্তমান বাজারে ব্যবসায়টি চ্যালেঞ্জিং হওয়ায় তিনি সিদ্ধান্ত নিতে ইতস্তত করছিলেন। তার কয়েকজন বন্ধু তাকে সহায়তার আশ্বাস দিলে তিনি রেস্টুরেন্টটির কাজ শুরু করেন। বছরখানেক পর রেস্টুরেন্টটি সম্প্রসারণের জন্য নগদ অর্থের প্রয়োজন হলে তার বন্ধু মালিক MIDAS থেকে চড়া সুদে ৮ মাসের জন্য ৫০,০০০ টাকা ঋণের ব্যবস্থা করে দেন। এতে তার সাময়িক অর্থ সংকট দূর হয়। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সাফল্যের সাথে টিকে থাকার জন্য এখন তিনি সহজ শর্তে বিকল্প অর্থসংস্থানের উপায় খুঁজছেন
সীমা একজন গার্মেন্টস কর্মী। সে মজুরির কিছু অংশ নিজের খরচের জন্য রেখে বাকি অংশ গ্রামে বাবা-মার কাছে পাঠিয়ে দেয়। আগে গ্রামে টাকা পাঠাতে সীমার অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হতো। বর্তমানে তার গ্রামে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হওয়ায় সে এখন দ্রুত ও নিরাপদে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে পারে। কিন্তু সীমার বাবা টাকা প্রাপ্তির ব্যাপারে সন্দিহান ও শঙ্কিত ।
মি. তাইয়ান রাজশাহীর মাছ ব্যবসায়ী। দ্রুত বড় লোক হওয়ার বাসনা তাকে সব সময় তাড়িত করতো। মাছ চাষিদের টাকা পরিশোধ না করা, তার কাছে মাছ বিক্রি করতে বাধ্য করা, ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করাসহ নানা অন্যায় কাজে সে জড়িত থাকতো। সম্প্রতি সে বিদেশে মাছ রপ্তানির লাইসেন্স সংগ্রহ করে। কয়েকটি চালানে সে সঠিকভাবে মাছ পাঠালেও মাছের ওজন বাড়ানোর জন্য সে মাছের মধ্যে এক ধরনের ভারি পানি ঢুকিয়ে দেয়। টেস্টে বিষয়টি ধরা পড়ার পর বিদেশে | বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সরকার | ইতোমধ্যে তার রপ্তানি লাইসেন্স বাতিল করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ব্যবসায়ীরা বৈদেশিক বাজার ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারি সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সংগতি রেখে বিভিন্ন পদক্ষেপও নিচ্ছেন ।
উদ্যমী যুবক আহসান ২৫,০০০ টাকা ধার করে মোট ৫০,০০০ টাকার পণ্যসামগ্রী কিনে মুদি দোকান সাজিয়ে ব্যবসায় শুরু করল। স্বল্প পুজির কারণে তার দোকানে পর্যাপ্ত পণ্যসামগ্রী নেই। ফলে সে প্রায়ই ক্রেতার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়। এতে সে ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় কয়েকজন নিয়মিত ক্রেতার পরামর্শে সে যেসব পণ্য সরবরাহ করতে পারে না তার একটি তালিকা প্রস্তুত করে পরবর্তীতে ঐসব পণ্য দোকানে তোলেন। কিছুদিনের মধ্যেই তার বিক্রয় বৃদ্ধি পায় এবং ধীরে ধীরে সে ব্যবসায় উন্নতি লাভ করে ।
কবির তার বাসার পাশে গোমতি ব্যাংক লি.-এ একটি বিশেষায়িত হিসাব খোলে। শুধু মোবাইল সেটের মাধ্যমে সে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা, তথ্য সংগ্রহ, তথ্য প্রদান ও লেনদেন সম্পন্ন করে থাকে। সে হিসাব খোলার সময় ব্যাংক প্রদত্ত একটি ফরম পূরণ করে এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি প্রদান করে। যেকোনো সময় সে তার ব্যালান্স জানতে পারে, অর্থ উত্তোলন করতে পারে এবং স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়
মি. A একজন আমদানিকারক। তিনি ভারত থেকে শাড়ি কিনে বাংলাদেশের বিভিন্ন মার্কেটে পাইকারি বিক্রি করেন। ব্যবসায়টি লাভজনক হওয়ায় তিনি এর সম্প্রসারণের বিষয়ে ভাবছেন। এতে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন । ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে অর্থসংস্থান সম্ভব হবে। আবার ধনাঢ্য বন্ধু কে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবসায়ের মালিকানায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ও বিবেচনা করছেন।
জনাব রাজীব নরসিংদীর মাধবদীতে একটি জামদানি শাড়ির কারখানা স্থাপন করেন। মাধবদীতে দক্ষ পোশাক শ্রমিক ও স্থানীয়ভাবে বাজারজাতকরণের সুবিধা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ির দেশে ও বিদেশে যথেষ্ট চাহিদা ও সুনাম রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রথমদিকে মূলধন সংকটে পড়ে এবং স্থানীয় একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করে সমস্যার সমাধান করে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে ব্যবসায় পরিচালনা করছে।
ABC লি. একটি বৃহদায়তন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান । প্রতিষ্ঠানটি সু নাম অর্জন ও মুনাফা বৃদ্ধিকল্পে কিছু সমাজসেবামূলক প্রকল্প হাতে নিচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি চালু করতে যাচ্ছে। এতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে এ কাজের সমালোচনা শুরু হয়। কিন্তু প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতি নিয়ে ভাবছে না বরং এ কাজের ফলে আরও মুনাফা বৃদ্ধির প্রত্যাশ্যা করছে।
শাহেদ ‘Y’কোম্পানির কাছ থেকে ৫ বছর মেয়াদি প্রতিটি ২০০ টাকা মূল্যের ৫,০০০ অগ্রাধিকার শেয়ার ক্রয় করে। মেয়াদ শেষে কোম্পানি ১০% অধিহারে তাকে মূল্য পরিশোধ করবে অপরদিকে শাহেদের বন্ধু অন্য একটি কোম্পানি থেকে একই মেয়াদে সমপরিমাণ শেয়ার ক্রয় করে। শর্তানুযায়ী মেয়াদ শেষে অগ্রাধিকার শেয়ার সাধারণ শেয়ারে পরিণত হবে।
মি. হাবিব একজন ইঞ্জিনিয়ার। তিনি একটি নতুন ব্যবসায়ের মডেল সরকারের কাছে উপস্থাপন করেন। এতে স্বল্প ব্যয়ে ও সহজ উপায়ে ইন্টারনেট সুবিধা প্রদানের নিমিত্তে সরকারি মালিকানায় ও নিয়ন্ত্রণে একটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাব থাকে। কোম্পানির স্বাধীন আইনগত মর্যাদা ও চিরন্তন অস্তিত্ব থাকবে। জনকল্যাণ ও একচেটিয়া ব্যবসায় রোধ করাই ঐ কোম্পানির মূল লক্ষ্য হবে ।
কানাডাপ্রবাসী ফারজানা বাংলাদেশে এসে কেনাকাটায় বেশ সাবধানতা অবলম্বন করেন। তিনি শপিংমলে গিয়ে পণ্য কেনার সময় দেখেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে কি না। বেবি ফুড, প্রসাধনী, ইলেকট্রনিকের আইটেমসহ সকল ক্ষেত্রে তিনি দেখেশুনে কেনার চেষ্টা করেন। বড় কোম্পানির প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ড দেখে তিনি পণ্য ক্রয়ে আগ্রহী ।
মি. রতন তার ৬০ জন বন্ধু নিয়ে আইনসম্মত ও চিরন্তন অস্তিত্বসম্পন্ন একটি ব্যবসায় গঠন করেন। তারা ব্যবসায়ের নিবন্ধন করে এবং কার্যারম্ভের ছাড়পত্র পেয়েই কাজ শুরু করে। অন্যদিকে মি. মানিক তার কলোনির বিশজন বাসিন্দার পারস্পরিক আর্থিক কল্যাণে একটি নিবন্ধিত সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। সংঘটি বিভিন্ন প্রকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী উৎপাদকের নিকট হতে সংগ্রহ করে সুলভে সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করে।
রবি খুলনা শহরে একটি বিস্কুট উৎপাদনের কারখানা দিয়ে বিস্কুট উৎপাদন করে বাজারজাত করল। বাজারজাত করার ৩/৪ দিনের মধ্যে ভোক্তারা বিস্কুট ফেরত দিতে শুরু করল। ভোক্তাদের অভিযোগ , বিস্কুট প্যাকেটের মধ্যে নরম হয়ে খাদ্য উপযোগিতা হারিয়ে ফেলেছে। এতে রবি ব্যবসায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রবির বন্ধু শফি শিশুখাদ্য উৎপাদনে আত্মনিয়োগ করল। প্রচুর শিশুখাদ্য উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ল। শিশুদের পিতামাতা নতুন শিশুখাদ্য সম্বন্ধে কিছু না জানায় তারা এ খাদ্য ক্রয় করল না। ফলে শফি তার ব্যবসায়ে লোকসান করল।
নকুল যশোর পৌরসভা থেকে একটি ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করে যশোর সদর হাসপাতালের সামনে অল্প মূলধন নিয়ে স্বল্প পরিসরে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। এক বছরের মধ্যে তার ব্যবসায়ে লোকসান হওয়াতে সে এ ব্যবসায় বন্ধ করে দেয়। বেঁচে থাকার জন্য সে প্লাস্টিক দ্রব্য মানুষের বাসাবাড়িতে নিয়ে বিক্রয় করে। মানুষের বাসায় গিয়ে বিক্রয় তার খুব ভালো লাগে ।
রানা তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে একটি অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করে। সমান মূলধন দিয়েও ২ বছর কোনো মুনাফা না পাওয়ায় রানা আদালতে মামলা করে। কিন্তু আদালত তার মামলা খারিজ করে দেয়। অপরদিকে তার বড় ভাই সাবু মূলধন বিনিয়োগ না করে নিজ দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও শারীরিক শ্রম ব্যয় করে অংশীদারি ব্যবসায়ের সদস্য হয়েছে। সে ব্যবসায় থেকে অনেক মুনাফা পায় ।
শফি তার শহর এলাকায় একটি সমবায় সমিতি গঠন করে সদস্যদের ন্যায্যমূল্যে পণ্য সরবরাহের ব্যবস্থা নিয়েছে। সে কিছু সদস্যকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন উৎস থেকে পণ্য সংগ্রহ করে নিজেদের মধ্যে বণ্টন করে। শফি কামার, কুমার, জেলে, | শ্রমিক ও কৃষকদের নিয়ে আরও একটি সমবায় পরিচালনা করছে। এসব পেশার লোকদের জন্য শফি একটি তহবিল গঠন করে। এসব লোক যেন আয়ের ব্যবস্থা করতে পারে তার জন্য শফি সহজ শর্তে অর্থ সরবরাহ করে।
জনাব শামীম ও তার তিন বন্ধু মিলে কুড়িগ্রামে একটি ব্যবসায় স্থাপন করেন। এলাকার বেশির ভাগ লোকই দারিদ্র্যপীড়িত। এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো কোনো বিশেষ সামাজিক, নৈতিক ও পরিবেশগত উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা । চার বন্ধুর অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সাফল্য লাভ করে প্রচুর মুনাফা অর্জন করছে। ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফা থেকে সদস্যদের বিনিয়োগকৃত মূলধন ফেরত দেওয়া এবং অবশিষ্ট মুনাফা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ব্যয় করা হয় । ফলে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আনন্দমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
টাঙ্গাইলের মিসেস তাসলিমা একজন উচ্চশিক্ষিত মহিলা হয়েও চাকরির পেছনে না ঘুরে তার বৃদ্ধ পিতার দীর্ঘদিনের সফল খ্যাতিসম্পন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান টাঙ্গাইল শাড়ি বিতান’ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পূর্বে উক্ত প্রতিষ্ঠানে পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও ভোক্তার রুচিমাফিক আধুনিক মানের পণ্য সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়। এ সমস্যা থেকে বের হয়ে আসার জন্য তিনি কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে আধুনিকীকরণের জন্য কর্মীদের পরামর্শ দেন।
রায়হান, মাহমুদ ও রাসেল পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে ৫ বছর ধরে একটি পেট্রোল পাম্পের ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছেন । রাসেল তাদের সাথে ব্যবসায়ে যুক্ত হলেও তিনি কোনো মূলধন বিনিয়োগ করেন নি এবং পরিচালনায়ও অংশগ্রহণ করেন না। শুধু তার সুনাম ব্যবহার করেন। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির নিবন্ধন করা হয়। হঠাৎ করে বিশ্ববাজারে পেট্রোলের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সংকটে পড়ে এবং অনেক পাওনাদার সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ের সমস্ত সম্পদ হিসাব করে দেখা যায়, শুধু মি. রাসেল প্রতিষ্ঠানের এ দায় পরিশোধ করতে সক্ষম ।
মিসেস লুনা তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১,০০,০০০ টাকা নিয়ে পাঁচজন কর্মীসহ তার নিজের এলাকায় একটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় শুরু করেন। মানসম্মত সেবা প্রদান করায় তার ব্যবসায় ব্যাপক সাফল্য আসে। ভোক্তার চাহিদা বৃদ্ধির কারণে তিনি ব্যবসায়টিকে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। যার কারণে বন্ধু মুহিত থেকে ৫০,০০০ টাকা ধার নেন। কিন্তু মিসেস লুনা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার ব্যবসায়টি বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এমতাবস্থায় বন্ধু মুহিত তার প্রদত্ত অর্থের জন্য লুনাকে বারবার বলা সত্ত্বেও লুনা দায় পরিশোধে অপারগতা প্রকাশ করে। মুহিত পাওনা আদায়ের জন্য আদালতেও মামলা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
সাহেবরামপুর গ্রামের হোসেন মিয়া ১২০ জন সদস্য নিয়ে ‘স্বাধীনতা' নামে একটি সমবায় সংগঠন গড়ে তোলেন, যার প্রধান উদ্দেশ্য সদস্যদের নিজেদের আর্থিক কল্যাণ সাধন । তারা মূলত ক্ষুদ্র উৎপাদকদের কাছে থেকে পণ্য সংগ্রহ করে তা নিজেদের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে বিক্রয় করেন। প্রতিষ্ঠানটি গ্রামের অন্য লোকদের কাছেও স্বল্প লাভে পণ্য বিক্রয় করে। ২০১৪ সালে ‘স্বাধীনতা’ সমবায় ১২,০০,০০০ টাকা মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়, যা সমবায় বিধি অনুযায়ী সদস্যদের মধ্যে বণ্টনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় ।
জনাব সেলিম জেলা মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে একটি পোলট্রি ও মৎস্য খামার প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া রেডিও, টেলিভিশন ও এর প্রচারণা, তথ্য সরবরাহ, বিনিয়োগ সুযোগ, প্রকল্প প্রণয়নের সরকারি সহায়তা এসব জেনে তিনি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বর্তমানে খামারটির ধারাবাহিক সাফল্যের কারণে অবকাঠামোগত উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। এ কারণে জনাব সেলিম ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার শরণাপন্ন হয়ে 'পদ্মা বাণিজ্যিক ব্যাংক'-এর কাছে ঋণের জন্য আবেদন করলেন।
জনাব তুষার ও তার ৬ বন্ধু মিলে আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে নিবন্ধনের পরই 'জয়া' নামে একটি পোশাক শিল্পের ব্যবসায় শুরু করেন। বাজারে পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যবসায়টি দেশীয় বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তার পণ্যের প্রসার ঘটান। ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি দেশের সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবে পুরস্কার লাভ করেন। প্রয়োজন দেখা দেয় প্রতিষ্ঠানটির সম্প্রসারণ ও প্রচুর অর্থের। যার কারণে প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ দেশীয় বাজারে শেয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এজন্য প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন।
নলসিটির সৌরব মিয়া একজন মোটর মেকানিক ছিলেন । দীর্ঘ বছর এ কাজ করতে গিয়ে তিনি গাড়ির যন্ত্রপাতি সম্পর্কে অনেক দক্ষতা ও জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি দেশীয় পদ্ধতিতে গাড়ির ব্রেকসু তৈরির সিদ্ধান্ত নিলেন। এসব যন্ত্রপাতি বিদেশ থেকে আনতে গিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়। তিনি প্রাথমিক অবস্থায় ব্যাপক অর্থসংকট ও বাধার সম্মুখীন হলেও এক সময় তার জীবনে সাফল্য বয়ে আসে। তার উদ্ভাবিত নতুন ও স্বতন্ত্র এ মেশিনের জন্য সরকার থেকে পুরস্কার লাভ করেন 'এবং 'শাপলা' ব্রেক ট্রেডিং' নামের অনুমোদন নিয়ে সিলমোহরকরণ করেন। তার এ সাফল্য দেখে নবাবপুরের সিরাজ মিয়া শাপলা ব্রেক ট্রেডিং-এর ফর্মুলা ব্যবহার করে বাজারে পণ্য ছাড়ে, যা সৌরব মিয়ার ব্যবসায়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।
মি. রিয়াজ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ‘সূচনা অয়েল কোম্পানি' নামে একটি কারখানা স্থাপন করেন। তিনি ব্যবসায়ের পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িত। তার কারখানার বর্জ্য তিনি সরাসরি নদীতে না ফেলে বিশুদ্ধকরণের মাধ্যমে এর ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি নদীর তীরে অবস্থিত কর্ণফুলী ব্রিকস নামে আর একটি ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া পুরো এলাকাকে দূষিত করছে। এলাকাবাসী বিষয়টি জেলা বণিক সমিতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেও লাভবান হয়নি। ফলে এলাকার শিশু-বৃদ্ধসহ সকলেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে
রাজশাহীর জনাব সোহেল সম্প্রতি ব্যবস্থাপনায় এমবিএ সম্পন্ন করেছেন। তিনি বেকার বসে না থেকে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে কিছু টাকা সংগ্রহ করে আমের ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি আমের মৌসুমে স্থানীয় আম চাষিদের কাছ থেকে মানসম্পন্ন বিভিন্ন জাতের আম ক্রয় করে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে সরবরাহ করেন। এতে মৌসুম শেষে তার যথেষ্ট পরিমাণ মুনাফা হয়। সে ধারের অর্থ পরিশোধ করে অবশিষ্ট টাকা দিয়ে কয়েকটি আম বাগান লিজ নেয়। বর্তমানে তিনি আর চাকরির কথা না ভেবে নিজের ব্যবসায়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ভাবছেন ।
জনাব রফিক লেখাপড়া শেষ করে দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি সম্বন্ধে চিন্তা-ভাবনা করে সাভারে একটি গার্মেন্টস কারখানা স্থাপন করেন। স্বল্প মজুরিতে দক্ষ-অদক্ষ শিক্ষিত শ্রমিকের প্রাপ্যতা, শ্রমিকদের কর্মদক্ষতার কারণে কয়েক বছরের মধ্যে তিনি সফল ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন। তিনি তার কারখানায় উন্নত শর্ট-সার্কিট প্রতিরোধ ব্যবস্থা, শ্রমিকদের জন্য চাইল্ড ডে-কেয়ার সেন্টার, জরুরি ক্ষেত্রে সহজ নির্গমন পথ, নিজস্ব উন্নত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও শ্রমিকদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন । এতে শ্রমিকদের দক্ষতা ও কাজের মান বৃদ্ধি পায়। একদিন জনাব রফিক দেখেন তার পার্শ্ববর্তী একটি কারখানায় শর্ট-সার্কিট থেকে আগুন ধরে যায় এবং অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি আসতে দেরি হওয়ায়ও পর্যাপ্ত পানির অভাবে আগুন নেভাতে দেরি হয়। ফলে বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অনেক শ্রমিক হতাহত হয়। এতে তিনি খুবই মর্মাহত হন।
জনাব আসিক তার নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত সুতা উৎপাদন করে বিভিন্ন বৃহদায়তন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করে থাকেন। উন্নত মানসম্পন্ন হওয়ায় আসিফের উৎপাদিত সুতা বিভিন্ন পোশাক শিল্প-কারখানায় ব্যাপকভাবে সমাদৃত। নিজস্ব তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উৎপাদন কার্য পরিচালনার কারণে ধীরে ধীরে তিনি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে তার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা আছে।
জনাব করিম ও তার দুই বন্ধু মিলে সমঝোতার ভিত্তিতে ও মুনাফা ভাগাভাগির উদ্দেশ্যে 'সমতা প্রিন্টিং প্রেস' নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সর্বসম্মতিক্রমে মি. করিম পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন এবং বার্ষিক ১.০০ লক্ষ টাকা বেতন গ্রহণ করেন কিন্তু কোনো মূলধন সরবরাহ করেন না। কয়েক বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি আশানুরূপ মুনাফা অর্জন করায় সফলতার সাথে চলতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করিম অসুস্থ হয়ে পড়লে সে তার ব্যবসায় চালিয়ে যেতে পারবে না বলে জানান ।
জনাব রশিদ ও তার ছয় বন্ধু একত্র হয়ে ৫০.০০ কোটি | টাকা অনুমোদিত মূলধন নিয়ে ‘রয়েল ট্রেডার্স' নামে একটি ব্যবসায় গঠন করেন। জনাব রশিদ ও তার এক বন্ধু পরিচালক নিযুক্ত হন। কয়েক বছর পর তারা ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের উদ্যাগ নিয়েও অর্থসংস্থানের সীমিত সুযোগের কারণে ব্যর্থ হয়ে ব্যবসায়ের ধরন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য বার্ষিক সাধারণ সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকায় উন্নীত করেন এবং আরেকজন পরিচালক নিযুক্ত করেন। অতঃপর শেয়ার ও ঋণপত্র ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেন । ফলে ব্যবসায়ের আওতা বৃদ্ধি পায় ।
পদ্মা নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামের ৫০ জন প্রান্তিক কৃষক নিজেদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য আইনগত সত্তা বিশিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অল্পসময়ে অনেক পরিমাণে মুনাফা ও পুঁজি বাড়াতে সমর্থ হয়। বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তারা সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ দিয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় ও উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের বীজ ক্রয় ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে একমত হতে পারছে না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
‘ক’ একটি সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্র। যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দুর্বল অর্থনীতির এদেশে পর্যাপ্ত মূলধন ও অবকাঠামোগত সুবিধার অভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠান তেমন গড়ে ওঠেনি। এজন্য দেশটির সরকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্তানুযায়ী ঐ প্রতিষ্ঠানগুলো বড় বড় ব্রিজ, উড়াল সেতু ও মেট্রোরেল ইত্যাদি নির্মাণ করবে এবং নির্দিষ্ট হারে টোল আদায়ের মাধ্যমে বিনিয়োজিত অর্থ ফিরিয়ে আনবে এবং অর্জিত মুনাফা ঐসব প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সরকারও পাবে। সম্প্রতি সরকার দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মালিকানার অধীনে একটি সমরাস্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জনাব জসিম একটি কারখানার মালিক। পদ্মা নদীর অদূরে তার কারখানা অবস্থিত। কখন কী ঘটে যায়, এ ভেবে তিনি একটি বিমা কোম্পানির পলিসি গ্রহণ করেন। বিমার শর্তানুযায়ী যদি তার মৃত্যু ঘটে তার পরিবার ১০.০০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। জনাব জসিম নিজের বিষয়ে সচেতন হলেও তার কারখানায় তিনি বর্জ্য শোধন যন্ত্রপাতি বসান নি। ফলে অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলছেন, যা প্রাণিকুল ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ। এটি তিনি বুঝতে চাচ্ছেন না।
বিস্তীর্ণ এলাকায় গো-চারণভূমি থাকায় পাবনা জেলার | গ্রামাঞ্চলের অনেক বাড়িতে ছোট ছোট দুগ্ধ খামার গড়ে উঠেছে। জনাব তাপস ঘোষ দরিদ্র অথচ সৎ দুধ বিক্রেতা। এ কারণে সবাই তাকে সম্মান করে। তিনি পাবনার গ্রামাঞ্চল থেকে গরুর খাঁটি তরল দুধ সংগ্রহ করে পাবনা শহরের বাড়ি বাড়ি ন্যায্যমূল্যে শিশুখাদ্য হিসেবে সরবরাহ করেন। দুধের চাহিদা বাড়লেও তিনি দুধে ভেজাল মেশান না। তিনি ভাবেন, ভেজালমিশ্রিত দুধ পান করলে শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগবে ।
ফজল মিয়া একজন সবজি বিক্রেতা। তিনি প্রতিদিন খুলনার সোনাডাঙ্গা পাইকারি সবজি বাজার থেকে সবজি কিনে এনে খুলনার নিরালা বাজারে খুচরা বিক্রয় করেন। দৈনিক বেচা-কেনা যা হয় এতে তার ভালো লাভ থাকে। মাঝে মধ্যে অবিক্রীত সবজি পচে গিয়ে নষ্ট হওয়ার কারণে তাকে কোনো কোনো সময় কিছুটা লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়। লোকসানের ঝুঁকি সামলাতে তিনি সবজি সংরক্ষণের উপায় নিয়ে ভাবছেন এবং পাশাপাশি আরও বড় পরিসরে ব্যবসায় করার কথা চিন্তা করছেন। কিন্তু অর্থ এক্ষেত্রে তার জন্য বড় বাধা ।
নজরুল ও কামাল দুই বন্ধু আজম খান কমার্স কলেজ, খুলনা থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ব্যবসায় করবে বলে সিদ্ধান্ত নিলেন। নজরুল শহরের নদীর তীরে চমৎকার ভৌগোলিক অবস্থানে একটি দোকান দিলেন এবং দোকানের প্রয়োজনীয় মালামাল শহর থেকে কিনে নৌপথে নিয়ে আসেন। অন্যদিকে কামাল শহরের মধ্যে একই ধরনের একটি দোকান দেন এবং শহরে থেকে পণ্য কিনে ট্রাকে করে নিয়ে আসেন
আফছানা রহমান নিপা চট্টগ্রামের লালখান বাজারে ‘আফছানাস্ কালেকশন' নামে জানুয়ারি-২০১১-এ একটি বুটিক শপ খোলেন । গুণগতমান ও আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে দিন দিন তার পণ্যের চাহিদা বাড়তে থাকে। তিনি ৫ জন অতিরিক্ত লোক নিয়ে ব্যবসায়টি পরিচালনা করছেন। পণ্যের বর্ধিত চাহিদার কারণে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ, খুলশী ও নিউমার্কেট এলাকাতে ৩টি শাখা খোলার প্রয়োজন মনে করলেও বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে খুলতে পারেন নি। অতঃপর জানুয়ারি, ২০১২-তে তিনি তারই দুই বন্ধু টিপু ও লিজাকে পরস্পর আস্থা ও বিশ্বাসের মাধ্যমে ব্যবসায় এনে আফছানাস কালেকশন নামেই ব্যবসায়টি পরিচালনা করছেন এবং দুই মাসের মধ্যে ৩টি নতুন শাখা খুলে ব্যবসায়টি চালিয়ে যাচ্ছেন। _আফছানাস কালেকশনের ৩ বছরের ব্যবসায়িক চিত্র নিম্নরূপ:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮ শিক্ষাবর্ষের মার্কেটিং বিভাগের ৩০ জন বন্ধু একত্র হয়ে অনিমা নকশিকাঁথা লি. নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানের বিবরণপত্রসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে নিবন্ধন পাওয়ার সাথে সাথেই কোম্পানিটি | উৎপাদনে যায় এবং উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি করে। ব্যাপক সুনামের সাথে তারা তাদের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করছিলেন। । প্রচুর চাহিদা সৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও তাদের কিছু সীমাবদ্ধতার কারণে চাহিদামতো পণ্য রপ্তানি করতে পারছিলেন না। এ জন্য তারা ১ | বর্তমানে অধিক মূলধন সংগ্রহ, শেয়ার হস্তান্তর সুবিধা সম্বলিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিলেন।
নানার সাথে নারায়ণগঞ্জ বেড়াতে গিয়ে রাফী আদমজী জুট । মিলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় দেখতে পেল । রাফীর নানা বললেন, এ মিলটির এক সময় স্বর্ণযুগ ছিল। সরকারি নিয়ন্ত্রণে ও পরিচালনায় জনকল্যাণ ও বেকার সমস্যার সমাধানই ছিল মূল লক্ষ্য। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বে যারা ছিলেন তারা সুষ্ঠু পরিকল্পনা মোতাবেক প্রতিষ্ঠান চালাতে ব্যর্থ হন। ফলে বাংলাদেশের শিল্প জগতের পথিকৃৎ এ প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে মৃত।।
মি. করিম দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে এমন এক মোটরগাড়ি আবিষ্কার করেন যা তেলের পরিবর্তে পানির সাহায্যে চলে। তিনি তার এ আবিষ্কার বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এর ওপর একচ্ছত্র অধিকার লাভের জন্য সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পাদন করেন। উক্ত চুক্তির ফলে তার আবিষ্কৃত মোটরগাড়ি অন্য কেউ উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ করতে পারবে না বিধায় তিনি ব্যাপক সফলতা লাভের আশা করছেন
জনাব জাহাঙ্গীর খান ১০০% রপ্তানিমুখী একটি পোশাক শিল্পের মালিক । তিনি এ সংক্রান্ত একটি বণিক সমিতির সদস্য। এ সমিতি থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ এবং পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা পেয়ে থাকেন। সম্প্রতি একজন আমদানিকারকের সাথে সৃষ্ট বিরোধ সমিতির সহায়তা নিরসন হয়। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রেও কোটা বৃদ্ধি এবং শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা | দেওয়ায় ঐ দেশে রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। এজন্য তিনি । সমিতির সহায়তা প্রত্যাশা করছেন
আরিফ একজন প্রতিষ্ঠিত উদ্যোক্তা। কোনো পণ্যের চাহিদা বর্তমান ও ভবিষ্যতে কেমন হবে, ভোক্তাদের আচরণ কী হবে ইত্যাদি সম্পর্কে আগেই বুঝতে পারার গুণ তাকে সফল উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করেছে। ইমান আলী একজন ছোট ব্যবসায়ী। তারও ইচ্ছা আরিফের মতো সফল উদ্যোক্তা হওয়া । অনেকে ইমান আলীকে সৎ, সৃজনশীল ও চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার মতো সাহসী বলে মতামত দিয়েছেন।
জনাব ফারহান সাহেব রূপসা নদীর তীরে একটি সিমেন্ট | ফ্যাক্টরি স্থাপন করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের শর্ত অনুযায়ী বর্জ্য শোধনাগার না করে ফ্যাক্টরির সমস্ত বর্জ্য পার্শ্ববর্তী নদী ও ডোবায় নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। এতে তার প্রচুর লাভ হতে লাগল। কিন্তু ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের অনেকেই মাঝে মাঝে অসুস্থ থাকত। ফারহান সাহেব পরিবারসহ ফ্যাক্টরির পাশেই বসবাস করতেন। একদিন তার সন্তানের শ্বাসকষ্ট হলে তিনি অনেক টাকা ব্যয়ে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তী বছরে তিনি দেখলেন যে তার লাভের পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এলএলবি পাস করার পর জনাব আকিব চৌধুরী কারও অধীনে চাকরি না করে চৌধুরী লিগ্যাল এইড নামে একটি ফার্ম গঠন করে। প্রতিষ্ঠানটি নতুন হওয়ায় গ্রাহক সংখ্যার পরিমাণ খুবই কম। অল্প দিনেই বিভিন্ন মামলায় গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হলেও স্থানীয় অনেকেই তা অবগত নন। এর ফলে তিনি ব্যবসায়ের কার্যক্রম চালাতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
সন্তোষ দত্ত টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী ‘দত্ত শাড়ি ঘর’ এর প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিষ্ঠানটির শাড়ির মান যথেষ্ট ভালো এবং দামও তুলনামূলক কম। দত্ত শাড়ি ঘরের তাঁতের শাড়ির সুনাম ও চাহিদা রাজধানী শহরেও ছড়িয়ে পড়ছে। সন্তোষ দত্তের একমাত্র ছেলে সমীরণ দত্ত বিদেশ থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে চাকরি না খুঁজে ঢাকার পল্লবীতে গড়ে তোলেন ‘টাঙ্গাইলের আদি দত্ত শাড়ি ঘর' । সমীরণ দত্ত কয়েক বছরেই ব্যবসায়ে যথেষ্ট সফলতা অর্জন করেন। দেশ-বিদেশে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হওয়ায় সমীকরণ দত্ত বিদেশে ব্যবসায় শাখা গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ।
মিসেস ফয়জুন্নেসা যশোর শহরে ‘ফয়জুন্নেসা' নামে একটি কুলের দোকান প্রতিষ্ঠা করেন। দোকানের তুলনায় ক্রেতা ও চাহিদা বেশি হলে তিনি তাৎক্ষণিক ফুলের দাম বাড়িয়ে দেন। আবার বর্ষা হলে বা চাহিদা কমে গেলে হঠাৎ দাম কমিয়ে বিক্রি বাড়িয়ে দেন। তার বিক্রি ও মুনাফা বেশ ভালো। তার তাজা স্কুলের ব্যবসায়ের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো দলিলাদি না থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মিসেস ফয়জুন্নেসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
সদ্য বিশ্ববিদ্যালয় পাস জামাল, জসিম ও জোবায়ের তিন | বন্ধু একটি ইলেকট্রনিকস পণ্যের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। আইনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় তারা ব্যবসায়টি নিবন্ধন করেন নি। কিছুদিন সাফল্যের সাথে চলার পর পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থার অভাবে ব্যবসায়টি বন্ধ হয়ে যায়। তারা যথেষ্ট পরিশ্রমী ও সৃজনশীল এবং প্রত্যেকেরই যথেষ্ট পুঁজি রয়েছে। পরবর্তীতে উদ্যোগী তিন বন্ধু সমজাতীয় পৃথক ব্যবসায় গড়ে তোলেন এবং প্রত্যেকেই সফলতা লাভ করেন
জনাব সফি তার সমুদয় অর্থ দিয়ে রূপালী ফ্যাশন নামে একটি কোম্পানির ১০ টাকা মূল্যের ৫০,০০০ শেয়ার ক্রয় করেন। তিনি কোম্পানি থেকে মুনাফা পাওয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নন বরং নিজেকে একজন কোম্পানির মালিক হিসেবে ভাবতে । স্বচ্ছন্দবোধ করেন। অপরদিকে তার বন্ধু জনাব ইয়াফি । অসুস্থতাজনিত কারণে চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ করে উক্ত | কোম্পানিতে ১,০০,০০০ টাকা বিনিয়োগ করেন। তিনি | বিনিয়োগকৃত অর্থের ওপর বার্ষিক ২০% হারে লভ্যাংশ পান। দুই বছর পর জনাব ইয়াফি সুস্থ হয়ে ওঠার পর কোম্পানির পরিচালক হওয়ার জন্য আবেদন করেন।
বাগেরহাট জেলার ২১ জন জেলে তাদের আর্থ-সামাজিক কল্যাণের জন্য একটি সমবায় সমিতি গঠন করেছে। তাদের উৎপাদিত মৎস্য ঢাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করেন। ৩ বছরে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফার পরিমাণ ছিল :
বছর | ২০১২ | ২০১৩ | ২০১৪ |
মুনাফা | ৩,০০,০০০ | ৪,০০,০০০ | ৫,০০,০০০ |
তারা ন্যূনতম হারে বিধিবদ্ধ সংরক্ষিত তহবিলে সংরক্ষণ করেন। বর্তমানে তারা মাছ সংরক্ষণের জন্য ৫০,০০০ টাকায় তিনটি ডিপফ্রিজ ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে তারা সংরক্ষিত তহবিল কাজে লাগাতে চাইছেন।
ক্রমাগত লোকসানের কারণে আজাদ সাহেবের বাবা তার প্রসাধনী সামগ্রী তৈরির কারখানটি বন্ধ করে দিতে চাচ্ছিলেন । আজাদ সাহেব এমবিএ শেষ করে ব্যবসায়টির দায়িত্ব নেন। বিসিকের সহায়তায় জনতা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আধুনিক যন্ত্রপতি ক্রয় করেন । তিনি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে চলা ও ভবিষ্যৎ সমস্যা ও সম্ভাবনা অনুমান করে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনে ভোক্তার চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হন। এতে প্রতিষ্ঠানটি আবার লাভজনক হয়ে ওঠে। তিনি মনে করেন শিক্ষিত তরুণ সমাজ যদি সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পায় তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।
জনাব আহাম্মেদ আলী একটি কারখানা স্থাপনের জন্য সুবিধাজনক জমি খুঁজছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে জমি পাওয়া গেলেও গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি প্রভৃতির সুবিধা ছিল না। অবশেষে বিসিক শিল্পনগরীতে এসব সুবিধাসহ একটি প্লট পান। ফলে কারখানা স্থাপন তার জন্য সহজ হয়। তার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত পণ্যের মান ভালো হলেও তিনি ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পারছেন না। পার্শ্ববর্তী অন্য আর একটি কারখানা বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশন ও মাইডাস থেকে কর্মী প্রশিক্ষণ এবং ঋণ সহায়তা গ্রহণ করে গ্রাহকদের আরও বেশি হারে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হচ্ছে।
দাউদ সাহেব একজন চাকরিজীবী। ছেলেমেয়েকে স্কুলে নেওয়া-আনা ও তাদের যত্ন নেওয়ার কারণে স্ত্রী ফারজানাকে খুব ব্যস্ত থাকতে হয়। দুজনেই ব্যস্ত থাকার কারণে সংসারের। অন্যান্য কাজ যেমন- বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানি বিল | পরিশোধের সময় দাউদ সাহেবকে খুব ঝামেলা বা অসুবিধায় পড়তে হতো। বর্তমানে দাউদ সাহেব কাজের মাঝেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির বিল পরিশোধ করে থাকেন। এমনকি তিনি ব্যাংকে তার হিসাবের ব্যালান্সও মোবাইলের মাধ্যমে জেনে নেন। ফলে এখন তিনি সংসারের অনেক দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হয়েছেন ।
জামাল ও কামাল দুই বন্ধু। বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষে জামাল X (প্রা.) লি. এবং কামাল Y (প্রা.) লি. নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। X কোম্পানিতে বিদেশ হতে ভেষজ চর্বি আমদানি করে। সেটি প্রক্রিয়াজাত করে ক্ষার ও সুগন্ধি মিশিয়ে বিভিন্ন ধরনের সাবান তৈরি করে তা বাজারজাতকরণ করা হয়। অন্যদিকে Y কোম্পানি সরকারের কাছ থেকে টেন্ডার নিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্ন সড়ক ও সেতু নির্মাণের কাজ করে। বর্তমানে দুই বন্ধুই সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
জনাব আসিফ তার নিজস্ব কারখানার মানসম্মত সুতা উৎপাদন করে বিভিন্ন বৃহদায়তন শিল্প কারখানায় সরবরাহ করে থাকেন। উন্নত মানসম্পন্ন হওয়ায় আসিফের উৎপাদিত সুতা বিভিন্ন পোশাক শিল্প-কারখানায় ব্যাপকভাবে সমাদৃত। নিজস্ব তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উৎপাদন কার্য পরিচালনা কারণে ধীরে ধীরে তিনি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। ভবিষ্যতে তার আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের পরিকল্পনা আছে ।
সাথী, মলি ও বীথি সমঝোতার ভিত্তিতে একটি বুটিক হাউজ প্রতিষ্ঠা করে। তাদের পণ্যের মান ভালো হওয়ায় লাভের পরিমাণ বাড়তে থাকে। তাই তারা ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে চায়। কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য তারা ব্যবসায়ে সময় দিতে পারে না। তাই শ্যামলীকে অংশীদার হিসেবে নেয়। শ্যামলী কোনো মূলধন না দিয়ে পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে। এমতাবস্থায় ৫ বছর পর শ্যামলী দুর্ঘটনায় অচল হয়ে যায়। তাই তারা প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে চিন্তিত
তুষার তার আট বন্ধুসহ X নামে একটি কোম্পানি গঠন করে। কোম্পানির পরিচালক ৫ জন। বর্তমানে তারা শেয়ারবাজারে শেয়ার ও ঋণপত্র ইস্যু করে মূলধন সংগ্রহ করে। প্রতিষ্ঠানটি লাভে চলছে। অন্যদিকে রিংকু তার চার বন্ধু মিলে Y নামে একটি কোম্পানি গঠন করে এবং পরিচালকের সংখ্যা তিনজন। প্রতিষ্ঠানটি বাজারে শেয়ার ছাড়তে পারছে না। তবে প্রতিষ্ঠানটি ভালো চলছে।
পদ্মা নদীর তীরবর্তী একটি গ্রামের ৫০ জন প্রান্তিক কৃষক নিজেদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য আইনগত সভাবিশিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তারা প্রয়োজনীয় সরঞ্জমাদি সংগ্রহ, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি অল্প সময়ে অনেক পরিমাণে মুনাফা ও পুঁজি বাড়াতে সমর্থ হয়। বর্তমানে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য তারা সংরক্ষিত তহবিলের অর্থ দিয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ও উচ্চফলনশীল বিভিন্ন জাতের বীজ ক্রয় ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে একমত হতে পারছেন না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
D নামের একটি প্রসিদ্ধ ব্যাংকের ৪০% শেয়ার সাধারণ জনগণের। ব্যাংকটি অনলাইন ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাংকটির কার্যক্রম পরিচালনা করে। ব্যাংকটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ১০০ টাকার হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। ঐ হিসাবের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল, পানি বিল গ্রহণ করা হয় এবং কৃষিঋণ নেওয়া হয় । এতে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব জসিম একটি কারখানার মালিক। পদ্মা নদীর অদূরে তার কারখানা অবস্থিত। কখন কী ঘটে যায় এ ভেবে তিনি একটি বিমা কোম্পানির পলিসি গ্রহণ করেন। বিমার শর্তানুযায়ী যদি তার মৃত্যু ঘটে তবে তার পরিবার ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন। জনাব জসিম নিজের বিষয়ে সচেতন হলেও তার কারখানায় তিনি বর্জ্য শোধন যন্ত্রপাতি বসাননি। ফলে অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলছেন, যা প্রাণিকুল ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ । এটি তিনি বুঝতে চাচ্ছেন না ।
জনাব মুছাব্বির চৌধুরী একটি চা উৎপাদনকারী কোম্পানির নীতি নির্ধারণী এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন কাজের সাথে জড়িত। কর্তৃপক্ষ ( ২০১৬ সালে ৫ লক্ষ কেজি চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কর্মীরা রাতদিন পরিশ্রম করে ভাল ফলনের পরও ৪ লক্ষ ৫০ হাজার কেজি চা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়। জনাব চৌধুরী ও পরিচালনা পর্ষদ তদন্ত করেও বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা শ্রমিকদের কোন গাফিলতির প্রমান পায়নি।
সেভেন প্লাস ইলেকট্রনিক্স লিঃ বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি তৈরিতে একটি বিশ্বস্ত নাম। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মি. ইফতেখার নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে সকল কর্মীর কাজ মূল্যায়ন করেন। বিক্রয় ব্যবস্থাপকদের কাজ বিশ্লেষণ করে তিনি দেখতে পান চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিক্রয় ব্যবস্থাপক মি. সুজন পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৫% বেশি পণ্য বিক্রয় করেছেন। অন্যদিকে সিলেট অঞ্চলের বিক্রয় ব্যবস্থাপক মি. আউয়াল পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৩৫% অধিক পণ্য বিক্রয় করেছেন। এমতাবস্থায় তিনি মি. আউয়ালকে মহাব্যবস্থাপক পদে পদোন্নতি প্রদান করেন । প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ এর তুলনায় ২০১৬ সালে ৭৫ কোটি টাকা অধিক মুনাফা অর্জন করে ।
জনাব করিম মাহি সু লিঃ এর চেয়ারম্যান। ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠানটি ২ লক্ষ জোড়া জুতা তৈরীর পরিকল্পনা করে। কিন্তু বছরের মাঝামাঝিতে বেশ কিছু প্রবীণ দক্ষ শ্রমিক অবসরে চলে যায়। নতুন একটি কারখানায় অধিক বেতনের প্রস্তাবে আরো কিছু সংখ্যক শ্রমিক চাকুরী ত্যাগ করে চলে যায়। এতে প্রতিষ্ঠানটি বছর শেষে ১ লক্ষ ৬০ হাজার জোড়া জুতা তৈরী করতে সক্ষম হয়। সময়মত 1 জুতা সরবরাহ করতে না পারায় প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় ।
মি. মঞ্জুর একটি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন নির্বাহী। তার অধীনে ৭ জন ব্যবস্থাপক ও ১০ জন শাখা ব্যবস্থাপক আছেন। সম্প্রতি কার্যভার বেশী হওয়ায় মি. মঞ্জুরের সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছিল। প্রতিষ্ঠান এ বিষয়টি বিবেচনা করে একজন পরামর্শক নিয়োগ দেয়; যিনি মঞ্জুরকে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত উন্নতি করছে।
অহনা স্পিনিং লিমিটেড দুইটি পদে লোক নিয়োগের কথা ভাবছে। একটি হচ্ছে বিক্রয় ব্যবস্থাপকের পদ, অন্যটি চিকিৎসক। বর্তমানে বিক্রয় বিভাগে ২ জন সহকারী বিক্রয় ব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে জনাব মনির কনিষ্ঠ। তার কর্মদক্ষতা বিবেচনা করে পরিচালনা পর্ষদ তাকেই বিক্রয় ব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক পদটি নতুন সৃষ্টি করা হয়েছে।
জনাব সফিক সহকারী পদমর্যাদার একজন কর্মী। ১২ বৎসর চাকুরী জীবনে তিনি একই পদমর্যাদায় কর্মী বিভাগ, উৎপাদন বিভাগ, বিপণন বিভাগ ও হিসাব বিভাগে কাজ করেছেন। এতে তার কর্মদক্ষতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রশাসন মনে করছে তিনি এখন পদোন্নতির যোগ্য। কেননা, কর্ম অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তার প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতাও রয়েছে। তাই কর্তৃপক্ষ জনাব সফিককে পদোন্নতি প্রদান করেন।
অবনি লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব কালাম অধঃস্তন কর্মীদের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। তিনি মনে করেন। অধঃস্তনরা ব্যক্তিগত অসুবিধা ব্যতিরেকে কাজে ফাঁকি দেয় না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তারা অংশগ্রহণের সুযোগ পেলে কাজের প্রতি তাদের অঙ্গীকার বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে যে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে তিনি পিছপা হননা। আবেগের বশবর্তী হয়ে তিনি কোনো কাজ করেন না। যে কোন সিদ্ধান্তের তাৎক্ষণিক প্রাপ্তির চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রাপ্তিকে অধিক গুরুত্ব দেন। স্বল্পভাষী জনাৰ কালামকে অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে বেশ পছন্দ করে।
মিসেস রোমেনা একট বুটিক হাউসের মালিক। তাঁর কারাখানায় ২০০ জন শ্রমিক কাজ কারে যাদের বেশিরভাগ নারী। পার্শ্ববর্তী রংধনু বুটিক কারখানায় কর্মীদের বেতন ৩০% বৃদ্ধি করলেও রোমেনা তার প্রতিষ্ঠানে বেতন বাড়িয়েছেন ১৭%। কিন্তু তিনি কারখানার কাজের পরিবেশকে অনেক পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করেন। শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা, যাতায়াত সুবিধা এবং বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের চাকুরীর নিরাপত্তার বিষয়টি ঘোষণা করেন। এতে শ্রমিকরা উৎসাহিত হয়। বছর শেষে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় তার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন বেশী হয়ে থাকে।
রেড রোজ লিঃ প্রতিষ্ঠানটি সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে। ছয়টি আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমে সারাদেশে প্রতিষ্ঠানটি তার কার্য পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান জনাব আমীর অন্য ব্যবসায়ের কাজে প্রায়ই বিদেশে থাকেন। তাই তাঁর পক্ষে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। তিনি মাঝে মাঝে তাঁর অফিসে স্থাপিত ইন্টারনেট সংযোগ, মাল্টিমিডিয়া ও বড় স্ক্রীনের সাহায্যে ছয়টি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে সারাসরি কথোপকথন ও নির্দেশনা দেন। বিভাগীয় কর্মকর্তারাও তাদের কার্যালয়ে বসেই মত বিনিময়ে অংশ নেন। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি উপকূলীয় অঞ্চলে নিরক্ষর জনগোষ্ঠীর নিকট সাবানের রাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়।
রুপা সিরামিকস বছরের শুরুতেই উৎপাদন ও বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। ২০১৭ সালে তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ লক্ষ ইউনিট । জুন মাসে দেখা যায় উৎপাদন বিভাগ ৫ লক্ষ ইউনিট পণ্য উৎপাদন করলেও বিক্রয় বিভাগ পণ্য বিক্রয় করেছে মাত্র ৩ লক্ষ ৫০ হাজার ইউনিট। তদন্ত করে জানা যায় বিক্রয় বিভাগের কর্মীরা লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল না। এছাড়া বিক্রয় বিভাগে অভিজ্ঞ লোকের সংকট ছিল। বিষয়টি নিয়ে রুপা সিরামিকসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চিন্তিত
জনাব হাছনাত একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মালিক। তাঁর কারখানার উৎপাদিত শার্ট ২টি বিভাগীয় শহরে ৫টি শো-রুমে বিক্রয় হয়। জানুয়ারি মাসে তিনি ৫০ হাজার পিস শার্ট বিক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। জানুয়ারির ১৬ তারিখে দেখা গেল মাত্র ১৫ হাজার পিস শার্ট বিক্রয় হয়েছে। এমতাবস্থায় জনাৰ হাছনাত চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং পোশাকের মান বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মীদের কাজের সময় ও বিক্রয় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেন।
ঢাকা টু কক্সবাজার রুটে সিটি লাইন নামক প্রতিষ্ঠান বিরতিহীন যাত্রী পরিবহন ব্যবসা শুরু করে। পরীক্ষামূলকভাবে কিছুদিন চলার পর ব্যবস্থাপক জনাব ‘ক’ লক্ষ্য করলেন বাসের এক-তৃতীয়াংশ আসন ফাঁকা থাকছে। তিনি ভাবনায় পড়লেন। এক সময় তাঁর মাথায় বুদ্ধি এল । তিনি চট্টগ্রামে ও কুমিল্লায় স্টপেজ চালু করলে বাসের আসন আর ফাঁকা থাকে না । ফলে এটি লাভজনক ব্যবসায়ে পরিণত হয় ।
যমুনা লিমিটেড আগামী বছর ১০% বিক্রয় বৃদ্ধি করতে চায়। সে লক্ষ্যে কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার জনাব উৎপল সংশ্লিষ্ট বিভাগের ব্যবস্থাপকগণের মাধ্যমে উৎপাদন, ক্রয়, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, অর্থ ও মানবসম্পদ বিভাগে আলাদা পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য পণ্য সারিতে আরও পাঁচটি পণ্য অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ।
মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে ‘জু’ ব্যাটারি লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠান সদ্য ব্যবসা শুরু করেছে। কোম্পানিটি প্রয়োজনীয় সকল কাজ সঠিকভাবে সনাক্ত করে প্রকৃতি অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করেছে। প্রতিটি কাজের জন্য দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের সীমারেখা যথারীতি নির্দিষ্ট করে তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, বিভাগ এবং উপবিভাগকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ইদানিং বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব সোয়ান একই সময়ে একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশ পালনের শিকার হচ্ছেন। এতে তিনি বিব্রত এবং তার উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
মিসেস রিতা 'কিউ' বলপেন লি. এর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক। কোনো পদ শূন্য হলেই তিনি পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করার চেষ্টা করেন অথবা মালিকের বা কর্মকর্তাগণের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্য হতে কাউকে নিয়োগ দেন। এতে সকল কর্মকর্তা এবং মালিকপক্ষ বেশ খুশি । অথচ ক্রমে ক্রমে প্রতিষ্ঠান লাভের পরিবর্তে লোকসানের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
জনাব সোহান একজন দুগ্ধ খামারী। তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মীদের নিকট হতে দুগ্ধ উৎপাদনের নিয়ামক যেমন- গো-খাদ্য, পশুর স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা প্রভৃতি বিষয়ে কর্মীদের পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং তাদেরকে সে মোতাবেক কর্মসম্পাদনের নির্দেশনা প্রদান করেন। অপরদিকে একই প্রকৃতির ব্যবসায়ী জনাব সাবেরের ধারণা কর্মীরা কম শিক্ষিত, তাদের পরামর্শ নেয়াটা সময় অপচয় ছাড়া কিছুই নয় । তিনি নিজে যেটা ভাল মনে করেন, কর্মীদেরকে অক্ষরে অক্ষরে সেটাই পালনের নির্দেশনা দেন।
জনাব রকিব ‘ঘড়ি' নামক সোপ ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি কর্মীদেরকে পর্যাপ্ত বেতন-ভাতা দিয়ে থাকেন। তবে কোনো প্রকার কাজে গাফিলতি হলেই তাকে তিনি চাকুরি থেকে বরখাস্ত করেন। ফলে কর্মীরা সবসময় ভয়ে তটস্থ থাকে কখন তাদের চাকুরী হারাতে হয়। এমনকি পরিবারের কোনো আনন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে কর্মীদেরকে ছুটি মঞ্জুর করেন না। প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীই চায় এ অবস্থার অবসান হোক অপরদিকে ইদানিং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় জনাব রকিব চিন্তিত ।
কক্সবাজারের সমুদ্র উপত্যকায় অবস্থিত লং বিচ লিমিটেড একটি হোটেল ব্যবসা সংক্রান্ত প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। ২০১৮ সালে কোম্পানিটি তাদের সেবার মান ৫% বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে। সে লক্ষ্যে উৎপাদন বিভাগ অর্থ বিভাগের নিকট অতিরিক্ত বাজেট বরাদ্দের জন্য চিঠি দিয়েছে। অর্থবিভাগ প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করলে উৎপাদন বিভাগ এর অধীনস্থ ক্রয় বিভাগকে বিষয়টি ই- মেইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়।
সুন্দরবন ব্যাংক লিঃ চট্টগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক মি. কাঞ্চন মজুমদার তাঁর কর্মকর্তাদের নিয়ে একসাথে প্রতিষ্ঠানের মুনাফার লক্ষ্য পূরণ চান। কিন্তু কখনো ক্যাশিয়ারের অবহেলা, কখনো চেক ইস্যুকারীর অলসতা, আবার কখনো চেক পাসিং অফিসারের অনাহতা ব্যবস্থাপকের লক্ষ্য অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ব্যবস্থাপক সমন্বয়হীনতা দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন এবং মুনাফার লক্ষ্য অর্জিত হলো ।
পি এন্ড জি কোম্পানি বার্ষিক ৩০,০০০ ইউনিট ২০০ এমএল আকারের শ্যাম্পু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করল। ৬ মাস পর দেখা গেল মাত্র ১২০০০ ইউনিট শ্যাম্পু উৎপাদিত হয়েছে। কোম্পানির উৎপাদন ব্যবস্থাপক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম উৎপাদনের কারণ উদ্ঘাটন করলেন এবং ইউনিট ম্যানেজারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং ক্রয় সুপারভাইজারকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করলেন।
বিটাক কোম্পানি তাদের সারা দেশের বাজারগুলোকে দখল করার জন্য দেশের মোট বাজারকে কতগুলো অঞ্চলে ভাগ করে সে অনুযায়ী একেক অঞ্চলের জন্য একেক ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। কোম্পানীটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গৃহীত পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার সুযোগ রাখেন। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পরিকল্পনায় দ্রুত পরিবর্তন এনে সে অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে পারেন ।
হাফিজ মেঘলা লিঃ এর একজন ব্যবস্থাপক । তিনি কাজের সুবিধার্থে কাজগুলোকে প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করেন। পরে প্রতিটি বিভাগের কাজ এক একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করেন, যারা কোন কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ভোগ করেন না। তবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের কে কতজন অধীনস্তের কাজ দেখভাল করবেন তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় মেঘনা লিঃ জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। যা একসময় বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়
রুমানা একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানে কোন পদ শূন্য না থাকায় তিনি অনেকদিন একই পদে কর্মরত পেশ কর। 8 আছেন। হঠাৎ একটি পদ শূন্য হওয়ায় ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রুমানাকে উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করেন। নতুন। নিয়োগের ফলে বেতন বৃদ্ধিসহ দামী গাড়ী ও সু-সজ্জিত বাসস্থান পাওয়ায় সমাজে তার স্থান, মর্যাদা, সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
সাথী ও সবুজ দুইজন দুইটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। কর্মীরা যাতে ভালভাবে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারে সেজন্য সাথী প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। তিনি কর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহারসহ কাজের প্রশংসাও করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। তিনি কর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহারসহ কাজের প্রশংসাও করেন। কর্মীগণ তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সন্তুষ্ট। অপরদিকে সবুজ কর্মীদের উৎসাহ দানের জন্য মাঝে মাঝে মুনাফার অংশ ন্যায্য পারিশ্রমিক দিলেও কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা ভাল না থাকার কারণে কর্মীরা প্রায়ই কাজ ছেড়ে চলে যায়।
মিঃ সুজন সরকার ও সুমন চৌধুরী ভিন্ন ভিন্ন দুইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। সুজন সরকার তার প্রতিষ্ঠানের কোনো পদ শূন্য হলে অপেক্ষাকৃত যোগ্য কর্মীকে পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে উক্ত শূন্য পদ পূরণ করে থাকেন। অপরদিকে সুমন চৌধুরী তার প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান করে বিপুল সংখ্যক কর্মীর মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য কর্মী বাছাই করেন। পরে কর্মীদেরকে সমপর্যায়ের বিভিন্ন পদে বাস্তব কাজ করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে অল্প সময়েই কর্মদক্ষ করে তোলেন।
মিঃ নির্মল একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক। ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে প্রায়ই অসুবিধায় পরেন। হঠাৎ একদিন একটি সুপারশপে কেনাকাটা করার সময় অন্য এক ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে দেখা হওয়ায় তিনি তার অসুবিধার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করেন। অন্যদিকে কামাল সাহেব একটি প্রতিষ্ঠানের ক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি এ ধরনের কোন সমস্যায় পড়লে একই প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেন।
জনাব সিয়াম নির্দেশ প্রদান করার পূর্বে অনেক সময় অধীনস্তদের সাথে নির্দেশনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তবে নির্দেশনার বিষয়বস্তু নির্ধারণের অধিকার তিনিই সংরক্ষণ করেন। ফলে অধস্তনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্দেশনা পালনে অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে জনাব মিজান তার প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাবে ভাগ করে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে বণ্টন করে দেন। ফলে কাজের তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা আদায় সহজ হয়।
রূপালী লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১৮ সালে ১,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদিত হয়। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল প্রয়োজন ১,০০০ টাকার এবং একক প্রতি মজুরি ২০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটি বিল্ডিং ভাড়া ২,৫০,০০০ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন ৫,০০,০০০ টাকা প্রদান করে। প্রতিটি পণ্যের বিক্রয় মূল্য ২,০০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বিদ্যুৎ বিল দিতে হয় ৫০,০০০ টাকা
বিক্রয় ব্যবস্থাপক হাসেম নিজের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের কাজ বারবার সম্পাদন করতে হয়। তাই হাসেমকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তিনি নগদে না বাকিতে পণ্য বিক্রয় করবেন। অভিজ্ঞতার আলোকে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে তিনি বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ।
মিসেস হেলালী প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভুত করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অধীনস্তদের মতামতের কোন গুরুত্ব দেন না এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অধীনস্তদের কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ঠিকই অর্জন করেন। মিসেস হেলালীর ভবিষ্যত উপলব্ধি ও অনুমান করার সামর্থ প্রবল হওয়ায সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হন। ফলে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তিনি অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য ও সফল ব্যবস্থাপক হিসাবে বিবেচিত ।
জনাব কবীর ‘ঐতিহ্য পরিবহন' নামে একটি যাত্রী পরিবহন ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এ বছর ঢাকা- ময়মনসিংহ রোডে বিশটি নতুন বাস নামাবেন। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেন। তিনি কর্মীদের জন্য উদ্দীপনামূলক কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের নির্দেশনা দেন। এছাড়াও সঠিকভাবে কাজ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এর ফলে ঐতিহ্য পরিবহনের কর্মীরা যাত্রী ও মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘ঐতিহ্য পরিবহন' অল্পদিনেই সুনাম অর্জন করে।
ইউনুস কলেজের একটি বিভাগে সহকারি হিসাবে কাজ করে। একই সাথে তাকে কলেজের অন্য পরিচালনা সংক্রান্ত কাজ করতে হয়। পরীক্ষা কমিটির প্রধান বিভিন্ন সময় আদেশ দেন। এতে সে বিভাগের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। অন্যদিকে তার বেতন কলেজে কর্মরত অন্যানা সহকারীর বেতনের সমান আবার কলেজে প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকার ফলে সে কোনো ছুটি ভোগ করতে পারে না। বিষয়গুলো তাকে প্রায়ই ব্যথিত করে ।
মতিউর সাহেব একজন অভিজ্ঞ কারখানা ব্যবস্থাপক। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি আবেগকে গুরুত্ব দেন না। তিনি কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা, বিদ্যুৎ প্রাপ্যতা ও কাঁচামাল সংক্রান্ত তথ্য বিবেচনা করে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে লক্ষ্য বাস্তবায়নে অগ্রসর হন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তাও তিনি পর্যবেক্ষণ করেন। ফলে মতিউর সাহেব নির্ধারিত ব্যয়ে সঠিক মানের পণ্য উৎপাদন করতে পারছেন ।
মিঃ মামুন সাভারে একটি গেঞ্জী তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে তিনি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অবস্থা, ক্রেতার চাহিদ, কাঁচামালের প্রাপ্যতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হন এবং তা বিশ্লেষণ করেন। কারখানা প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে এক লক্ষ্য গেঞ্জী তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দেন। উৎপাদন ব্যবসথাপক উৎপাদনের যাবতীয় উপকরণের সমন্বয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় উৎপাদনের কর্মপন্থা ঠিক করেন। ফলে বছর শেষে কারখানায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়। মিঃ মামুন উৎপাদিত গেঞ্জী বিক্রয় করে লাভবান হন।
মিঃ আজাদ একটি চামড়াজাত শিল্পের মালিক। তিনি প্রক্রিয়াজাত চামড়া থেকে ব্যাগ তৈরি করে রপ্তানী করেন। একদিন কারখানা ব্যবস্থাপক জানালেন যে, ক্রয়কৃত প্রক্রিয়াজাত চামড়া শতকরা বিশ ভাগ মানসম্মত নয়। এছাড়াও কারখানা ব্যবস্থাপক তার অধীনে ৪ জন ফোরম্যানের মাধ্যমে শ্রমিকদের দিয়ে ত্রুটিমুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে এবং মানও যথাযথ হচ্ছে না। মিঃ আজাদ কারখানা ব্যবস্থাপকের সমপর্যায়ে একজন চামড়াপণ্যে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। এর ফলে কারখানা ব্যবস্থাপক ক্রয়কৃত চামড়ার শতভাগ মান বজায় রাখতে সক্ষম হন এবং উৎপাদন ব্যয়ও অনেক কমে আসে।
মিঃ কামাল তার নতুন প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা খুঁজছেন। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পুরানো প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ এক ব্যক্তিকে নিয়োগের কথা বললেন। মিঃ কামাল এতে সম্মত হন। নতুন প্রতিষ্ঠানে কিছু সংখ্যক কনিষ্ঠ নির্বাহী নিয়োগের জন্য পার্শ্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দিতে ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন।
মিঃ ওয়াসী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক। প্রতিষ্ঠানের মালিক লক্ষ্য করলেন মিঃ ওয়াসী প্রায়ই দেরীতে কর্মস্থলে 8 আসেন এবং কাজে অমনোযোগী । তিনি একদিন মিঃ ওয়াসীকে ডেকে কথা বলেন এবং কাজে উদ্দীপ্ত করার জন্য তার পদের নাম পরিবর্তন করে হিসাব নির্বাহী করে দেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে মিঃ ওয়াসীর কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয় না। এতে মালিক তাকে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে দেখা গেল মিঃ ওয়াসী ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছেন ।
মিঃ রহমান একটি কৃষি ফার্মের মালিক। বর্তমানে তিনি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোনো আপোষ করেন না। ফার্মের কর্মীদের সাথে কোনো ধরনের পরামর্শ গ্রহণ না করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কর্মীরা তাদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে আলাপ করার জন্য কোনো সাহস পান না। কিন্তু তারপরও কোনো অসন্তোষ তাদের মাঝে নেই। মিঃ রহমান সামনে দাঁড়ালেই সবাই কৃতজ্ঞচিত্রে আপন করে কাজ করতে থাকেন।
মিঃ আতাউরের সাবান তৈরির কারখানায় শ্রমিকদের সাথে সুপারভাইজারের সাপ্তাহিক শ্রমঘণ্টার হিসাব নিয়ে হট্টগোল হয়। মিঃ 8 আতাউর সংবাদ পেয়ে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মিঃ করিমকে দুপুরের খাবারের সময় শ্রমিকদের কেন্টিনে পাঠায়। মিঃ করিম শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন এবং নিজের মত করে শ্রমিকদের অসন্তুষ্টি দূর করেন। এদিকে মিঃ আতাউর সংবাদ পান কিছু লোক তার সাবান নকল করে বাজারজাতকরণ করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতাদের অবগতি করার জন্য প্যাকেটের গায়ে ট্রেডমার্ক দেখে সাবান ক্রয়ের বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারের ব্যবস্থা নেন।
আব্দুর রহমান একটা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী। প্রতিষ্ঠানটি মিরপুর, ঢাকাতে অবস্থিত। অফিসের মার্কেটিং ম্যানেজার আব্দুর রহমানকে একটি চিঠি ঢাকার উত্তরায় একটি অফিসে দ্রুত দিয়ে আসতে বলে বাইরে চলে গেলেন। একটু পরেই একাউন্টস ম্যানেজার আরেকটি চিঠি তাকে দ্রুত মতিঝিলের একটি অফিসে জমা দিতে বললেন। ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠানের মালিক তার পিয়নকে বলেছিলেন আব্দুর রহমান যেন তার বাসায় যায়, যা পিয়ন আব্দুর রহমানকে বলতে ভুলে গেছে। আব্দুর রহমান দায়িত্ব পালন করতে সমস্যায় পড়লো ।
মিঃ শামীম একটি কাপড় তৈরি কারখানার মালিক। এ বছর তিনি দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার মিটার কাপড় সরবরাহের একটি ফরমায়েশ পান। তার কারখানাটির বাৎসরিক কার্যদিবস ৩০০ দিন এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা উৎপাদন থাকে। তিনি কারখানা ব্যবস্থাপককে সেই অনুযায়ী উৎপাদনের নির্দেশ দেন। কিন্তু বছর শেষে হিসাব করে দেখলেন বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুই লক্ষ্য মিটার কাপড় উৎপাদন হয়, যা তিনি পূর্বে গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য করেন নাই ।
মুনলাইট লিঃ একটি বাল্ব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। সাপ্তাহিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২০ লক্ষ একক। কিন্তু উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার পরও সপ্তাহ শেষে দেখা গেল যে, প্রকৃত উৎপাদনের পরিমাণ ১৫ লক্ষ্য একক। এতে প্রতিষ্ঠানটি ফরমায়েশ অনুযায়ী সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে পারছে না। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষ চিন্তিত ।
জনাব প্রিতম 'Y' লিঃ এর নীতি নির্ধারণ ও পরিকল্পনার কাজে নিয়োজিত। জনাব রাজ্জাক উৎপাদন ও বিক্রয় বিভাগের প্রধান। তিনি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেন। রাজু উক্ত প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন বিভাগের ফোরম্যান। তিনি শ্রমিক কর্মীদের তত্ত্বাবধান করেন এবং সর্বদা কর্মীদের উৎসাহিত করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব মোশারফ একটি কৃষি পণ্যের উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের এমডি। তিনি বিকেন্দ্রীকরণের নীতি অনুসরণ করেন। তাই বিভাগগুলোকে কাজের স্বাধীনতা দেন। প্রতিটি বিভাগ নিজেরাই লক্ষ্য স্থির করেন এবং বাস্তবায়ন করেন। কিন্তু বছর শেষে এমডি দেখলেন যে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি এবং প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
'M' লিঃ একটি ঔষধ কোম্পানি। প্রতিষ্ঠানটি তাদের উৎপাদিত পণ্য দেশে ও বিদেশে বাজারজাত করে থাকে। এ প্রতিষ্ঠানে ১০,০০০ জন কর্মী কাজ করে। প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীরা কর্মীদের কাজের চাপে রাখতে চায়। তাছাড়া তারা অলস হয়ে পড়ে এবং তারা সর্বদায় কাজে ফাঁকি দিতে চায়। তাই নির্বাহীরা প্রয়োজনে শান্তির ব্যবস্থা করেন। কিন্তু এ পরিস্থিতিতে কর্মীদের উৎপাদনশীলতা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে।
ধীমান 'Y' লিঃ প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি বিক্রয় এবং সরবরাহ সংক্রান্ত তথ্যাদি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিক্রয় প্রতিনিধিদেরকে জানান। কিন্তু নেটওয়ার্কের সমস্যার জন্য নির্দেশনাটি বিক্রয় প্রতিনিধি সঠিকভাবে প্রায়ই বুঝতে পারেন না। ভয়ে তিনি পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসাও করেন না। এতে সঠিকভাবে কাজ করা হয় না এবং বিক্রয়ের পরিমাণ কমে যাচ্ছে।
নেপচুন একটি বিশ্বখ্যাত সফটওয়্যার কোম্পানি। সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠানটির অসংখ্য আঞ্চলিক অফিস রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকদের নিয়ে সভা আয়োজন করে। আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকগণ নিজেদের কর্মস্থলে বসেই এ সভায় অংশগ্রহণ করে নিজেদের মূল্যবান তথা উপস্থাপনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন। এতে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকদের প্রধান কার্যালয়ে যাতায়াতের প্রচুর ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি সময় লাঘব হয়ে থাকে ।
Z' লিঃ একটি স্বনামধন্য ও উৎপাদমুখী প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ের অবস্থা ভালো হওয়ায় প্রতিষ্ঠানে ৫০টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়। উক্ত পদসমূহের জন্য প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দক্ষ লোক না থাকায় পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্য বাইরে থেকে লোক নিয়োগের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তাদেরকে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে ৫ মাস প্রশিক্ষণ দেয়ার পর স্থানীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কয়েক বছর পর কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে ৩০ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়। এতে প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
শামিম পারফেক্ট ডেভলপার লিঃ এর এমডি। তিনি শহরের প্রাণকেন্দ্রে অ্যাপার্টমেন্ট তৈরির পরিকল্পনা করেন। তার প্রকল্পের মেয়াদ ৩ বছর। তিনি ভবনের নক্সা অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরু করেন। দুই বছর পর বিদ্যমান ও সম্ভাব্য ক্রেতাদের চাহিদা বিবেচনা করে তিনি ভবনের ডিজাইনে কিছু পরিবর্তন আনেন। ফলে অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা বেড়ে যায়।
রিতা ও মিতা দুই বন্ধু। তারা দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও নির্বাহী। রিতার প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা নির্বাহীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে থেকে কার্য সম্পাদন করে। অন্য দিকে মিতার প্রতিষ্ঠানে তাকে সহায়তা করার জন্য কয়েকজন ব্যক্তি আছেন। এতে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে এবং নির্বাহীর কার্যভার লাঘব হয়। কিন্তু রিতার প্রতিষ্ঠানে গতিশীলতার অভাবে এবং শ্রম অসন্তোষ লক্ষ্য করা যায় ।
জনাব রিমন শক্তি সিমেন্ট লি. এর কারখানা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানের মৌলিক উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিজস্ব বিভাগীয় পরিকল্পনা তৈরি করে অধীনস্থ ইউনিটসমূহকে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। কর্মীদের দাবি-দাওয়া ও সমস্যার প্রতি তিনি খুবই সহানুভূতিশলি। অন্যদিকে, জনাব করিম, জনাব রিমনের অধীনে থেকে শ্রমিক কর্মীদের কাজের তদারক করেন এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। জনাব রিমনও জনাব করিমকে বিভিন্ন কাজে আন্তরিক সহযোগিতা করেন। অর্পিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনাব করিমকে মাঝে মাঝে নিজস্ব পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জনে তাঁদের উভয়ের কর্মকাণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চার তারকাবিশিষ্ট আবাসিক হোটেল 'এলিগ্যান্স' উন্নতমানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে ক্রমশঃ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার জনাব হক তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সেবা, যোগ্যতা ও কাজ অনুযায়ী উপযুক্ত সুবিধা নিশ্চিত করেন। সম্প্রতি তিনি গ্রাহকদের অধিকতর ভাল সেবা প্রদানের জন্য তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে 'নতুন ধারণা প্রতিযোগিতা'র আয়োজন করেছেন। এর প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ হোটেলটিতে একটি নতুন অভ্যন্তরীণ চলচ্চিত্র প্রদর্শন গৃহ চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। হোটেলের গ্রাহকদের কাছে এটি অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছে
নিচের উপস্থাপনা দুটো লক্ষ্য কর।
উপস্থাপনা-১ অধ্যক্ষের কার্যালয় শহীদ রহিম হোসাইন কলেজ, চট্টগ্রাম
তারিখ : ২৬-০৯-২০১৮
বিজ্ঞপ্তি
দ্বাদশ শ্রেণির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সকল শাখার শিক্ষার্থীদের জানানো যাচ্ছে যে, তাদের শ্রেণি উপস্থিতির হার সন্তোষজনক নয়। সকল শিক্ষার্থীকে নিয়মিত শ্রেণিতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। বিষয়টি অতীব জরুরী।
প্রসেফর নূর আক্তার
অধ্যক্ষ
শহীদ রহিম হোসাইন কলেজ, চট্টগ্রাম
ডায়মন্ড স্টিল মিলস লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান, যার সংগঠন কাঠামোটি কিছু ছোট ছোট বিভাগে বিভক্ত। বিশেষজ্ঞরা নির্বাহী হিসেবে এগুলোতে দায়িত্ব পালন করেন। এভাবে, এটি আন্তর্জাতিক বাজারে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কিন্তু গতমাসে হঠাৎ উদ্ভূত শ্রমিক বিক্ষোভে এটি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়। সংগঠনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ফারুক বিষয়টি তদন্তের জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট দল গঠন করেন।
বরকত শিল্প গ্রুপের কর্মকর্তা এবং কর্মীরা প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে ৫% বর্ধিত হারে বেতন পায়। তাদের জন্য সংগঠনটি পরিবহন সেবাও দিয়ে থাকে। সম্প্রতি কারখানার উৎপাদন কমে যাওয়ায় ব্যবসায়টি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বরকত সাহেব বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে এলেন। লক্ষ্য করলেন, কর্মীরা এখানে অত্যন্ত স্বল্প আলোয় কাজ করছে। জানতে পারলেন, তারা সুপারভাইজারের দুর্ব্যবহারেও অসন্তুষ্ট।
জনাব তারেক ‘ব্লু ওশান' নামক একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার । সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি উৎপাদন, অর্থ, ক্রয় ও বিক্রয় বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের সাথে পরামর্শক্রমে যৌথ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কাজ সম্পাদনে সমস্যা দেখা দিলে তিনি সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং কাজের পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনেন।
জাইকা ফ্যাশন লিঃ তিন মাসের মধ্যে ৯০,০০০ পিস শার্ট সরবরাহের একটি ফরমায়েশ পেয়েছে। কর্তৃপক্ষ মাস প্রতি সমহারে শার্ট উৎপাদন করে তাদের ফরমায়েশ পূরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলো। কিন্তু এক মাস পর দেখা গেল মাত্র ২০,০০০ পিস শার্ট উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। কারণ অনুসন্ধানে পরিচালক পর্ষদ দেখলেন, লোডশেডিং এর কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় এমনটি ঘটেছে। পরবর্তীতে জেনারেটর স্থাপন করে এবং ওভারটাইমের মাধ্যমে অতিরিক্ত উৎপাদনের ব্যবস্থা করে নির্ধারিত সময়ে ফরমায়েশ পূরণ করতে সক্ষম হয় ।
‘ড্যাজলিং' নামের একটি টাইল্স, প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ২০০ সাল থেকে ইটালী থেকে কাঁচামাল এনে মানসম্মত টাইলস তৈরি করে আসছে। ২০১৮ সালের ইটালীতে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় 'ড্যাজলিং' ইন্ডিয়া থেকে কম দামে কাঁচামাল আমদানি করা শুরু করেছে। এভাবে দাম না বাড়িয়েই প্রতিষ্ঠানটি মানসম্মত টাইল্স বাজারে সরবরাহ করতে পারছে।
বৃহত্তর ফরিদপুর, বরিশাল ও যশোর-খুলনা অঞ্চলের উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার 'পদ্মা সেতু' নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। নদীর নাব্যতা ও প্রাকৃতিক কিছু কারণে নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। ফলে পরিকল্পনায় কিছু গুণগত পরিবর্তন আনতে হয়। আশা করা হচ্ছে অতি দ্রুত নির্মান কাজ সম্পন্ন হবে।
ড্রীমল্যান্ড লিঃ এর সকল কর্মচারী প্রত্যেকে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ-নির্দেশ পালন করে। আবার উপর থেকে শুরু করে নীচ পর্যন্ত প্রত্যেক বিভাগ, উপ-বিভাগ ও ব্যক্তির কাজ এমনভাবে একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত, যাতে কোনো কর্মীই এর বাইরে থাকে না। ফলে আদেশ দান ও বাস্তবায়ন সহজ হয় এবং দলীয় প্রচেষ্টা জোরদার হয় ।
ABC লিঃ এর প্রধান নির্বাহী বিভাগীয় প্রধানদের সাথে প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারস্পরিক মত বিনিময় করেন। তারপর প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। আবার প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যবস্থাপক মিঃ সাকিব উৎপাদন সংক্রান্ত সকল বিষয়ে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। আর সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সকলেই আন্তরিক থাকে। ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা খুব সহজেই অর্জিত হয়।
ফোর স্টার কোম্পানির প্রকৌশলী জনাব রোহানের উদ্ভাবিত পণ্যের ডিজাইন গ্রাহকদের নিকট ব্যাপক আকর্ষণ সৃষ্টি করে। ফলে বাজারে পণ্যের চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। এজন্য কোম্পানি জনাব রোহানকে একটি দামী গাড়ী উপহার দেয়। পাশাপাশি বৈদেশিক বাজারে প্রবেশের লক্ষ্যে শ্রমিক-কর্মীদের ভালো কাজের প্রশংসাসহ সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ গড়ে তোলা হয় এবং উত্তম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বর্তমানে তারা কাজের প্রতি খুবই আন্তরিক।
RB লিঃ এর ক্রয় ব্যবস্থাপক মি. X কাঁচামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যবস্থাপক মি. Y এর সাথে আলাপ-আলোচনা করেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানের এম.ডি মাসে একবার দূর-দূরান্তের অফিসে কর্মরত কর্মীদের সাথে ইলেকট্রনিক কৌশল ব্যবহার করে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। এ ধরনের যোগাযোগ ব্যবসায়কে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে।
জি.এম মি. হিয়াম বার্ষিক সভায় পরবর্তী প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য নির্ধারণ করলেন। উক্ত লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রত্যেক বিভাগ নিজ নিজ পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ শুরু করলো। প্রতি মাসে একবার সকল বিভাগ একত্রিত হয়ে কাজের অগ্রগতিসহ সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনা করে । ফলে দলীয় সমঝোতা ও পারস্পরিক যোগসূত্র স্থাপিত হয়। তাই মি. হিয়াম লক্ষ্যার্জনে আশাবাদী।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিস রোদশী উৎপাদন বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এমনভাবে আরোপ করেন যা সহজেই বোঝা যায় ও প্রয়োগ করা যায় । উল্লেখ্য বছরের শুরুতে তিনি ৩০% উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেন। প্রথম দুই মাসে উৎপাদন আদর্শমানের চেয়ে কম বৃদ্ধি পায়। কিন্তু যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ফলে পরবর্তী মাসসমূহে , ৩% এবং সর্বশেষ পর্যন্ত উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। উৎপাদন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় মিস রোদশী খুবই খুশী।
একটা বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানের এম.ডি মিঃ আফতাব অধস্তনদের আদেশদানের ক্ষমতা ও জবাবদিহিতা নির্দিষ্ট করে দেয়। ফলে সংগঠনের ভুল বুঝাবুঝি ও জটিলতার সৃষ্টি হয় না। তিনি লক্ষ্য করেন প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত ১০ ধরনের পণ্যের মধ্যে ৪টি পণ্যের বাজার ভালো। তাই তিনি সকল পণ্যের বাজার ভালো করার জন্য সংগঠন কাঠামোয় পরিবর্তন আনেন, যেখানে দু'ধরনের ব্যবস্থাপক একই সঙ্গে কাজ করেন। একজন কার্যিক ব্যবস্থাপক এবং অন্যজন প্রকল্প ব্যবস্থাপক। উভয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কার্য সম্পাদন করেন। লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার ব্যাপারে সবাই আশাবাদী।
অতীত ও বর্তমান তথ্য পর্যালোচনা করে মি. পাভেল উপলব্ধি করলেন এ বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং এয়ারকুলার মেশিনের চাহিদা বাড়বে। তাই তিনি এসি মেশিনের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মীদের সাথে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। লক্ষ্যার্জনে তিনি কর্মীদের সাথে এমনভাবে মিশলেন যাতে তারা কার্যসম্পাদনে প্রবলভাবে উৎসাহিত হয় । ফলে লক্ষ্যার্জন সফল হয় ।
জনাব সিকদার প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভূত করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অধীনস্থদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেন না। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অধীনস্তদের দ্বারা কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন করেন। জনাব সিকদারের ভবিষ্যৎ উপলব্ধি ও অনুমান করার সামর্থ প্রবল হওয়ায় সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হন। ফলে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে তিনি যোগ্য ও সফল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিবেচিত।
বিক্রয় ব্যবস্থাপক শামীম নিজের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের কাজ বারবার সম্পাদন করতে হয়। তাই শামীমকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তিনি নগদে না বাকিতে পণ্য বিক্রি করবেন। অভিজ্ঞতার আলোকে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে তিনি বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
জনাব মাহিন ও রবিন একটি মোবাইল সেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। জনাব মাহিন তার অধীনে কর্মরত কর্মীদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। তিনি কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন না, শাস্তিও প্রদান করেন না । অপরদিকে জনাব রবিন কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন, ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন ও শাস্তির ভয় দেখিয়ে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন।
“বিটা লিঃ” এ কর্মীদের জন্য ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে কর্মীরা অবসর সময়ে পেপার দেখেন, টিভি দেখেন এবং গল্প করেন। কর্মীরা এ সময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অধস্তন কর্মীদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন। অধস্তনগণও নির্ভয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে এরূপ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব প্রবাহের দিক থেকে কে কার অধীন তা বিবেচনা করা হয় না ।
আরবার সিরামিক্স-এর প্রধান কার্যালয় মানিকগঞ্জে। সাভার ও আশুলিয়ায় এর আরো দুইটি কারখানা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ব্যবস্থাপকের জারীকৃত নির্দেশনা সাভার ও আশুলিয়ায় পৌঁছাতে প্রায়ই বিলম্ব হয়। এতে উৎপাদন সমন্বয়ে অসুবিধা হয় ৷ বর্তমানে পত্রবাহক বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নির্দেশনা পাঠানো হয়। এজন্য উৎপাদন ব্যবস্থাপক তিনটি ফ্যাক্স মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনও বিষয়টি অনুমোদন করেন নি, কারণ সম্বয়ের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের জন্য ফ্যাক্স মেশিন ক্রয়ের বিধান নেই। ফলে উৎপাদন ব্যবস্থাপক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারছেন না ।
সোনালী লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১৮ সালে ১,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদিত হয়। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল প্রয়োজন ১,০০০ টাকা এবং এককপ্রতি মজুরি ২০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং ভাড়া ২,৫০,০০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল ৫০,০০০ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন ৫,০০,০০০ টাকা । প্রতিটি পণ্যের বিক্রয় মূল্য ২০০০ টাকা ।
জনাব নাসির একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থপক। তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে দিন রাত কাজ করেন। নির্ভুল ও যথাসময়ে কাজ করায় তিনি ব্যস্ত। প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধানের নাসির কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। পক্ষান্তরে ফাহিম অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। তিনি আন্তরিকতার সাথে কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন। তার ধারণা কর্মীরা দক্ষ ও আন্তরিক হলে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে ৷
জনাব তামিম প্রতিষ্ঠানের নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ ও কৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজের সাথে জড়িত। মাঝে মধ্যে তিনি কর্মীদের নির্দেশনাও দিয়ে থাকে। তাঁর প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু তামিমের পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত জ্ঞান নেই । তাই তিনি জনাব তিতুমিরকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। তিতুমির প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা ভোগ করেন না ।
PQ একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। PQ এর বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে যথা মানব সম্পদ, ঋণ, বৈদেশিক লেনদেন, সাধারণ ব্যাংকিং ইত্যাদি। জনাব রবিন PQ ব্যাংকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। তাঁকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিভাগে কাজের জন্য পদায়ন করা হয়। জনাব রবিন ব্যাংক থেকে প্রত্যাশিত বেতন-ভাড়া পেয়ে থাকেন। তাছাড়া তাঁর চাকরিও স্থায়ী হয়েছে। তাই তিনি এখন আত্মীয়-স্বজন ও অন্যদের সাথে মিলেমিশে চলতে চান এবং সকলের ভালোবাসা চান ।
উৎপাদন ও বিক্রয় বৃদ্ধি সংক্রান্ত নির্দেশনা জারির প্রেক্ষিতে উৎপাদন বিভাগের ব্যবস্থাপক জনাব আতিক আরো সতর্কতার সাথে প্রত্যেক কর্মীর কাজ সুনির্দিষ্ট করে দিয়ে তাদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থাও করেন। উদ্দীপনা বৃদ্ধির জন্য তার অধীনস্থ চল্লিশ জনের মাঝে পনেরো জনকে নির্দিষ্ট পরিমাণে মোবাইল বিলের ব্যবস্থা করেন। এতে বাকি পঁচিশ জনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ অবগত হলেন এবং তারা ক্ষোভ নিরসনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন ।
জনাব ইমন একজন বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি বিক্রয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে ছয় মাসের বিক্রয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সাত মাস পরে তিনি পরিকল্পনাটির মেয়াদ ৩ বছর বৃদ্ধি করলেন এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করলেন। কিন্তু তিনি অনুধাবন করলেন যে দেরি হয়ে গেছে। আরো পূর্ব থেকেই এ জন্য তাকে প্রস্তুতি নিতে হতো। এই বিরতি তার জন্য ক্ষতিকর হয়েছে।
জনাব আলতাফ পর্যটন বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘ট্যুর এন্ড ট্যুরিজম' এর প্রধান নির্বাহী। ট্যুরিজম এন্ড হোটেল ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে অর্নাস পাস করা জনাব আশিক তার উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত। অনেক সময় জনাব আলতাফ ব্যস্ত থাকায় ট্যুরিজম প্ল্যান নিয়ে সমন্বয় করতে জনাব আশিক অসুবিধায় পড়ে যান। তাই প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জনাব আলতাফ এটিকে সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেন। তাই তিনি জনাব আশিককে একটি বিভাগের দায়িত্ব দিতে আগ্রহী।
জনাব মারুফ দক্ষ ও পরিশ্রমী ব্যক্তি। তিনি কাজকে প্রাধান্য দেন। তিনি কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে বা ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেও কাজ আদায় করেন। সম্প্রতি তিনি একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে তিনি তার নেতৃত্বের ধরনে কিছুটা পরিবর্তন আনতে আগ্রহী হন । তিনি কর্মীদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে নির্দেশনা প্রদান করেন।
মানব সম্পদ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব কায়সার বিশ্বাস করেন কর্মীরা কাজের ভালো পরিবেশ পেলে কাজ করতে আগ্রহী হয়। তাই তিনি ন্যায্য মজুরি, কাজের পরিবেশ, চাকরির নিরাপত্তাসহ কাজের স্বীকৃতি ও আকর্ষণীয় বেতনের মাধ্যমে কর্মীদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করে সফল হয়েছেন। তিনি মনে করেন এগুলো প্রতিনিয়ত পালন করা উচিত ।
বইঘর লাইব্রেরি একটি বই বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান। এর স্বত্ত্বাধিকারী লক্ষ্য করলেন অনেক সময় কোনো একটি বইয়ের মজুদ শেষ হয়ে গেলেও তা বোঝা যায় না ৷ ফলে নতুন বই আনতে কিছুটা সময় লেগে যায় বিধায় কিছু ক্রেতাকে ফিরে যেতে হয়। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি তাদের কম্পিউটারে একটি নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার করেছে। যার মাধ্যমে তারা তাদের বই সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য খুব সহজেই জানতে পারছেন। কোন বই কতগুলো আছে তাও সহজে তারা বুঝতে পারছেন। ফলে কোনো বই ফুরিয়ে যাবার পূর্বেই বই সংগ্রহের জন্য পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকে। এর ফলে কাজ বর্তমানে অনেক কমে গিয়েছে।
মেরিন কসমেটিক্স একটি প্রসাধনী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর এর প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক। এ বছর কর্তৃপক্ষ ৩০% মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেন। প্রধান নির্বাহী পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৪০% বিক্রয় বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। অনুরূপভাবে উৎপাদন, ক্রয়, হিসাব ও বিজ্ঞাপন বিভাগকে স্ব স্ব লক্ষ্য নির্ধারণ করতে বলেন। সাথে সাথে নিজেদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগের মাধ্যমে কাজগুলো শেষ করে লক্ষ্য অর্জনে ভূমিকা রাখতে অনুরোধ করেন।
দেশ কসমেটিক্স লি. সম্প্রতি তাদের পণ্য সারিতে নতুন পণ্য হিসেবে “পিওর কোকোনাট অয়েল” নামক নারিকেল তেল অন্তর্ভুক্ত করে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। এর প্রেক্ষিতে বিক্রয় বিভাগ উক্ত পণ্যের সকল বিষয় বিবেচনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হলো যে, তাদেরকে সপ্তাহে কমপক্ষে দশ হাজার একক পণ্য বিক্রয় করতে হবে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলে ক্ষতি হবে। তাই মুনাফা অর্জন করতে হলে এর চেয়ে বিক্রয় বৃদ্ধি করতে হবে।
জনাব কবির অরূপ সিল্ক ফ্যাক্টরীতে ব্যবস্থাপক পদে যোগদান করার পর লক্ষ্য করলেন এখানকার বেশিরভাগ কর্মী যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষ নয়। তাই কাজের প্রতিও তাদের অনাগ্রহ রয়েছে। জনাব কবির অভিজ্ঞ। তারপরও কর্মীরা তাকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেনি। বিষয়টি উপলব্ধি করে তিনি কর্মীদের সাথে আলোচনা করে নেতৃত্ব দিতে আগ্রহী ।
বিক্রয় ব্যবস্থাপক জনাব মুহিবুল্লাহ নিজের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের কাজ বারে বারে সম্পাদন করতে হয়। তাই মুহিবুল্লাহকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় যে, সে নগদে না বাকিতে পণ্য বিক্রয় করবে। অভিজ্ঞতার আলোকে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে সে বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন ।
আলট্রা কোম্পানি তাদের সারাদেশের বাজারগুলোকে দখল করার জন্য দেশের মোট বাজারকে কতগুলো অঞ্চলে ভাগ করে সে অনুযায়ী একেক অঞ্চলের জন্য একেক ধরনের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। কোম্পানিটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গৃহীত পরিকল্পনায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার সুযোগ রাখেন। ফলে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পরিকল্পনায় দ্রুত পরিবর্তন এনে সে অনুযায়ী কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
হাসান পদ্মা লিঃ এর একজন ব্যবস্থাপক। তিনি কাজের সুবিধার্থে কাজগুলোকে প্রকৃতি অনুসারে বিভিন্ন বিভাগে ভাগ করেন। পরে প্রতিটি বিভাগের কাজ এক একজন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করেন, যারা কোন কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা ভোগ করেন না। তবে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরে কে কতজন অধিনস্থের কাজ দেখভাল করবেন তা সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকায় পদ্মা লিঃ জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়। যা এক সময় বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়।
চন্দনা একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মেধাবী হওয়ার সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ খালি না থাকায় তিনি অনেকদিন একই পদে কর্মরত আছেন। হঠাৎ একটি পদ খালি হওয়ায় ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চন্দনাকে উক্ত পদে নিয়োগ প্রদান করেন। নতুন নিয়োগের ফলে বেতন বৃদ্ধিসহ দামী গাড়ী ও সুসজ্জিত বাসস্থান পাওয়ায় সমাজে তার মান-মর্যাদা, সম্মান ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিঃ স্বপ্ন ও বাঁধন দুইজন দুইটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। কর্মীরা যাতে ভালভাবে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারে সে জন্য স্বপ্ন প্রতিষ্ঠানের পরিবেশকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে রেখেছেন। তিনি কর্মীদের সাথে ভাল ব্যবহারসহ কাজের প্রশংসাও করেন। ফলে কর্মীগণ তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে সন্তুষ্ট। অপরদিকে বাঁধন কর্মীদের উৎসাহ দানের জন্য মাঝে মাঝে মুনাফার অংশ, ন্যায্য পারিশ্রমিক দিলেও কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা ভালো না থাকার কারণে কর্মীরা প্রায়ই কাজ ছেড়ে চলে যায় ।
মিঃ পরিমল একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক। ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে প্রায়ই অসুবিধায় পড়েন। হঠাৎ একদিন হার্ট সুপারশপে কেনাকাটা করার সময় অন্য একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের সাথে দেখা হওয়ায় তিনি তার অসুবিধার বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করেন। অন্যদিকে জামাল সাহেব একটি প্রতিষ্ঠানে ক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি এ ধরনের কোনো সমস্যায় পড়লে একই প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেন।
জনাব আকাশ প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভূত করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অধীনস্থদের মতামতকে কোনো গুরুত্বও দেননা এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে অধীনস্থদের কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ঠিকই অর্জন করেন। জনাব আকাশের ভবিষ্যত উপলব্ধি ও অনুমান করার সামর্থ প্রবল হওয়ায় সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হন। ফলে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও তিনি অনেক ক্ষেত্রে যোগ্য ও সফল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিবেচিত।
মিঃ সুব্রত সরকার ও শামীম চৌধুরী ভিন্ন ভিন্ন দুইটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। সুব্রত সরকার তার প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ শূন্য হলে অপেক্ষাকৃত যোগ্য কর্মীকে পদোন্নতি প্রদানের মাধ্যমে উক্ত শূন্য পদ পূরণ করে থাকেন। অপরদিকে জনাব চৌধুরী তার প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রদান করে বিপুল সংখ্যাক কর্মীর মধ্য থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য কর্মী বাছাই করেন। পরে কর্মীদেরকে সমপর্যায়ের বিভিন্ন পদে বাস্তব কাজ করার মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করে অল্প সময়েই তাকে কর্মদক্ষ করে তোলেন ।
জনাব রফিক নির্দেশ প্রদান করার পূর্বে অনেক সময় অধীনস্থদের সাথে নির্দেশনার বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। তবে নির্দেশনার বিষয়বস্তু নির্ধারণের অধিকার তিনিই সংরক্ষণ করেন। ফলে অধস্তনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্দেশনা পালনে অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে জনাব আসাদ তার প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে সু- নির্দিষ্টভাবে বণ্টন করে দেন। ফলে কাজের তত্ত্বাবধান ও জবাবদিহিতা আদায় সহজ হয়।
আলফা লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১৮ সালে এক লক্ষ একক পণ্য উৎপাদিত হয়। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল লাগে ১০০০ টাকার এবং একক প্রতি মজুরি ২০০ টাকা ব্যয় হয়। এক বছরে প্রতিষ্ঠানের বিল্ডিং ভাড়া ২,৫০,০০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল ৫০,০০০ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন ৫,০০,০০ টাকা। প্রতি একক পণ্যের বিক্রয় মূল্য ২০০০ টাকা।
X ট্রেডার্সের এম ডি মি. মোমিন শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি কোনো ভূমিকা রাখেন না। সব কিছু অধস্তনদের উপর ছেড়ে দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি তার কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। পক্ষান্তরে Y ট্রেডার্সের এম.ডি মি. নিখিল সকল ক্ষমতা নিজে রেখে দেয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধস্তনদের সাথে পরামর্শ করেন না। যেভাবেই হোক তিনি কর্মীদের দিয়ে কাজ আদায় করেন। বিগত দুই বছরে ফল ভালো হলেও বর্তমানে কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দানা বাঁধছে।"
আশা ফুড প্রাডোক্টস এ কিছু বিক্রয়কর্মী নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের একটি নিয়োগ বোর্ড গঠন করলেন। উক্ত বোর্ড তাদের কাজ সম্পন্ন করার জন্য যথারীতি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন। পরবর্তীতে নিয়োগকৃত কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে। যাতে প্রতিষ্ঠান সফল হয়।
জনাব সাদিক ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি চিন্তা না করে সিলেট শহরে একটি জুস কারখানা স্থাপন করেন। সিলেটে আম উৎপন্ন হয় না, জুস তৈরির কাঁচামাল রাজশাহী অঞ্চল থেকে এনে জুস উৎপাদনে ব্যাপক খরচ পড়ায় তিনি লোকসানের সম্মুখীন হন। তাই তিনি ভবিষ্যতে কারখানাটি রাজশাহীতে স্থানান্তরের জন্য সার্বিক পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন। আশা করছেন এবার তিনি সফল হবেন।
মি. X ও মি. Y দুজন দুটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। মি. X এর প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে তার তত্ত্বাবধানে থেকে কার্য সম্পাদন করেন এবং আদেশ-নির্দেশ উপর থেকে নিচের দিকে ধাবিত হয়। পক্ষান্তরে মি. Y এর প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরকে তত্ত্বাবধায়নের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ কর্মী আছেন। মি. Y বিশেষজ্ঞ কর্মীকে নির্বাহীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। এতে Y এর কর্মভার কিছুটা লাঘব হয় এবং প্রতিষ্ঠানটি আশানুরূপ ফল লাভ করে।
স্কয়ার গ্রুপ কিছু দক্ষ ও যোগ্য কর্মী নিয়োগের জন্য জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দেয়। এ নিয়োগের পর কর্মীদের আরও দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। এ লক্ষ্যে কর্মীকে একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্বাহীর অধীনে রেখে কার্যক্ষেত্রে হাতে- কলমে শিক্ষা দেয়া হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানে অপচয় কম হয় এবং সহজেই লক্ষ্য অর্জিত হয়।
মি, অর্ণব অধস্তনদের প্রতি খুবই সদয় থাকেন। তাদের অভাব-অভিযোগের প্রতি মনোনিবেশ করে এবং স্নেহ ও মমতার মাধ্যমে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে তিনি আশানুরূপ ফল পাচ্ছেন না। তাই তিনি নেতৃত্বের ধরনে পরিবর্তন আনার চিন্তা করছেন। যেখানে সকল বিষয়ে অধস্তনদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। ফলাফল ইতিবাচক হবে বলে তিনি আশাবাদী ।
জনাব আশিক একটি খ্যাতনামা গার্মেন্টস কোম্পানির নতুন একটি ইউনিটের ব্যবস্থাপক নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি প্রথমে তার প্রতিষ্ঠানে যে সকল কাজ রয়েছে তা চিহ্নিত করে কাজের প্রকৃতি অনুসারে সেগুলোকে কতগুলো প্রধান ভাগে ভাগ করেন এবং বিভিন্ন বিভাগ-উপবিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর যেখানে যে দক্ষতার জনশক্তি প্রয়োজন তা নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বুঝিয়ে দেন। শুধু তাই নয় তিনি অন্যান্য উপকরণাদিও যথাস্থানে স্থাপন করেন। এতে তার ইউনিট অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
ডায়মন্ড এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মিঃ হাসিব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিচের স্তরে প্রদান করেন। আবার প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মীদের কার্য সম্পাদনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য তিনি বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে এবং একে অন্যের সাথে যোগসূত্র স্থাপনে সহায়তা করেন। ফলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়।
পুরাতন ঢাকার জনাব করিম ও জনাব সামাদের পাশাপাশি বাই-সাইকেলের শোরুম। তারা উভয়ে নগদ মূল্যে ও এক দামে সাইকেল বিক্রি করতেন। বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে তাদের সাইকেল বিক্রি ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এই বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনাব করিম তার বিক্রয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন। অতঃপর তিনি নগদ মূল্যের পাশাপাশি কিস্তিতেও সাইকেল বিক্রি শুরু করেন। তাছাড়া তিনি অনলাইনেও সাইকেল সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। ফলে তার বিক্রি আগের চেয়ে ভাল। অন্যদিকে জনাব সামাদ এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে তার বিক্রিও অনেক কম।
জনাব রাইয়ান একটি রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী। তার প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি বড় বিভাগে প্রধান নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মী কর্মরত রয়েছেন। তিনি লক্ষ্য করলেন যে, প্রায়শই বিশেষজ্ঞগণ প্রধান নির্বাহী কর্তৃক উপেক্ষিত হন এবং তাদেরকে কোনো দায়িত্ব দেয়া হয় না। তাই তিনি উৎপাদন ও বিক্রয় বিভাগের কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে বিশেষজ্ঞদের নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছন। এতে তিনি আগের চেয়ে ভাল ফল পাচ্ছেন ।
জনাব শাহীন একটি নতুন বৃহদায়তন গার্মেন্টস কারখানা গড়ার লক্ষ্যে সংগঠন কাঠামো তৈরি করছেন। তিনি এমনভাবে সংগঠন কাঠামো সাজাচ্ছেন যাতে প্রত্যেকটি কর্মী একটি নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী হয়ে উঠে। তিনি একজন নির্বাহীর অধীনে কর্মীর সংখ্যা যথাযথভাবে নির্ধারণ করেছেন যাতে তার তদারকি করতে কোনো অসুবিধা না হয়। তাছাড়া একজন কর্মীকে যাতে একাধিক নির্বাহী আদেশ না দেন সেটিও তিনি নিশ্চিত করেছেন ।
জনাব জামিল চৌধুরী একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক। তার প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ শূন্য হলে তিনি শুধুমাত্র স্বাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তর হতেই উক্ত পদ পূরণ করেন। এতে তার কর্মী পেতে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিন্তু দেখা যায় এতে অনেক অযোগ্য কর্মীও নিয়োগ পেয়ে যাচ্ছে। সমস্যা সমাধানে তিনি শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে আগের চেয়ে তিনি যোগ্য ও দক্ষ কর্মী পাচ্ছেন।
জনাব আরিফ মিলিনিয়াম প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ নামক একটি কার্টন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য সর্বদা কর্মীদের বকাঝকা করেন, তাদের সাথে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে আলোচনা করেন না এবং তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় দিন দিন বাড়লেও কর্মীদের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যাবার প্রবণতা বেশি। অপরদিকে জনাব কামরুজ্জামান এস, জে কোম্পানি লিঃ নামে অন্য একটি কার্টন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি সর্বদা কর্মীদের সাতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন, যে কোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত তাদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করেন। ফলে তার প্রতিষ্ঠানের সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব সৈকত একটি স্বনামধন্য সাবান শিল্পের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি তার বিভাগের মাসিক বিক্রয় টার্গেট ১ লক্ষ একক নির্ধারণ করেন এবং সে অনুযায়ী বিক্রয় কর্মীদের নির্দেশনা দেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে দেখা গেল ৩০ হাজার একক কম বিক্রয় হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত বিক্রয় অর্জনের জন্য তিনি কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সুপারভাইজারদের অন্য বিভাগে বদলি করেন এবং উক্ত পদে দক্ষ সুপারভাইজার নিয়োগ করেন ।
আশা টেক্সটাইলের কর্ণধার মিসেস ফারহানা রহমান সবসময় ইতিবাচক মানুষ। যে কোনো পরিস্থিতিতেই তিনি নিজের উপর আস্থা রাখেন এবং যুক্তিপূর্ণভাবে সব কাজ পরিচালনা করেন। তিনি অধস্তনদের সাথে ভাল আচরণ করেন। তার প্রতিষ্ঠানের জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলাপ আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । ফলে তার প্রতিষ্ঠানের সাফল্যও অনেক ।
“জারা গার্মেন্টস" ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রয় করে। আগামী তিন মাসে ২,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ইউরােেপর বিভিন্ন দেশে অতিমারী হওয়ায় সেখানকার বাজারে গার্মেন্টস পণ্যের চাহিদা কমে যায়। এমন পরিস্থিতিতে “জারা গার্মেন্টস” উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনে এবং কর্মীদেরকে এর কারণ জানিয়ে দেয়।
“নির্মাণ এন্টারপ্রাইজ” এ দেশীয় একটি মটর পার্টস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এটি তার পণ্য শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকায় রপ্তানি করে। দেশের বাজারে কোনো পণ্য বিক্রি করে না। কিন্তু বাণিজ্য চুক্তি থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকা চীনের জন্য তার দেশের বাজারে পণ্য রপ্তানি শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়। চীনের পণ্য উন্নত ও সস্তা হওয়ায় সহজেই দক্ষিণ আফ্রিকার বাজার দখল করে নেয়। কলে “নির্মাণ এন্টারপ্রাইজ” তাদের পণ্যের একমাত্র বাজার হারায়।
সরদার জামিল রংপুরের একটি পোল্ট্রি ফার্মের নির্বাহী কর্মকর্তা। সম্প্রতি পাশের উপজেলাতেও তিনি একটি নতুন ফার্ম গড়ে তুলেছেন। ব্যবসার আয়তন বৃদ্ধি পাওয়ায় তাকে সহায়তা করার জন্য একজন ভেটেরিনারী ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছেন। এ বছর শীতের তীব্রতা বেশি থাকায় ডাক্তার তাকে দ্রুত মুরগিগুলো বিক্রয় করার পরামর্শ দিলেন। বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিতে তিনি উৎপাদন ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করলেন। কিন্তু মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত আসার আগেই ফার্মের সব
মুরগি মারা গেল।
রতন ও স্বপন দুই বন্ধু একই তারিখে নর্থওয়েস্ট ব্যাংকে যোগদান করে। যোগদান করার পর স্বপন কিছুদিনের মধ্যে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে। ঋণদান, আদায় ও গ্রাহকের সাথে সম্পর্কসহ সবক্ষেত্রে স্বপন দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ এসব বিবেচনায় তিন বছরের মাথায় তাকে সিনিয়র অফিসার পদে পদোন্নতি দেয়। অন্যদিকে রতনের পদোন্নতি হয় পাঁচ বছর পর। ইতোমধ্যে রতনও অভিজ্ঞ হয়ে উঠে। কিন্তু পদোন্নতি পাওয়ার পর কিছুদিনের মধ্যে সে নর্থওয়েস্ট ব্যাংকে ইস্তফা দিয়ে অন্য একটি ব্যাংকে চলে যায়। এ অবস্থা উত্তরণে কর্তৃপক্ষ পদোন্নতির অন্য উপায় খুঁজছে, যেখানে কর্মীরা চাকুরীর মেয়াদকাল ও দক্ষতা উভয়কেই বিবেচনায় নিয়ে আসা যায় ।
“বাহারী সিরামিকস” নতুন কর্মী সংস্থানের জন্য কারখানা গেটে একটি আবেদন বক্স রাখে। এ বছর ঈদের আগে নিয়োগ বক্স থেকে কিছু আবেদনপত্র নিয়ে যাচাই-বাছাই করে কিছুসংখ্যক নতুন কর্মী নিয়োগ করে। তাদেরকে পরের দিনই কাজে যোগদান করতে বলা হয়। কিন্তু নতুন শ্রমিক নিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি নানা বিপত্তিতে পড়ে। চাকুরী ছেড়ে চলে যাওয়া, কাঁচামাল অপচয় করা, মেশিন নষ্ট করা এগুলো এখন নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থা উত্তরণে মানবসম্পদ বিভাগ নতুন শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ভাবছে।
এমবিএ পাস করার পর জনাব রিপন দেওয়ান একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে এমডি হিসেবে যোগদান করেন। মিষ্টভাষি রিপন সকলের সামনে আগামীর পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। আবেগতাড়িত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে না বরং কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তবে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি কুণ্ঠাবোধ করেন না।
মিঃ শিপন কিওর ফার্মাসিউটিক্যালসে আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করে। তিনি তার অঞ্চলের জন্য বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা তৈরি করেন। এ জন্য তিনি প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি তার অধীনস্থ সকল বিক্রয় প্রতিনিধিকে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দেন এবং তাদের দেয়া পরামর্শ গ্রহণ করেন। এ জন্য তিনি সকলের কাছে গ্রহণীয়। তিনি উৎপাদন বিভাগকে ভবিষ্যৎ বাজার সম্পর্কে পূর্বেই জানিয়ে দেন। সে অনুযায়ী উৎপাদন বিভাগ উৎপাদন কার্য পরিচালনা করে ।
মিঃ রবিন একটি বায়িং হাউজ থেকে গাঢ় নীল রংয়ের জিনস প্যান্ট সরবরাহের ফরমায়েশ গ্রহণ করেন। এ কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি একজন মান নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেন। মান নিয়ন্ত্রক সকল শ্রমিককে প্রথমে কাজ বুঝিয়ে দেন। একদিন পর তিনি রবিনকে একটি পুরাতন মেশিন পরিবর্তন করে সেখানে নতুন মেশিন স্থাপনের সুপারিশ করেন। মি. রবিন কালবিলম্ব না করে নতুন মেশিনের ব্যবস্থা করেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্ণিত মানের মাল সরবরাহ করতে পারায় মিঃ রবিন পুনরায় আরেকটি ফরমায়েশ পান ।
মি. আহনাফ বিবিএ, এমবিএ ডিগ্রী অর্জন করার পাশাপাশি মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি আলফা লিমিটেড এর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রণীত নীতিমালা অনুসারে তার সহকারীদের নির্দেশনা দেন এবং নির্দেশনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেন।
জনাব শওকত একজন সফল ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি ঢাকায় তার ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও নিজ জন্মস্থানের জন্য রয়েছে ভালবাসা। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে তিনি এলাকায় গড়াই নদীর ধারে একটি বিদ্যালয় স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এলাকার সুবিধা বঞ্চিত শিশুরা বিনামূল্যে এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে বলে তিনি আশাবাদী। বিদ্যালয়টির কার্যক্রম ২০২০ সালে শুরু করার কথা থাকলেও বর্ষার মৌসুমে স্কুলের জায়গা নদীতে বিলীন হয়ে । যায়। পরবর্তীতে জনাব শওকত স্কুলের জায়গা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে তিনি নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
মি. রাহিদ একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তিনি তার প্রতিষ্ঠানে ২০২০ সালের জন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা বিগত বছরের তুলনায় উচ্চাভিলাসী চিন্তা করে ৪০% বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের শুরুতে বৈশ্বিক মহামারীর কারণে কিছু দক্ষ শ্রমিক চাকুরী ছেড়ে চলে যায় এবং সঠিক সময়ে পর্যাপ্ত কাঁচামালের যোগান দিতে ব্যর্থ হয়। যার কারণে উৎপাদনের কাঙ্খিত লক্ষমাত্রা অর্জিত হয়নি। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি লোকশানের সম্মুখীন হয়।
মি. আরাফ একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী । তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কাজকে এমনভাবে ভাগ করলেন যেন অধস্তন কর্মীরা একজন নির্বাহীর অধীনেই কাজ করতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে কাজের মান বৃদ্ধির জন্য তিন প্রতিষ্ঠানটির সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী প্রত্যেক বিভাগে একজন করে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিলেন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির শৃংখলা এবং কাজের মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
ABC লিমিটেড' একটি বৃহদায়তন উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের ব্যবস্থাপক জনাব রফিক আহমেদ ৫০ জন কর্মী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে ১০০০ জন প্রার্থী আবেদন করে । আবেদনপত্রগুলো বাছাই করে পরবর্তীতে তিনি ৮১৫ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য চিঠি ইস্যু করে। এতে বিপুল সংখ্যক কর্মীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হয় এবং প্রতিষ্ঠানটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়।
ইউনিক লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মি. রাইসুল। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের এক পদ থেকে অন্য পদে স্থানান্তর করে অভিজ্ঞ তত্ত্বাবধায়কের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কার্যসম্পাদনে তাদের দক্ষ ও, যোগ্য করে গড়ে তোলেন। এতে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি মনোবল ও মানসিক অবস্থার উন্নতি ঘটে।
মি সিয়াম আহমেদ একটি বৃহদায়তন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য তার কর্মীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন যা পালনে কর্মীরা বাধ্য থাকে। তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্মীদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেন না।এর ফলে প্রশাসনের প্রতি কর্মীদের অসন্তোষ বৃদ্ধি পায় এবং উৎপাদন ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে ।
ওসান লিঃ এর ব্যবস্থাপক জনাব ইমন অধস্তন কর্মীদের সংগে পরামর্শক্রমে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কর্মীরাও প্রতিষ্ঠানকে নিজের প্রতিষ্ঠান মনে করে স্বতঃস্ফূর্ততার সাথে কাজ করে। তবে তিনি আবেগের বশে কোনো কাজ না করে প্রতিষ্ঠান ও কর্মীর স্বার্থকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেন। সাম্প্রতিককালে উৎপাদন বিভাগে নতুন স্বয়ংক্রিয় মেশিন স্থাপন করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি শংকিত থাকলেও তার সুযোগ্য নেতৃত্বে সকল কর্মীরা সিদ্ধান্তটিকে সহজভাবে গ্রহণ করেছে।
‘সাদিতা টেক্সটাইল লিমিটেড' এর স্বত্বাধিকারী জনাব নাবিলা ৮ দিনের মধ্যে ১০০০পিস থ্রীপিচ সরবরাহ করবেন বলে “সুমনা ফ্যাশন হাউজের সাথে চুক্তি করেন। উৎপাদন শুরু থেকে ৪ দিনে দেখা গেল মাত্র ৪৫০ পিস থ্রীপিচ তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি যথাসময়ে থ্রীপিচ সরবরাহ করার জন্য নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করলেন।
জনাব মনির সম্প্রতি একটি প্রতিষ্ঠানের ‘বিপণন ব্যবস্থাপক' পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর তিনি তার অধীনস্থ বিক্রয় কর্মকর্তাদের কার্য ও দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। নিয়মিত তদারকি ও যোগাযোগের মাধ্যমে মাসের নির্দিষ্ট বিক্রয় টার্গেট অর্জন করলেন। মাস শেষে তিনি লক্ষ্য করলেন, একই ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন ও একই সাথে যোগদান করা অন্য ব্যবস্থাপকের সম্মানী তার থেকে অনেক বেশি। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করেও কোনো সমাধান না হওয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলেন ।
জনাব বিপ্লব গ্লোরী নিটওয়ার লি: এ কারখানা ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। প্রতিষ্ঠানের মৌলিক উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিজস্ব বিভাগীয় পরিকল্পনা তৈরি করে অধীনস্থ ইউনিটসমূহকে বাস্তবায়নের নিদর্শনা দেন। কর্মীদের দাবী-দাওয়া ও সমস্যার প্রতি তিনি খুবই সহানুভূতিশীল। অন্যদিকে জনাব বকুল তার অধীনে থেকে শ্রমিক-কর্মীদের কাজের তদারক করেন এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। জনাব বিপ্লবও তাকে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন । অর্পিত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জনাব বকুলকে মাঝে মাঝে নিজস্ব পরিকল্পনাও তৈরি করতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য অর্জনে
তাদের উভয়ের কর্মকাণ্ড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
হাসিন এন্টারপ্রাইজ: একটি বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তাঁরা তাদের ক্রেতাদের। নিয়মিত ২/১৫, N-৩০ শর্তে ধারে পণ্য বিক্রয় করে। পূর্বে ক্রেতারা বাট্টার সুযোগ গ্রহণ করলেও কোভিড পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে পাওনা পরিশােেধ ব্যর্থ হয়। কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে পাওনা আদায়ের জন্য কয়েকজন কর্মী নিয়োগ দেয়। মাস শেষে সর্বোচ্চ পাওনা আদায়কারীকে ‘Employee of the month' হিসেবে ঘাষেণা দেয়ার পাশাপাশি বোনাসও প্রদান করে। ফলে পাওনা আদায়ের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মুগ্ধ ফার্মাসিউটিক্যালস লি: এ মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক ও সুপারভাইজার এর দুটি পদ শূন্য হয়েছে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর সুপারিশে এ দুটি পদে দুজন লোক নিয়োগ দেয়া হয়। সুপারভাইজার তার কাজ কোনোভাবে সামলে নিতে পারলেও মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক এর এ বিষয়ে পূর্ব-অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি কার্যসম্পাদনে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হলেন।
হাই-টেক ফ্যাশন্স একটি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের কাজগুলোকে উৎপাদন, মান-নিয়ন্ত্রণ, হিসাব ও মানবসম্পদ এ চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগের ব্যবস্থাপক সম্পূর্ণ ক্ষমতা ভোগ করেও নিজের কাজের জবাবদিহিতা প্রদান করে। প্রতিটি বিভাগ ও বিভাগে কর্মরত কর্মীর দায়িত্ব নির্দিষ্ট থাকায় এবং বিভাগসমূহে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী থাকার ফলে উপকরণসমূহের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সহজে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হয়।
জনাব আহসান একটি ব্যাংকের মতিঝিল শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার ও জনাব সোবহান সহকারী প্রিন্সিপাল অফিসার পদে কর্মরত। প্রধান অফিস কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত তাদের বাস্তবায়ন করতে হয়। একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণের জন্য প্রধান অফিস থেকে একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মনোনয়ন চাওয়া হলে অত্র শাখার ব্যবস্থাপক জনাব শাকুর, জনাব সোবহানের নাম অনুমোদন করেন, যিনি তার নিজ এলাকার বাসিন্দা ।
দীপিতা এন্টারপ্রাইজ এর পরিচালনা পর্ষদ চলতি বছর বিক্রয় বিভাগকে ৩,০০,০০০ একক পণ্য বিক্রয়ের নির্দেশ প্রদান করে। ছয় মাস পর কর্তৃপক্ষ দেখতে পায় শুধুমাত্র ১,২০,০০০ একক পণ্য বিক্রয় হয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায় দুইজন দক্ষ কর্মী কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ায় লক্ষমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। নির্ধারিত সময়ে প্রতিষ্ঠানের কাংখিত লক্ষ্য অর্জনে দুজন বিক্রয়কর্মী নিয়োগ দেয়া হয় এবং বিক্রয়কর্মীদের তাদের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত বিক্রয়ের উপর ১% কমিশন দেয়ার ঘোষণা করা হয়।
জাহারা ফুডস্ লি: এর গুদামে রাখা পণ্যের হিসেবে গড়মিল থাকায় সাধারণ ব্যবস্থাপক, ক্রয় ব্যবস্থাপককে প্রধান করে তিন সদস্যের দলকে কারণ অনুসন্ধান করে তিন দিনের মধ্যে রিপার্টে প্রদানের নির্দেশ দিলেন। বাজারে তাদের চিপসের বিক্রয়ের পরিমাণ ভালো হলেও চকলেটের বিক্রয়ের পরিমাণ আশানুরূপ নয়। তাই সাধারণ ব্যবস্থাপক, চকলেটের উৎপাদন ব্যবস্থাপককে কার্যিক ব্যবস্থাপক হিসেবে ঘোষণা করে বিদেশ থেকে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে প্রকল্প ব্যবস্থাপক পদে নিয়োগ দিলেন। উৎপাদন ব্যবস্থাপক প্রকল্প ব্যবস্থাপকের প্রত্যাশা ও ফরমায়েশ অনুযায়ী কাজ করবেন। কর্মীরা উভয় ব্যবস্থাপকের আদেশ মানতে বাধ্য
থাকবে।
জনাব আরিয়া একটি কলেজের ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি ছয় মাসের জন্য চিকিৎসা ছুটিতে গেলে তার স্থলে জনাব জুমাইরাহকে ছয় মাসের জন্য উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়। জনাৰ জুমাইরাহ'র কর্মকালীন সময়ে BISE থেকে একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণের চিঠি আসে, যেখানে প্রশিক্ষক শিক্ষার্থীদের সামনে তার বক্তব্য উপস্থাপনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ দান করে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জনাব জুমাইরাহকে উক্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের নির্দেশ দান করে।
। জনাব জাহিদ “সুরমা ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক। তিনি অফিসে নিজের খেয়াল খুশিমত আসেন। তাঁর অধীনে কর্মীরাও নিজেদের ইচ্ছামাফিক কাজ-কর্ম সম্পাদন করেন। ফলে ব্যাংকটি বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়। অপরদিকে কর্ণফুলী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক জনাব আকবর কর্মীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নিবিড় তত্ত্বাবধানে সফলতার সাথে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করেন ৷
জনাব এ্যাপোলো একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি কর্মীদের প্রতি যথেষ্ট সহানুভূতিশীল হলেও কাজের ব্যাপারে ছাড় দেন না। ২০১৯ এর শেষের দিকে যখন কোভিড মহামারী শুরু হয় তিনি বুঝতে পারেন এটি দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। তাই তিনি তার কর্মীদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কীভাবে ঘরে বসে অফিসের কাজ করা সম্ভব সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিলেন। প্রযুক্তি বিষয়ে নিজের জ্ঞান থাকায় সকল কর্মীকে বিশেষ করে প্রযুক্তিতে দুর্বল কর্মীদের আলাদাভাবে সময় দিয়ে শেখালেন।
করানো মহামারীর সময়েও তাই তার প্রতিষ্ঠানে নিয়মমাফিক কাজ চলতে লাগল ।
গ্লোরী ফার্মাসিউটিক্যালস লিঃ মার্কেট নেতা হিসাবে বাজারে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোম্পানির “পরিচালক পর্ষদ" ঔষধ শিল্পে আধুনিক মাত্রা যোগ করতে উৎপাদন, ক্রয় ও বিক্রয় বিভাগে কর্মরত ব্যবস্থাপকগণকে নিজ নিজ বিভাগের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নির্ধারণ করা এবং কর্মীদেরকে সঠিকভাবে নিয়োজিত করার নির্দেশ প্রদান করে। ইতোমধ্যে কোম্পানিটি বিদেশেও ঔষধ রপ্তানির সক্ষমতা অর্জন করেছে ।
মিসেস ফারজানা একজন সফল উদ্যোক্তা। ব্যবসায়ের শুরুতে কর্মীদের তিনি নিজে তদারকি করেন এবং বিচ্যুতি অনুযায়ী সংশোধনীর ব্যবস্থা নেন। কিন্তু ব্যবসায়ের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় তিনি সম্ভাব্য সুযোগ-সুবিধা ও প্রতিবন্ধকতা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন বিকল্প কর্মপন্থা চিহ্নিত করেন। অতঃপর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বোত্তম করণীয় ঠিক করে সে অনুযায়ী উপায়- উপকরণ সংগ্রহ করেন।
জনাব মাসুদ রেজা ‘ভিক্টর এন্ড কোম্পানি'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি তার অধীনস্থদের সাথে কোনো প্রকার আলাপ- আলোচনা না করেই নির্দেশনা প্রদান করেন। অবশ্য তিনি আন্তরিক ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের উপর প্রভাব সৃষ্টি করে কাজ আদায় করেন। অন্যদিকে জনাব জুবায়ের তার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের শুধু লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেন কিন্তু উক্ত লক্ষ্য বাস্তবায়নে তেমন কোনো ভূমিকা রাখেন না, বরং নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।
একটি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান কর্মীর মাধ্যমে বাড়িতে যেয়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিমাসে ৫০০০ পিছ সিলিন্ডার বিক্রির লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। ১৫ দিন পর দেখা গেল যে, মাত্র ১৫০০ পিছ সিলিন্ডার বিক্রি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি তদন্ত করে দেখে যে, দুইজন কর্মীর দায়িত্ব-কর্তব্যে অবহেলা করায় বিক্রি কম হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে সেই কর্মীদের ছাঁটাই করে নতুন দুইজন কর্মী নিয়োগ দেয় ।
মি, হালদার বছরের শুরুতে প্রতিষ্ঠানের সবলতা ও দুর্বলতা বিশ্লেষণ করে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। কাজগুলিকে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী পৃথক করে নেন। সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে নিয়োজিত করেন। সঠিক ব্যক্তি সঠিক স্থানে থাকার কারণে তার প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হয়।
জনাব কাদের স্টার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মীদের ব্যক্তিগত কাজে খবর নেন এবং মতামতকে মূল্য দেন। প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বার্ষিক লক্ষ্য নির্ধারণের কাজ তিনি পরিচালনা পর্ষদের সাথে পরামর্শ করে ঠিক করেন। গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অধস্তন কর্মকর্তাগণ অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ২০১৯ সালে স্টার গ্রুপ ২ কোটি টাকা মুনাফা করে ।
BRAND INC. একটি TV উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা চিন্তা করে প্রতিষ্ঠানটি ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে “ক” নামক দেশে ৫ লক্ষ পিস সাধারণ LED TV রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ২০১৭ সালে “ক” দেশে - SMART TV-র চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এমতাবস্থায়, প্রতিষ্ঠানটি সাধারণ LED TV উৎপাদন ও রপ্তানি বাদ দিয়ে SMART TV উৎপাদন ও বিপণনের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রতিষ্ঠানটি বাজার ধরে রাখতে সক্ষম হয়।
একতা ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিস তাহসিন একজন দক্ষ সংগঠক। সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কার্য সংশ্লিষ্ট কর্মীদের মতামত নেন। এতে প্রতিষ্ঠানের প্রতি কর্মীরা বেশ সন্তুষ্ট। ফলে উৎপাদিত পণ্যের গুণগতমানের কারণে প্রতিষ্ঠানটি বাজারে অবস্থান সুসংহত করেছে। কিন্তু ইদানিং কিছু সংখ্যক কর্মী প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের ইন্ধনে প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে।
শারমিন শার্ট নামক গার্মেন্টস এর গুদামে জানুয়ারি মাসের ১৫ তারিখ হঠাৎ অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়। ৭ দিনের মধ্যে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানপূর্বক মতামত দেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানের মহাব্যবস্থাপক, উৎপাদন ব্যবস্থাপক ও বিক্রয় ব্যবস্থাপককে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু ১৭
জানুয়ারি চেয়ারম্যানের নির্দেশে মহাব্যবস্থাপক এক সপ্তাহের জন্য অফিসিয়াল কাজে সিঙ্গাপুর চলে যান। টিম লিডারের অনুপস্থিতির কারণে বাকি দুজন সদস্য নির্ধারিত সময়ে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে কারণ অনুসন্ধানপূর্বক মতামত দিতে পারেন নাই ।
সহকারী ব্যবস্থাপকের নাম | তার শিক্ষাগত যোগ্যতা | যোগদানকাল |
মি. মোস্তফা | মাস্টার্স | ২০-১০-২০১৪ |
মি. হারিছ | মাস্টার্স | ৩১-১০-২০১৩ |
মি. জসিম | মাস্টার্স | ৩১-১০-২০১২ |
তাদের তিনজনের তুলনামূলক কর্মসম্পাদন (টার্গেট অর্জন) চিত্র নিম্নরূপঃ
২০১৭ | ২০১৮ | ২০১৯ | |
মি. মোস্তফা | ৮০% | ৮৫% | ৮১% |
মি. হারিছ | ৮৫% | ৮৮% | ৯২% |
মি. জসিম | ৮০% | ৮২% | ৮৩% |
মি.হারিছ ও মি. জসিম ২০২০ সালে ব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।
সিরাজ গ্রুপ অব কোম্পানি একটি উৎপাদকারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ধারাবাহিকভাবে নিচের দিকে ধাবিত হয়। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী বিশেষজ্ঞ না হওয়ায় কাঙ্খিত ও গুণগত মানের পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি উৎপাদন ও বিক্রয় বাড়াতে কার্যিক ও পণ্যভিত্তিক দুই ধরনের ব্যবস্থাপক নিয়োগ দেয় ।
আশ্রাফ লিঃ কোম্পানি বিপণন ব্যবস্থাপক ও ICT বিশেষজ্ঞ পদ পূরণের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়। প্রতিষ্ঠানটিতে সহকারী বিপণন ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত জনাব কাশেম ও জনাব জাহাঙ্গীরের মধ্যে কাজের দক্ষতা বিবেচনা করে জনাব জাহাঙ্গীরকে বিপণন ব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতি দেয়। অন্যদিকে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ জনাব শিহাবকে ICT বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।
নিশান লিঃ কোম্পানি দক্ষ ও অভিজ্ঞ নির্বাহীর তত্ত্বাবধানে কর্মীদের অর্জিত জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার দক্ষতা ও ব্যবহারিক জ্ঞান বাড়াতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়। অপরদিকে হক লিঃ কোম্পানি একই ধরনের নির্বাহীর অধীনে বেশি দায়িত্বপূর্ণ পদের কর্মীদের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
জনাব শিহান একটি রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। তিনি প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়ন এবং জটিল সিদ্ধান্ত গ্রহণের সাথে সম্পৃক্ত। অপরপক্ষে জনাব কাকলী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যান। তিনি তত্ত্বাবধায়ক ও ফোরম্যানদের প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা এবং পরামর্শ দেন। সবার সমন্বিত প্রয়াস ও নৈপূণ্যে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ও সাফল্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পদ্মা লিঃ এর প্রধান কার্যালয়ের মহা-ব্যবস্থাপক জনাব জাওয়াদ উৎপাদন বিভাগ, মানব সম্পদ বিভাগ এবং অর্থ বিভাগের যাবতীয় কাজকে চিহ্নিতকরণপূর্বক কর্মীদের কাজের দায়-দায়িত্ব, কর্তৃত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক ঠিক করে দেন। জনাব জাওয়াদ বিভিন্ন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তসমূহ নিজে নেন এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিম্নস্তরে এবং শাখা অফিসের উপর অর্পণ করেন। এতে কর্মীরাও নিশ্চিন্তে নিজ নিজ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারেন। ফলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সহজে অর্জিত হয়।
সৌমিক এ্যাপারেলস কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালে ১ লক্ষ ২০ হাজার পিস পোশাক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী প্রথম ৩ মাস কাজ হলেও লোডশেডিংয়ের কারণে পরবর্তী ৬ মাসে ১০% উৎপাদন কম হয়। কর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং কাঁচামালের পর্যাপ্ত যোগান থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ক্রেতাকে সময়মত পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হন। ফলে কর্তৃপক্ষ লোকসানের আশংকায় চিন্তিত হয়ে পড়েন এবং উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য নিজস্ব জেনারেটর স্থাপনের উদ্যোগ নেন ।
ফ্লোরা লিঃ এর মহা-ব্যবস্থাপক জনাব কাওসার উৎপাদন, বিপণন এবং ফিন্যান্স সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিজে গ্রহণ করেন এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিচের স্তরে প্রদান করেন। মহা- ব্যবস্থাপক সব বিভাগের কর্মীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন। তিনি তাদের সমস্যাগুলো ধৈর্য ও আন্তরিকতার সাথে শুনেন এবং দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি পর্যায়ক্রমে ব্যবসায় সফলতা অর্জন করছে।
মাহিন রিয়েল স্টেইট কোম্পানি চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর এলাকায় একটি ১০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নেয়। বহুতল ভবনের প্রাথমিক কাজ সম্পাদন শেষে প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে ভবনের নক্সা অনুমাদেনের জন্য জমা দেয়। কিন্তু প্রস্তাবিত ভবনের সামনে পর্যাপ্ত রাস্তার জায়গা না থাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নক্সাটি অনুমাদেন না দিয়ে তাদেরকে ৫ তলা ভবন নির্মাণের পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে মাহিন কোম্পানি ৫ তলা ভবন নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে নক্সা জমা দিলে তা অনুমোদিত হয় ফলে প্রকল্পটির সফল বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।
মাইশা লিঃ ও তাহিয়া লিঃ দুটি বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান। মাইশা লিঃ এর কর্মীরা নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রে তাদের স্ব স্ব কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করে থাকেন। পক্ষান্তরে তাহিয়া লিঃ ঋণদানের ক্ষেত্রে মক্কেলদের দলিলপত্র খতিয়ে দেখার জন্য নির্বাহীদের পাশাপাশি একজন আইন পরামর্শক নিয়োগ দেন। বছর শেষে দেখা গেল যে, তাহিয়া লিঃ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফল হলেও মাইশা লিঃ ব্যর্থ হন।
সম্প্রতি জনাব রাতুল ব্যবস্থাপকের সুপারিশে সাঙ্গু ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায় অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর তাকে ব্যাংকের ক্যাশ শাখা, ঋণ শাখা এবং বৈদেশিক বিনিময় শাখায় পর্যায়ক্রমে কয়েক মাস কাজ করতে হ ছয় মাস পর তাকে চাকরিতে নিয়মিতকরণ করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়।
জনাব নিগাত করতোয়া লিঃ কোম্পানির ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানের কাজের প্রতি খুব একটা নজর দেন না, বরং কর্মীদের উপর দায়িত্ব দিয়ে নিজে নিশ্চিন্ত থাকতে চান। ফলে কর্মীরাও অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে। অপরপক্ষে, নিগাতের বন্ধু জনাব নিগার মধুমতি কোম্পানির উৎপাদন ব্যবস্থাপক। তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে সব গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, ধৈর্য ও ঝুঁকি নিয়ে পালন করেন এবং কর্মীদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনুপ্রাণিত করেন। ফলে প্রতিষ্ঠানটি কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উৎপাদন নিশ্চিতপূর্বক প্রচুর মুনাফা অর্জন করছে।
MNL কোম্পানির মহা-ব্যবস্থাপক জনাব আশরাফুল বার্ষিক ৫১,০০০ মেট্রিক টন পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেন। চার মাস পর দেখা গেল যে, মাত্র ১৪,০০০ মেট্রিক টন পণ্য উৎপাদিত হয়েছে। কোম্পানির মহা-ব্যবস্থাপক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম উৎপাদনের কারণ উদঘাটন করলেন এবং নতুন প্রযুক্তি প্রবর্তনপূর্বক ইউনিট ম্যানেজারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
জনাব সিয়াম লিবার্টি কোম্পানির পরিকল্পনা প্রণয়ন, অর্থসংস্থান ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে জনাব মেজবাহ সিয়াম সাহেবের গৃহীত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট। তিনি ফোরম্যান ও সুপারভাইজারদের নির্দেশনা দেন। প্রয়োজনে শ্রমিক-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানও করেন। উভয়ের কর্মকাণ্ড ও দক্ষতার ওপর প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য নির্ভর করছে।
জনাব আকাশ মেঘনা গ্রুপের একজন ব্যবস্থাপক। তিনি তার অধস্তনদের সবাইকে একই চোখে দেখেন। একই রকম আচরণ করেন। ও স্নেহ প্রদর্শন করেন। অধস্তনরাও তাকে শ্রদ্ধা করেন। ফলে তাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রয়েছে। একদিন অধস্তনদের মধ্যে কাজ নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে তিনি তার অভিজ্ঞতা ও তিক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে এই সমস্যার সমাধান করেন।
একটি নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য মিজান সাহেব তার বন্ধুর ছেলের নিকট থেকে নকশা তৈরি করেন। এজন্য তিনি প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থানও করেন। নকশা অনুসারে কিছুদিনের মধ্যেই বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। নির্মাণ সামগ্রীর দর যাচাই করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন, তিনি যা প্রত্যাশা করেছিলেন ব্যয় তার চেয়ে অনেক বেশি হবে। তাই তিনি বাড়ি নির্মাণের কাজ আপাতত বন্ধ রাখেন ।
করতোয়া লিঃ একটি বৃহদায়তন শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকদের কাজের মান বাড়াতে ব্যবস্থাপকদের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ কর্মী নিয়োগ দেয়া আছে। ইদানিং কাজের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের কাজকে প্রকৃতি অনুযায়ী বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপকগণের দায়িত্বে প্রদান করতে চায় ৷
নবীন স্টাইল লিঃ একটি উৎপাদনমুখি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০০ কর্মী কর্মরত আছেন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক মনে করেন কর্তৃপক্ষের অধিক সহানুভূতির সুবাদে কর্মীরা দিন দিন অলস হয়ে পড়ছে এবং কাজ এড়িয়ে চলায় প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ক্ষমতা অনেক হ্রাস পেয়েছে। তাই তিনি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কর্মীদের নিকট থেকে কাজ আদায় করতে চান এবং কোন পরিকল্পনা প্রণয়নে কর্মীদের অংশগ্রহণের সুযোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
জনাব লোহানী মির্জা সাউদ বাংলা প্রাইভেট লিঃ এর ম্যানেজার। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে তিনি দিন-রাত কাজ নিয়ে যথাসাধ্য ব্যস্ত থাকেন। প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধানে জনাব লোহানী কর্মীদের মতামতের গুরুত্ব দেন। অপরদিকে জনাব লালখান অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের এমডি। তিনি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ভালো-মন্দ বিবেচনার চাইতে তাদের থেকে কাজ আদায়কে অধিক গুরুত্ব দেন।
ডায়মন্ড সিল্ক হোম লিঃ আবাসন শিল্পে একটি বিশ্বস্ত নাম। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক দাউদখান নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে সকল কর্মীদের কাজ মূল্যায়ন করেন। তিনি দেখতে পান সহকারি ব্যবস্থাপক জনাব নুর খান পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় চলতি বছরে ৪% অধিক প্লট বিক্রি করেছেন। এমতাবস্থায় জনাব নুরখান কে পদোন্নতি দিয়ে বিক্রয় ব্যবস্থাপক হিসেবে নিয়োগ দেন। প্রতিষ্ঠানটি পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় চলতি বছরে ৮ কোটি টাকা বেশি মুনাফা অর্জন করে।
স্মার্টভিউ লিমিটেড একটি বৃহৎ পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি তিনজন সহকারী ব্যবস্থাপকের মধ্য হতে মি. সাকিবকে ব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি দেয়। মি. সাকিব গত ১০-০৩-২০১৮ তারিখে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে অত্র প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন। যেখানে একই পদমর্যাদায় অন্য দুইজন সহকারী ব্যবস্থাপক তার এক বছর পূর্বে হতেই অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে। অনেকেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পদোন্নতির বিদ্যমান নীতি বা ভিত্তিকে কিছুটা পরিবর্তনের অনুরোধ জানাচ্ছেন।
মুন ফ্যাশন লিঃ একটি বৃহৎ রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ক্রয়, উৎপাদন, মানব সম্পদ, বিক্রয় ও হিসাব বিভাগের জন্য আলাদা বিশেষজ্ঞ ব্যবস্থাপক নিয়োজিত আছেন । কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী কাজগুলোকে ভাগ করার ফলে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে খ্যাতি অর্জন করেছে। গত মাসে হঠাৎ করে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১.৫ কোটি টাকার পোশাক পুড়ে যায়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অগ্নিকাণ্ডের কারণ উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়।
জনাব রবিউল ইসলাম একজন স্বনামধন্য ডাক্তার। তিনি সপ্তাহের বিশেষ একটি দিনে নিজ এলাকায় গিয়ে বিনা ফি'তে রোগী দেখেন এবং ওষুধ সরবরাহ করেন। তিনি শহরেও নিজস্ব চেম্বারে রোগীদের সেবা প্রদান করেন। তিনি বর্তমানে তাঁর উপার্জিত আয় দ্বারা নিজ গ্রামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় খোলার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি দরিদ্র গ্রামবাসীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ ভূমিকা রাখবে এবং নতুন ধরনের ব্যবসায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে।
জনাব ইকবাল সিলেটে থাকেন। তিনি শ্রমিকের সহজলভ্যতার কারণে পঞ্চগড়ে জমি কিনে ৫টি চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় পদ্ধতি ও পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তার চা-এর মান তত ভালো হয় না। এতে মুনাফাও কম হয়। তার এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি আধুনিক মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে চা-এর গুণগত মান বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রার্জন করছেন।
জনাব মানিক তার ২০ জন বন্ধুকে সাথে নিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে 'রাজশাহী ট্রেডার্স' নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটি চালুর কিছুদিন পরই তাদের মধ্যে দায়িত্ব পালন, মুনাফা বণ্টন ও হিসাব সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জন সদস্য ব্যবসায় ছেড়ে চলে যায়। মানিক অবশিষ্ট বন্ধুদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নতুন ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন ব্যবসায়টির নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করেই তারা কার্যক্রম শুরু করে দেয়।
দোলন অর্থনীতি বিষয়ে পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। দোলনের ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শেষ করে পিতার ন্যায় আসবাবপত্রের ব্যবসায় করবেন। বন্ধু আতিকের নিকট থেকে কিছু অর্থ ধার নিয়ে নিজ দায়িত্বে তিনি গঞ্জে আসবাবপত্রের দোকান দেন। পরবর্তীতে আতিক তার অর্থ ফেরত চায়। তাই তিনি সমঝোতার ভিত্তিতে মুনাফা প্রদানের শর্তে আতিকের নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করেন। আতিক ব্যবসায় পরিচালনার কিছু সময় দেয়ায় তাদের ব্যবসায়টি এখন ভালো চলছে।
হাফিজ পেশায় একজন রিক্সা চালক। সে এলাকার ২০ জন রিক্সা চালককে একত্রিত করে নিজেদের অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। এখানে তারা প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেয়। জমাকৃত টাকা তারা বিনিয়োগ করে। নিজেরাও সেখান থেকে প্রয়োজনে ঋণ নেয়। ২০২১ সালে তারা ৬০,০০০ টাকা মুনাফা করে এবং ৪৫,০০০ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেয় ৷
সাইফুল সাহেবের নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান "মিলেনিয়াম ফার্নিচার লিমিটেড।” ১৫ বছর আগে তিনি একাই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছিলেন। পরে আরও ৬ জন ব্যক্তির সমন্বয়ে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটিকে কোম্পানিতে রূপান্তর করেন। জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রি করে সংগৃহীত মূলধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম অনেক বিস্তৃত হয়েছে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে সাইফুল সাহেব ছাড়া বাকি সবাই শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছেন।
জনাব মতিন একজন সবজি ব্যবসায়ী তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যে মৌসুমে যে সবজি উৎপাদিত হয় তা সংগ্রহ করেন এবং সিলেটের বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করেন। এতে বেশ মুনাফা হয়। কিন্তু একবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে তার সংগ্রহকৃত সবজির অধিকাংশই পচে যায়। তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং কীভাবে এ ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবনা শুরু করেন।
সোহেল এমবিএ পাশ করার পর তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে 'রাজশাহী টেক্সটাইল' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রথম অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির মোট মূলধনের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকা। তাদের সঠিক পরিচালনার ফলে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুতই সফলতা লাভ করে। সোহেল ও তার বন্ধুরা প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। তারা নিজেরা প্রতিষ্ঠানে আর অর্থ দিতে পারবেন না এবং সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান না। এমতাবস্থায় তাদের মূলধনের প্রয়োজন ।
জনাব রায়হান, রিহান ও রিয়াদ মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। তিনজনের মূলধনের পরিমাণ সমান। তারা সমান হারে মুনাফা ভোগ করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জনাব রিয়াদ শুধু মূলধনের সমপরিমাণ দায় বহন করে। সম্প্রতি জনাব রাব্বানী নামে একজন দেনাদার প্রতিষ্ঠানের দুই লক্ষ টাকা পরিশোধে গড়িমসি করছে। এজন্য অংশীদারগণ পাওনা আদায়ে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছে।
জনাব রুহুল আমিন একজন তৈরি পোশাক বিক্রেতা। তিনি স্বল্প পুঁজির কারণে ব্যবসায়ে সাফল্য লাভ করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি করিমকে অংশীদার হিসেবে ব্যবসায়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। করিম ব্যবসায়ে শুধুমাত্র মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের শর্তে অংশীদার হতে সম্মত হন। শর্ত মোতাবেক করিম মূলধন বিনিয়োগ করেন তবে ব্যবসায়ের পরিচালনায় তিনি অংশগ্রহণ করেন না। ব্যবসায় কিছুদিন চলার পর জনাব রুহুল আমিন দেউলিয়া হয়ে পড়েন।
হাজির উদ্দিন একজন কৃষক। তিনি জমি চাষ করার জন্য এক জোড়া গরু ক্রয় করেন। তার স্ত্রীও অলস বসে থাকেনা। তার স্ত্রী বাজার থেকে সিদ্ধ চাউল ক্রয় করে এনে মুড়ি ভেজে গ্রামের হাটে বিক্রি করেন। তার মুড়ির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি তার ব্যবসায়ের পরিধি বাড়াতে চান। কিন্তু এর জন্য তিনি পর্যাপ্ত অর্থের অভাব বোধ করছেন।
মিঃ নয়ন বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত সমাপ্তি কেমিকেল কোম্পানীর মালিক। তিনি ব্যবসায়ের সাথে সাথে সমাজ সেবামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তার কারখানার বর্জ্য নদীতে সরাসরি না ফেলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেন। অন্যদিকে লিটন ট্যানারীর মালিক কারখানার বর্জ্য সরাসরি নদীতে ও আশে পাশের জমিতে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছে। এলাকাবাসী বণিক সমবায় সমিতিতে লিটন ট্যানারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেই ।
পহেলা বৈশাখ মানেই বৈশাখী মেলা। আর সাদা-লালের ছড়াছড়ি। ইলিশ ও পান্থা ভাতের আয়োজনে বাঁশি ও ফোনের আওয়াজ যেন এক চিরন্তন প্রথা। এ উৎসব কে রাঙ্গাতে ব্যবসায়ীরা নিত্য নতুন পণ্যের পসরা নিয়ে বাজারে আসেন। বছরের অন্যান্য মাসের তুলনায় এ সময় কিছু পণ্য ও সেবার বিক্রয় অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যায়। এদিনকে উপলক্ষ্য করে প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে উৎসব ছুটি ও বোনাস ঘোষণা করা হয়। এমনকি এ সময় ব্যবসায়ীদের অনেক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে দেখা যায়। সব মিলিয়ে পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়।
কামাল কলেজের কাছে একটি মনিহারি দোকান পরিচালনা করেন। সততা ও দক্ষতার কারণে তার ব্যবসায়টি লাভজনক হয়ে উঠে। সে এর পাশাপাশি একটি ফটোকপি মেশিন ও কম্পিউটার কিনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকেন। তাকে সাহায্য করার জন্য সে মাসিক নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে তার ছোট ভাইকে এ কাজে নিয়োগ করেন। বছরান্তে কামালের ভাই মুনাফা দাবি করে ।
মিঃ সুমন সহ বিশ জন বন্ধু মিলে শাপলা নামে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিলেন। তারা যথাযথ পরিকল্পনা এবং প্রয়োজনীয় দলিল পত্র দাখিল করে নিবন্ধন পত্র সংগ্রহ করেন। নিবন্ধনপত্র পেয়েই প্রতিষ্ঠানটি কার্যারম্ভ করতে পারল। কিন্তু মূলধন বৃদ্ধির জন্য বাজারে শেয়ার বিক্রি করতে গিয়ে কোম্পানিটি আইনগত বাধার সন্মুখীন হলো।
সিলেটের হাওড় এলাকার জেলেরা তাদের আর্থসামাজিক কল্যাণের জন্য একটা সমবায় সমিতি গঠন করেছেন। ২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের অর্জিত মুনাফার পরিমাণ ছিল নিম্নরূপ:
বছর | ২০১৭ | ২০১৮ | ২০১৯ | ২০২০ |
মুনাফা (টাকা) | ৪০,০০০ | ৫০,০০০ | ৬০,০০০ | ৭০,০০০ |
তারা বিধিবদ্ধ ন্যূনতম হারে সঞ্চিতি তহবিল সংরক্ষণ করেন। মাছ সংরক্ষণে তারা ৪২,০০০ টাকা ব্যয়ে আইস বক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এ ক্ষেত্রে তারা সঞ্চিতি তহবিল কাজে লাগাতে চাচ্ছেন।
শ্রেয়া, কণা এবং রিনা তিনজন ঘনিষ্ট বন্ধু । তারা তিন জনে ঢাকার ধানমন্ডিতে বিউটি পার্লার দেয়। এছাড়াও শ্রেয়ার নিজের একটি বিউটি পার্লার আছে। বেশি লাভের আশায় তারা তিনজন মিলে ব্যবসায়ের যাবতীয় বিষয় নিজেদের মতামত অনুযায়ী দলিল আকারে লিপিবদ্ধ ও নিবন্ধন করে। ব্যবসায়ের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় শ্রেয়া তার নিজের পার্লারটি বন্ধ করে দিয়েছে।
জনাব সাজ্জাদ স্বপ্ন গ্রুপ তার ইন্ডাস্ট্রির এরিয়া ম্যানেজার হিসাবে ১০ জন সুপারভাইজারকে পরিচালনা করেন। তিনি তাদের প্রভাবিত করে দলগত প্রচেষ্ঠার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন করে থাকেন। জনাব তানভীর তার অধীনে কর্মরত একজন সুপারভাইজার। তিনি জনাব সাজ্জাদ কর্তৃক গৃহীত পরিকল্পনা মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করে ভাল ফল পাচ্ছেন।
জনাব রাইয়ান একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক হিসাবে নতুন যোগদানের পর প্রতিষ্ঠানটির কাজগুলোকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে প্রত্যেকের দায়িত্ব ও ক্ষমতা নির্দিষ্ট করে দেন। পরবর্তীতে তিনি লক্ষ্য করলেন কর্মীরা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছে না। অনুসন্ধানে জানতে পারলেন প্রতিষ্ঠানে বেশির ভাগ কর্মীর নিয়োগ অস্থায়ী প্রকৃতির হওয়ায় চাকরি চলে যাবার ভয় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা থেকে কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে এবং চাকরি নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে জনাব রাইয়ান চিন্তিত।
মি. নাইফ নোভা সোয়েটার লিঃ এর বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপক হিসাবে কর্মরত। তিনি খুবই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন। যে কোনো উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সুফল পাওয়া যাবে সে কথা বিবেচনায় রেখেই তিনি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। এ ধরনের দক্ষতা তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের পথ সহজ করে দেয়। প্রতিষ্ঠানের সকল সিদ্ধান্ত তাকে দিতে হয় বিধায় সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সময়ক্ষেপণ হওয়ায় তিনি বিষয়টি সমাধানের জন্য ব্যবস্থাপনার সাথে কথা বলবেন ।
মি. রেহান কীর্তনখোলা ফুডস লিঃ এর সেলস ম্যানেজার। সারাদেশে এর একটি পণ্য স্বর্না জুস এর বাজার ভালো হলেও উত্তারাঞ্চলে বেশ কিছু প্রতিযোগী স্থানীয় কোম্পানির জুসের জনপ্রিয়তার কারণে স্বর্না জুসের বিক্রয় ভালো না হওয়ায় উক্ত অঞ্চলের জন্য জুসের সাথে ক্যান্ডি ফ্রি অফার দিয়ে বিক্রয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। সফলতা না পাওয়ায় এই তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে উক্ত জুসের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য মি. রেহান দীর্ঘমেয়াদি কোনো একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করার কথা ভাবছেন।
মি. জাহিদ একটি প্রতিষ্ঠানের এরিয়া ম্যানেজার হিসাবে ৮ জন কর্মী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করেন। উক্ত প্রতিষ্ঠানের সংগঠন কাঠামোতে কর্তৃত্বরেখা সর্বোচ্চ স্তর হতে ক্রমান্বয়ে নিচ বরাবর নেমে আসে ফলে ঊর্ধ্বতনের আদেশ অধীনস্তরা বিনা দ্বিধায় মানতে থাকে। সম্প্রতি একজন এরিয়া ম্যানেজার চাকরি ছেড়ে যাওয়ায় মি. জাহিদকে উক্ত এরিয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করায় নতুন আরো ৮ জন কর্মীর দায়িত্ব পালন করতে হয়। ফলে কর্মীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় সুষ্ঠুভাবে কাজ তত্ত্বাবধান করা তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই ব্যবস্থাপনা উক্ত পরিস্থিতি মোকাবিলায় এমন একজনকে নিয়োগ দিতে চান যাতে তিনি মি. জাহিদকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ, উপদেশ এবং কার্যক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারেন।
মি. মামুন কীর্তনখোলা ব্যাংকের অফিসার পদে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ব্যাংকে যোগদান করতে গেলে ম্যানেজার উক্ত কর্মীকে স্থায়ী নিয়োগের জন্য ৬ মাসের মধ্যে হাতে নাতে কাজ শিখিয়ে তার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য শাখার সিনিয়র অফিসার মিসেস লীনার কাছে নাস্ত করেন। কর্তৃপক্ষ ৩ মাস পর মিসেস লীনাকে একই পদ মর্যাদার অন্য একটি টেবিলে প্রশিক্ষণের জন্য বদলি করায় মি. মামুন আগত নতুন অফিসারের সাথে কাজ করতে আগের মত সহযোগিতা পাচ্ছেন না।
মি. ফারুক সিকা টেক্সটাইল এর ব্যবস্থাপক। তিনি প্রয়োজনীয় কর্তৃত্ব অধঃস্তনদের হস্তান্তর করেন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সকালের পরামর্শ গ্রহণ করেন। তার একটি বিশেষ গুণ হলো অধস্তন কর্মীদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার মাধ্যমে কাজ আদায় করা। ফলে কর্মীরা কর্মসন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করে থাকেন। যার ফলে মি. ফারুকের উপর ব্যবস্থাপনাও সন্তুষ্ট।
মি. জাকারিয়া অহনা ফার্মাসিউটিক্যালস এর সেলস ম্যানেজার। তিনি বছরের শুরুতে সকল রিজিওনাল ম্যানেজারদের বিক্রয় টার্গেট নির্ধারণ করে দেন। তিনি সেপ্টেম্বর মাসের শেষে পাবনা রিজিওন পরিদর্শন করে দেখেন টার্গেটের ৬৫% অর্জিত হয়েছে। মি. জাকারিয়া উক্ত রিজিওনের রিজিওনাল ম্যানেজার যি. আলীমের টার্গেট কম অর্জন হওয়ার কারণ নির্ণয় ও তার মূল্যায়নপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনের নির্দেশ দেন।